আচরণবিধি অনুসরণ না করে পাঁচজনের বেশি
লোক নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকদের মারধর করার অভিযোগ
উঠেছে চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য প্রার্থী মোস্তাফিজুর
রহমানের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় তাকে আদালতে তলব করা হয়েছে।
এ সময় তিনি ও তার সমর্থকরা সাংবাদিকদের
ক্যামেরার ট্রাইপড ভাঙচুর করেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) সকালে
চট্টগ্রাম জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বরত জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এ ঘটনা
ঘটেছে। এসময় কার্যালয়ে তার সঙ্গে ঢুকে পড়েন এক ডজন নেতা-কর্মী।
সাংবাদিক মারধরের ঘটনায় নির্বাচন অনুসন্ধান
কমিটির (ইলেক্টোরাল) প্রধান যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ, আবু সালেহ মো: নোমান (বাঁশখালী-১৬)
পাঁচ সাংবাদিকের কাছ থেকে জবানবন্দি নিয়েছেন। শুক্রবার তিনটার মধ্যে চট্টগ্রাম-১৬ আসনের
এমপি মোস্তাফিজুর রহমানকে তার বক্তব্য দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়য়, বৃহস্পতিবার
নেতাকর্মী নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম জমা
দিতে আসেন এমপি মোস্তাফিজুর। এতে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সাংবাদিকরা বিভিন্ন বিষয়ে
প্রশ্ন করার একপর্যায়ে বেসরকারি টেলিভিশন ইন্ডিপেন্ডেন্টে কর্মরত সাংবাদিক রাকিব উদ্দিন
তাকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি এত লোক নিয়ে মনোনয়ন দাখিল করতে এসেছেন,
এটা তো নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন।’
প্রশ্ন করাকে কেন্দ্র করে মোস্তাফিজ উত্তেজিত
হয়ে পড়েন এবং ওই সাংবাদিককে থাপ্পড় দিয়ে শার্টের কলার ধরেন। এসময় অন্যান্য সংবাদকর্মীদের
ওপর এমপি মোস্তাফিজের অনুসারিরা হামলা চালায়।
এর আগেও সাংবাদিককে ফোন করে মোস্তাফিজুর
রহমানের গালিগালাজের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। এছাড়া কেন্দ্রীয়
সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে ‘অশালীন’ মন্তব্যে ভিডিও
ভাইরাল হওয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য, সাংসদের
বিরুদ্ধে মানববন্ধনে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর হামলা, বাঁশখালীতে নিজ দলের বিরোধী নেতাকর্মীদের
দমনপীড়ন, প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মিছিলসহ নানা কারণে তিনি বারবার গণমাধ্যমের শিরোনাম
হয়েছেন।
মনোনয়ন পত্র জমা দিয়ে বেরিয়ে আসার পর তিনি
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের প্রতিবেদক রাকিব উদ্দিন আচরণবিধি
লঙ্ঘনের বিষয়ে প্রশ্ন করলে সাংসদ মোস্তাফিজুর রেগে যান। তিনি রাকিবকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে
দিয়ে হুমকিধমকি দিতে থাকেন। তার সঙ্গে থাকা নেতা-কর্মীরাও এসময় সাংবাদিকদের ওপর চড়াও
হন। এতে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কিছু সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং
কর্মকর্তা আবুল বাসার মো. ফখরুজ্জামান দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘এখানে সিসি ক্যামেরা
আছে ৷ ক্যামেরায় সব দেখার সুযোগ আছে। কোনো প্রার্থী যদি আচরণবিধি ভঙ্গ করে বা কারও
সঙ্গে কোনোপ্রকার ঝামেলায় জড়ান, সেটা আমরা দেখব। যাদের সঙ্গে এ ঘটনা ঘটেছে আপনারা লিখিত
অভিযোগ দেন। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পাঠাবে। শুধু সংবাদকর্মী নন, যে কেউ এরকম ঘটনার
শিকার হলে আমরা ব্যবস্থা নেব।