বিশ্ব স্বাস্থ্য
সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের (এসইএআরও) আঞ্চলিক পরিচালক পদে সায়মা
ওয়াজেদকে মনোনয়ন দিয়েছে সরকার। এসইএআরও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ছয়টি আঞ্চলিক অফিসের
মধ্যে একটি, যা সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত।
এ প্রসঙ্গে
সায়মা ওয়াজেদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)-র এসইএআরও’র আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে বাংলাদেশ
সরকার আমাকে মনোনীত করায় আমি অত্যন্ত সম্মানিত বোধ করছি।’
নির্বাচিত হলে
এ অঞ্চলের জনস্বাস্থ্য নীতি ও অনুশীলনে তার দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়নে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর
সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় কাজ করার পরিকল্পনা করছেন বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন,
‘আমি
অংশীদারত্বে কাজ করতে বিশ্বাসী এবং কমিউনিটির কথা শুনে স্থায়ী সমাধান তৈরি করতে আগ্রহী
যা মাঠ পর্যায়ে কাজ করে। এটি আজ পর্যন্ত আমার কাজকে বৈশিষ্ট্যম-িত করেছে এবং এটি আমি
এই ভূমিকায় নিয়ে আসবো বলে আশা করি।’
প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেন ১৯৯৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয়
থেকে মনোবিজ্ঞানে স্নাতক এবং ২০০২ সালে ক্লিনিক্যাল মনস্তত্ত্বে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি
অর্জন করেন। ২০০৪ সালে স্কুল সাইকোলজির ওপর বিশেষজ্ঞ ডিগ্রি অর্জন করেন। ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয়ে
অধ্যয়নের সময় তিনি বাংলাদেশের নারীদের উন্নয়নের ওপর গবেষণা করেন। এ বিষয়ে তার গবেষণাকর্ম
ফ্লোরিডার অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সের কাছ থেকে শ্রেষ্ঠ সায়েন্টিফিক উপস্থাপনা হিসেবে
স্বীকৃতি লাভ করে।
সায়মা ওয়াজেদ
২০০৮ সাল থেকে শিশুদের অটিজম এবং স্নায়ুবিক জটিলতা সংক্রান্ত বিষয়ের ওপর কাজ করছেন।
তিনি ২০১১ সালে ঢাকায় অটিজম বিষয়ক প্রথম দক্ষিণ এশীয় সম্মেলন আয়োজন করেন। ২০১৩ সাল
থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় মানসিক স্বাস্থ্যের বিশেষজ্ঞ পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন।
যার স্বীকৃতিস্বরূপ, বিশ্ব সংস্থা কর্তৃক ২০১৪ সালে ডব্লিউএইচ ও অ্যাক্সিলেন্স পুরস্কারে
ভূষিত হন।
আরও পড়ুন>> ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিরাপত্তা সংলাপ আজ
বাংলাদেশ ও
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নবম দ্বিপক্ষীয় নিরাপত্তা সংলাপ আজ ঢাকায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে
অংশ নিতে সোমবার দুদিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের রাজনৈতিক
সামরিক ব্যুরোর আঞ্চলিক নিরাপত্তাবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মিরা রেজনিক।
সংলাপে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা
অনুবিভাগের মহাপরিচালক মাসুদুর আলম।
ঢাকায় পৌঁছেই
মিরা রেজনিক মার্কিন দূতাবাস ও ইউএসএআইডি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি নাগরিক
সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছেন। মার্কিন দূতাবাসে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে আইন ও
সালিশ কেন্দ্রের পরিচারক নূর খান লিটন এবং চ্যানেল আইয়ের টকশো তৃতীয় মাত্রার উপস্থাপক
ও সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া দুপুরে গুলশানের একটি রেস্টুরেন্টে সাক্ষাৎ করেছেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক
ও ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্য শ্যামা ওবায়েদ।
আজ সকাল ৯টায়
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এই নিরাপত্তা সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। সংলাপে বাংলাদেশের
পক্ষ থেকে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার পাশাপাশি রোহিঙ্গা সংকট, র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা
প্রত্যাহার, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডে
দণ্ডিত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত পাঠানোর আহ্বান জানানো হতে পারে।
ঢাকায় মার্কিন
দূতাবাস জানায়, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলকে মুক্ত, অবারিত, শান্তিপূর্ণ রাখা এবং এর নিরাপত্তা
নিশ্চিত করা নিয়ে একই ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের। যুক্তরাষ্ট্রের
রাজনৈতিক-সামরিকবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মিরা রেজনিককে স্বাগত। তিনি
যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ নিরাপত্তা সংলাপে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
এই বার্ষিক, বেসামরিক আয়োজনে অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি আঞ্চলিক সমস্যা, নিরাপত্তা ও
মানবাধিকার, সামরিক সহযোগিতা, নিরাপত্তা সহায়তা এবং সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ বিষয়ে আলোচনা
হবে।
দুই দেশের মধ্যে
প্রতিবছর এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। অষ্টম সংলাপ ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত হওয়ায় এবার ঢাকায় হচ্ছে।
নিরাপত্তা সংলাপের বিষয়ে বেসামরিক কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে
নিরাপত্তা সংক্রান্ত সব বিষয় আলোচিত হয়ে থাকে।
মার্কিন দূতাবাসের
বিবৃতিতে বলা হয়, সংলাপে উভয় পক্ষের প্রতিনিধিরা ইন্দো-প্যাসিফিক রিজিওনাল ইস্যু, নিরাপত্তা
ও মানবাধিকার, সামরিক সহযোগিতা, শান্তিরক্ষা কার্যক্রম, নিরাপত্তা সহযোগিতা এবং সন্ত্রাস
দমনসহ আরও অনেক বিষয়ে আলোচনা হবে। এই সংলাপ আমাদের দুই দেশের ব্যাপক নিরাপত্তা নিরাপত্তা
সহযোগিতার অংশ।
সংলাপে বাংলাদেশ
প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের
নেতৃত্ব দেবেন ব্যুরো অব পলিটিক্যাল-মিলিটারি অ্যাফেয়ার্স ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি
মিরা রেসনিক। মার্কিন দূতাবাসের বিবৃতিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে
শক্তিশালী নিরাপত্তা অংশীদারত্ব রয়েছে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের অনেক কিছু শেয়ার করা
হয়। উভয় দেশ অবাধ, মুক্ত, শান্তিপূর্ণ এবং নিরাপদ ইন্দো-প্যাসিফিক গড়ে তোলার লক্ষ্য
রয়েছে। এই পারস্পরিক উদ্দেশ্য হাসিলে আমরা বছরজুড়ে বিভিন্ন সংলাপ করে থাকি।
আরও পড়ুন>> দিল্লিতে হাসিনা-মোদি বৈঠক ৮ সেপ্টেম্বর
ঢাকায় ২৩ ও
২৪ আগস্ট দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা সংলাপের পর নিরাপত্তা সংলাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সংলাপে
দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক, সামরিক শিক্ষা, শান্তিরক্ষা কার্যক্রম, আসন্ন
সামরিক অনুশীলন এবং আগামী বছরে দুর্যোগ সাড়াদান- অনুশীলন নিয়ে আলোচনা হবে।
২০২২ সালের
এপ্রিলে দুদেশের মধ্যে অষ্টম নিরাপত্তা সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত
ওই সংলাপে নিজ নিজ দেশের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ
ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তাবিষয়ক মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি বনি জেনকিন্স।
নিরাপত্তা সংলাপে
যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত জেনারেল সিকিউরিটি মিলিটারি ইনফরমেশন অ্যাগ্রিমেন্ট (জিসোমিয়া)
ও অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড ক্রস সার্ভিসিং অ্যাগ্রিমেন্ট (আকসা) নিয়ে আলোচনায় অগ্রগতি হতে
পারে। আজকের বৈঠকের পর মার্কিন কর্মকর্তা মিরা রেজনিক সরকারি কর্মকর্তা এবং গণমাধ্যম
প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন বলে জানা গেছে।