নানা নাটকীয়তার
পর রাশিয়ায় আপাতত অবসান হয়েছে ভাড়াটে সশস্ত্র গোষ্ঠী ওয়াগনারের বিদ্রোহের। দুই দশকেরও
বেশি আগে রাশিয়ার ক্ষমতায় আসার পর প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে
এটি ছিল এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
আর এর মাধ্যমে মূলত পুতিনের দুর্বলতাও স্পষ্ট হয়ে গেছে। আর রুশ প্রেসিডেন্টের সেই দুর্বলতা এবং রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ অশান্তি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে আলোচনা করেছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সোমবার (২৬ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
আরও পড়ুন: ১৬ অঞ্চলের নদীবন্দরে সতর্কতা সংকেত
প্রতিবেদনে
বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এবং তার প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, তারা রুশ প্রেসিডেন্ট
ভ্লাদিমির পুতিনের ‘দুর্বলতা’ এবং ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করার জন্য
রোববার কিয়েভের মিত্রদের সাথে একাধিক ফোনকলে কথা বলেছেন।
রাশিয়ার ওয়াগনার
ভাড়াটে গোষ্ঠীর প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের অভূতপূর্ব ব্যর্থ বিদ্রোহের পরে এসব
ফোন কল করা হয়। আর এই বিদ্রোহই পুতিনের ক্ষমতায় থাকা নিয়ে কার্যত প্রশ্ন তুলে দিয়েছিল।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট
জো বাইডেনের সঙ্গে ফোনালাপের পর প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ‘মস্কোর সঙ্গে আমাদের শত্রুতা এবং
রাশিয়ায় যা হচ্ছে তা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার না
হওয়া পর্যন্ত বিশ্বকে অবশ্যই রাশিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে।’
হোয়াইট হাউসের বিবৃতি অনুসারে, এই দুই নেতা ‘ইউক্রেনের চলমান পাল্টা আক্রমণ নিয়ে আলোচনা করেছেন। একইসঙ্গে ইউক্রেনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অটল সমর্থনের কথা পুনর্নিশ্চিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।’
আরও পড়ুন: দুর্দান্ত ফুটবল খেলে মালদ্বীপকে হারাল বাংলাদেশ
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী
ওলেক্সি রেজনিকভ বলেছেন, তিনি এবং মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন ইউক্রেনের
পাল্টা আক্রমণ এবং বাহিনীকে শক্তিশালী করার পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছেন। টুইটারে
রেজনিকভ লিখেছেন, ‘সকল কিছুই সঠিক দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।’
যদিও ইউক্রেনের
কর্মকর্তারা বলেছেন, রাশিয়ায় কোনও ধরনের বিশৃঙ্খলা হলে তা কিয়েভের জন্য সুবিধাজনক।
তারপরও এটি এখনও দেখা বাকি আছে যে, মস্কোর এই অস্থিতিশীলতাকে পুঁজি করে জেলেনস্কি এবং তার সেনাবাহিনী এখন রাশিয়ার দখলকৃত
অঞ্চলগুলো পুনরুদ্ধার করতে পারে কিনা।
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয়
সামরিক কমান্ডের মুখপাত্র সেরহি চেরেভাতি রোববার বলেছেন, কিয়েভের সেনাবাহিনী বাখমুত
শহরের কাছে আগের দিনের তুলনায় আরও ৬০০ মিটার থেকে এক হাজার মিটার অগ্রসর হয়েছে।
রোববার প্রেসিডেন্ট
জেলেনস্কি বলেন, তিনি এবং প্রেসিডেন্ট বাইডেন দূরপাল্লার অস্ত্রের ওপর জোর দিয়ে প্রতিরক্ষা
সহযোগিতা সম্প্রসারণ, আগামী মাসে ভিলনিয়াসে ন্যাটো সম্মেলনের সমন্বয় এবং ‘গ্লোবাল পিস সামিট’ এর প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
এছাড়া ‘গতকালের ঘটনা পুতিনের শাসনের দুর্বলতা
প্রকাশ করেছে’ বলেও জেলেনস্কির উদ্ধৃত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
আলাদাভাবে জেলেনস্কি জানান, তিনি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। ইউক্রেনের বিশাল রুশ-অধিকৃত জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিরাজমান ‘হুমকি ও এ সংক্রান্ত পরিস্থিতি’ সম্পর্কে ওই ফোনালাপে কথা বলেন তারা।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে কোটি টাকার জালনোট জব্দ, গ্রেপ্তার ৯
তিনি বলেন,
‘ইউক্রেনের
অংশীদারদের অবশ্যই একটি নীতিগত প্রতিক্রিয়া দেখাতে হবে। বিশেষ করে ভিলনিয়াসে ন্যাটো
সম্মেলনে সেটি প্রদর্শন করতে হবে।’
ইউক্রেনীয়
এই প্রেসিডেন্ট পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ ডুদার সাথেও ফোনে কথা বলেছেন। ওই
ফোন কলেও রুশ পরিস্থিতিসহ এ সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানানো হয়েছে।