অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের পর এবার ট্যাংকার থেকে সাগরের তলদেশে পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল খালাস শুরু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ২টা ৪৮ মিনিটে ‘এমটি জাগ অপর্ণা’ থেকে পাম্পিং করে পরীক্ষামূলকভাবে এই তেল খালাস শুরু হয়।
ইস্টার্ন রিফাইনারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক
(এমডি) মো. লোকমান গণমাধ্যমকে বলেন, ট্যাংকারটি থেকে ৬০ হাজার টন ডিজেল পাইপলাইনে খালাস
করে প্রথমে মহেশখালীতে স্টোরেজ ট্যাংক টার্মিনালে নেওয়া হবে। যা খালাস করতে ২৮ ঘণ্টা
লাগবে। যেহেতু পরীক্ষামূলকভাবে সবকিছু যাচাই হচ্ছে, তাই সময় কম–বেশি হতে পারে।
ইস্টার্ন রিফাইনারির এমডি মো. লোকমান গণমাধ্যমকে
বলেন, মহেশখালীর স্টোরেজ ট্যাংক টার্মিনাল থেকে দুটি পাইপলাইনের একটিতে অপরিশোধিত জ্বালানি
তেল ও আরেকটিতে পাম্পিং করে পরিশোধিত তেল (ডিজেল) ইস্টার্ন রিফাইনারিতে নেওয়া হবে চলতি
মাসের শেষ সপ্তাহে।
তিনি আরও বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে তেল খালাস
সফল হলে পাইপলাইনে নিয়মিত তেল খালাস করা হবে।
এর আগে গত ৩০ নভেম্বর আরেকটি পাইপ দিয়ে প্রায় ৮২ হাজার মেট্রিক টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল খালাস করা হয়। এ নিয়ে দেশে দুটি পাইপলাইন দিয়ে জ্বালানি তেল খালাস শুরু হলো।
আরও পড়ুন>> সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর সতর্কতা সংকেত
জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরে বড় জাহাজ থেকে
পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল খালাসের এই প্রকল্পের নাম ‘সিঙ্গেল পয়েন্ট
মুরিং উইথ ডাবল পাইপলাইন’। বাংলাদেশ ও চীন সরকারের মধ্যে (জিটুজি)
চুক্তির ভিত্তিতে এ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম
করপোরেশনের (বিপিসি) অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন রিফাইনারি। মূলত দ্রুত সময়ে কম খরচে
তেল খালাস করতে প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে।
এ প্রকল্পের আওতায় সাগরে ভাসমান মুরিং
বসানো হয়েছে। সেখান থেকে সাগরের তলদেশ দিয়ে মহেশখালী স্টোরেজ ট্যাংক হয়ে আবার পতেঙ্গার
ইস্টার্ন রিফাইনারি পর্যন্ত ১১০ কিলোমিটার পাইপলাইন বসানো হয়। সংশোধনের পর এ প্রকল্পের
ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা।
এর আগে গত জুলাইয়ে প্রথমবারের মতো সাগরের
তলদেশে পাইপলাইনে তেল খালাসের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তখন জাহাজের ভারসাম্য ঠিক রাখতে
না পারায় তেল খালাসের সংযোগকারী ভাসমান পাইপ ছিঁড়ে যায়।
প্রথমবার ব্যর্থ হওয়ার পর চীন থেকে চারটি
টাগবোট আনা হয়। দেশীয় একটি টাগবোটও রাখা হয়। এবার সব মিলিয়ে সাগরে জাহাজের ভারসাম্য
ঠিক রেখে তেল খালাস হচ্ছে।