ফরিদপুর জেনারেল
হাসপাতালে ভর্তি এক রোগীর স্বামীকে কোপানো হয়েছে। বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার
দিকে এ ঘটনা ঘটে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজে পাঠানো
হয়েছে।
রোগীর অভিযোগ,
কথা কাটাকাটির জেরে হাসপাতালের নার্স তার লোকদের ডেকে এনে এ ঘটনা ঘটান।
হাসপাতাল সূত্রে
জানা গেছে, শহরের টেপাখোলা বিন্দাবনের মোড় এলাকার বাসিন্দা রাসেল। তিনি গত তিনদিন ধরে
তার স্ত্রী হীরাকে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের নারী ওয়ার্ডে ভর্তি করে রেখেছেন। চিকিৎসক
বলেছেন হীরার রক্ত পরীক্ষা করাতে। কিন্ত রাতে হাসপাতালের ল্যাব বন্ধ। তাই বাইরে বেসরকারি
ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে পরীক্ষা করানোর জন্য নার্স ইলা শিকদারকে রোগী থেকে সিরিঞ্জে
দিয়ে রক্ত টেনে দিতে বলেন রাসেল।
কিন্তু ওই নার্স
‘রক্ত টেনে দেওয়া
তার দায়িত্ব নয়’ বলে জানান। সেই সঙ্গে রাসেলের
সঙ্গে ‘দুর্ব্যবহার’ করেন।
রাসেল ওই নার্সকে
বলেন, ‘সরকারি বেতন খান,
রক্ত নিয়ে দেবেন না কেন।’ এরপর ইলা শিকদার
রাসেলের নামে নালিশ করেন হাসপাতালের নার্স সুপারভাইজার জহুরা বেগমের কাছে। একই সঙ্গে
শহরের খাবাসপুর এলাকার যুবলীগ কর্মী দেবাশীষ নয়নকে ফোন করে ডেকে আনেন।
এদিকে রাসেল নার্স
সুপারভাইজারের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে বের হওয়ার পরই দেবাশীষ নয়ন ও তার সঙ্গে থাকা আরও
২-৩ জন রাসেলকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে আহত করে চলে যান। খবর পেয়ে কোতয়ালী থানা পুলিশ ও জেলা
গোয়েন্দা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
আহত রাসেলের স্ত্রী
হীরা জানান, তার শরীরের এক সাইড প্যারালাইজড। প্রতিদিন দুইবার তাকে রক্ত পরীক্ষা করতে
হয়। তিনি অভিযোগ করেন, ইলা শিকদারই দেবাশীষ নয়নকে ডেকে এনে তার স্বামীকে কুপিয়েছেন।
এদিকে কোপানোর
বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোনে দেবাশীষ নয়নের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
নার্স সুপারভাইজার
জহুরা বেগম বলেন, রোগী ও নার্সের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। সেটা মিটমাট করেছি। কিন্ত
এই ঘটনায় ইলা জড়িত কি না সেটা আমার জানা নেই।
কর্তব্যরত চিকিৎসক
ডা. সাইফুজ্জামান বলেন, আহত রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার প্রচুর ব্লিডিং হয়েছে। এখান
থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল
কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি জানানো হয়েছে পুলিশ প্রশাসনকে।
এ ব্যাপারে হাসপাতালে আসা পুলিশ কর্মকর্তারা ক্যামেরার সামনে কথা বলতে না চাইলেও তারা জানান, সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ঘটনা তদন্ত করে জড়িতদের আটক করা হবে।