বাংলাদেশের কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক দাতাদের কাছ থেকে পাওয়া মানবিক সহায়তা তহবিল সঙ্কটের কারণে চলতি মাস থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য রেশন ব্যাপকভাবে কমানো হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি অর্থায়নের আবেদন জানিয়েছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কের কার্যালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চলতি বছরের শুরুতে শরণার্থীরা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) থেকে মাথাপিছু মাসিক ১২ ডলার মূল্যমানের রেশন পাচ্ছিলেন, যা দিয়ে কেবল তাদের দৈনিক চাহিদা মিটত। কিন্তু অর্থায়নের অভাবে গত ১ মার্চ থেকে তাদের মাথাপিছু মাসিক রেশন কমিয়ে ১০ ডলার করা হয়। চলতি মাস থেকে তা আরও কমে হয়েছে মাত্র আট ডলার।
এতে বলা হয়, চলতি বছরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবস্থা বিশেষভাবে নাজুক। আন্তর্জাতিক দাতাদের কাছে ২০২৩ সালের জন্য ৮৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার মানবিক সহায়তা তহবিলের আবেদন করা হয়েছিল। অথচ ১ জুন পর্যন্ত এর মাত্র ২৪ দশমিক ছয় শতাংশ অর্থায়ন মিলেছে। এর ফলে অন্যান্য জরুরি কর্মসূচি ও কর্মকাণ্ডেও কাটছাঁট করতে হচ্ছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জীবনরক্ষাকারী সহায়তায় নতুন কাটছাঁটের উদ্যোগ এমন এক সময় নেয়া হলো, যখন তারা বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডব এবং উদ্বাস্তু শিবিরগুলোতে অগ্নিকাণ্ডের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছে। এই মুহূর্তে লাখ লাখ শরণার্থীর সাহায্য ভীষণ প্রয়োজন।
আরও পড়ুন>> সৌদি পৌঁছেছেন ৪৪ হাজার ১৫৬ হজযাত্রী
এ ব্যাপারে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস বলেন, আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন যে ডব্লিউএফপি বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের খাদ্য সাহায্য কমাতে বাধ্য হচ্ছে। শরণার্থীদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টির ক্ষেত্রে এর ফল হবে ভয়াবহ। এতে বিশেষ করে নারী, শিশু ও সবচেয়ে নাজুক মানুষেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমরা জরুরিভিত্তিতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার আবেদন জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, পুষ্টি, খাদ্য ও শিক্ষার জন্য মোট যে পরিমাণ অর্থ দরকার হয়, তার মাত্র ২৪ দশমিক ছয় শতাংশের অর্থায়ন মিলেছে। এই শরণার্থীদের সাহায্য-সহযোগিতার আর কোনো উৎস নেই। রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে বসবাসরত মানুষদের কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। তারা সম্পূর্ণভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অর্থায়নের ওপর নির্ভরশীল।