রাজধানীর তেজগাঁও
থানায় দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে
আদালতে হাজির করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) সকালে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন
ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিয়ে আসা হয়। তাকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়েছে।
এর আগে গতকাল
বুধবার সৈয়দ মো. গোলাম কিবরিয়া (৩৬) নামে এক যুবলীগ নেতা বাদী ডিজিটাল নিরাপত্তা
আইনে মামলাটি করেন। মামলার এজহারে বলা হয়েছে, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে দৈনিক
প্রথম আলো একটি ছবিসহ সংবাদ প্রকাশ করে। একইসঙ্গে ওই সংবাদটি দৈনিক প্রথম আলো তাদের
ফেসবুক পেজ থেকে শেয়ার করে। পরে সামাজিক মাধ্যমে সংবাদটি ভাইরাল হয়ে যায়। সংবাদটি
দেশ বিদেশে অবস্থানরত হাজার হাজার মানুষ তাদের ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ক্রিনশটসহ
শেয়ার করেন। এই ঘটনায় মহান স্বাধীনতা দিবসে দেশের সোনালী গৌরবোজ্জ্বল ভাবমূর্তি নিয়ে
জনগণসহ বহিঃবিশ্বে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। মহান স্বাধীনতা দিবসে এই সংবাদ প্রকাশ
করায় বিশ্বব্যাপী দেশের ভাবমূর্তি ও স্বাধীনতার অর্জন নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু
হয়।
কিন্তু পরবর্তীতে
৭১ টিভি চ্যানেলসহ তাদের অনলাইন পোর্টালের লিংক প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, প্রথম আলো
উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা পরিচয় ও মিথ্যা উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদটি পরিবেশন করেছে।
যে শিশুটির কথা প্রথম আলোর রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে তার সম্পর্কে ভুল তথ্য দেওয়া
হয়েছে। নাম পরিচয় ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। পত্রিকায় বলা হয় শিশুটির নাম জাকির
হোসেন, কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যায় ওই শিশুর নাম সবুজ আহমেদ। তার বাড়ি সাভার থানাধীন
কুরগাঁও পাড়ায়। তার বাবা একজন পেশায় রাজমিস্ত্রি। মা মুন্নী বেগম। তাদের তিন সন্তানের
মধ্যে মেজো সন্তান সবুজ। প্রথম আলোর তথ্যে বলা হয়েছে, সে দিনমজুর।
এজাহারে উল্লেখ
করা হয়, সাত বছরের শিশু সবুজ আহমেদ প্রথম শ্রেণিতে পড়াশুনা করে এবং স্কুল শেষে মাঝে
মাঝে ফুল বিক্রি করে। শিশুটি জানিয়েছে, প্রথম আলোর সাংবাদিক শিশুর হাতে ১০ টাকা দিয়ে
এই ছবি তুলেছে। এতে প্রমাণিত হয় স্বাধীনতা দিবসে দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে
জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং বাংলাদেশের অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার হীন উদ্দেশ্যে একটি
অশুভ চক্র দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এই মিথ্যা সংবাদ
তৈরি ও পরিবেশন করে অনলাইন ও সামাজিক মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যার
ফলে দেশের অভ্যন্তরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। মহান
স্বাধীনতা দিবসে এমন মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ এবং বিশ্বব্যাপী প্রচার করায় বাংলাদেশের
একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে বাদী ক্ষুব্ধ হয়েছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।