সনাতন হিন্দুধর্মাবলম্বীদের
সবচেয়ে বড় আয়োজন শারদীয় দুর্গোৎসব শুক্রবার মহা ষষ্ঠীপূজার মধ্যদিয়ে শুরু হচ্ছে। পূজাকে
আনন্দমুখর করে তুলতে মন্দির-মণ্ডপগুলো বর্ণাঢ্য সাজে সাজানো হয়েছে। আজ ঢাকঢোল আর কাঁসর
বাদ্যে দেবীর বোধন পূজার মধ্যদিয়ে দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে।
শারদীয় দুর্গোৎসবের
প্রাক্কালে দক্ষিণায়নের নিদ্রিত দেবী দুর্গার নিদ্রা ভাঙার জন্য বন্দনা করা হবে। ষষ্ঠী
তিথিতে মণ্ডপে-মন্দিরে সন্ধ্যায় বিল্ব বৃক্ষ বা বেল গাছের পূজার মাধ্যমে দেবী দুর্গাকে
আবাহন করা হবে। ২০ অক্টোবর ষষ্ঠী, ২১ অক্টোবর সপ্তমী, ২২ অক্টোবর অষ্টমী, ২৩ অক্টোবর
নবমী এবং ২৪ অক্টোবর দশমী অনুষ্ঠিত হবে। দুর্গোৎসব উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন
ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
রাজধানীর ঢাকেশ্বরী
মন্দির প্রাঙ্গণ বাহারি সব রং আর কাঠ-কাপড়ের ফ্রেমের কারুকাজ দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে।
রং-বেরংয়ের আলোর ছটা সৌন্দর্যের মাত্রা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। বাঁশ বেঁধে আগত নারী-পুরুষ
দর্শনার্থীদের জন্য পৃথক স্থান তৈরি করা হয়েছে। ঢাকার জমকালো দুর্গাপূজার মধ্যে বনানী
মাঠের পূজা অন্যতম। এবারও সেখানে ব্যতিক্রমী আয়োজন করা হয়েছে। গুলশান-বনানী পূজা উদ্যাপন
ফাউন্ডেশনের আয়োজনে প্যান্ডেল থেকে শুরু করে প্রতিমা তৈরি, সাজসজ্জা ও আলোক ছটাতে বিশেষ
নজর দেওয়া হয়েছে। দেশীয় পণ্যের ঐতিহ্য দিয়ে পুরো পূজা মণ্ডপটিকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণেও দুর্গাপূজার জমকালো আয়োজন করা হয়েছে।
হলদে বর্ণের বাঁশের বেড়া দিয়ে পূজার মূল মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে। বিভিন্ন কারুকাজ ও নানা
রঙে প্রতিমাগুলোকে ফুটিয়ে তেলা হয়েছে। দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ, কার্তিকের মোহনীয়
রূপ পথচারীদেরও নজর কাড়ছে। পূজা প্রাঙ্গণ ও রাস্তার দুই ধারের পুরোটা রঙিন আলো দিয়ে
সাজানো হয়েছে। এখানেও নারী-পুরুষের মণ্ডপে প্রবেশের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এছাড়া রমনা কালীমন্দির, রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠ মন্দির, ধানমন্ডির রায়বাজার নিমতলা মন্দির,
আখড়া মন্দির, দুর্গা মন্দির, স্বামীবাগের লোকনাথ মন্দির, সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির, মিরপুর
কেন্দ্রীয় মন্দির, শাঁখারী বাজার, বনশ্রী, ফার্মগেটসহ বিভিন্ন স্থানে শারদীয়া দুর্গাপূজার
আয়োজন করা হয়েছে। এসব মণ্ডপে পূজার ৫ দিন বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
রাজধানী ঢাকাসহ
সারা দেশের প্রতিটি পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ, আনসার, র্যাব ও বিডিআর সদস্যরা
দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি প্রতিটি মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে।
ঢাকেশ্বরী মন্দির মেলাঙ্গনে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ
ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশ পূজা
উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক চন্দ্রনাথ পোদ্দার জানান, এবার সারা দেশে দুর্গাপূজার
মণ্ডপের সংখ্যা ৩২ হাজার ৪০৭টি। রাজধানীতে ২৪৪টি মণ্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে।