সাত খুনের অভিযোগ নিয়ে ২০ বছর পালিয়ে ছিলেন
এক নারী। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। অবশেষে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছে তাকে। সোমবার
(২২ ডিসেম্বর) দক্ষিণ-পূর্ব চীনের একটি আদালতে বিচার শুরু হয়েছে লাও রংঝি নামের ৪৬
বছরের ওই নারীর।
সিএনএন জানায়, ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত
ফা ঝিয়াইং নামে একজনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল লাও রংঝির। কিন্তু ১৯৯৯ সালের জুলাই মাসে
সাতজনকে খুনের অভিযোগে ফা কে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই বছরের ডিসেম্বরে আদালতে তার বিচারও
হয়।
প্রেমিক ফা গ্রেফতারের পর থেকেই পলাতক
লাও। গ্রেফতার এড়াতে বিভিন্ন সময় ছদ্মবেশ ধারণ করেছেন এই নারী। ঘুরেছেনে এক শহর থেকে
আরেক শহর। বিভিন্ন বার ও বিনোদন কেন্দ্রে খণ্ডকালীন চাকরিও করেছেন তিনি। চেহারা পরিবর্তনের
জন্য তিনি সার্জারিও করিয়েছেন বলে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভি জানিয়েছে।
এরপর কেটে যায় দীর্ঘদিন। অবশেষে গত বছরের
নভেম্বরে জিয়ামেন শহরের একটি শপিংমল থেকে লাওকে গ্রেফতার করা হয়। আদালতে তার বিরুদ্ধে
খুন, ডাকাতি এবং অপহরণের অভিযোগ আনা হয় বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
অবশেষে সোমবার তাকে নানচাং ইন্টারমিডিয়েট
পিপলস কোর্টে তোলা হয়।
আদালতে লাও খুনের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের
কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। তিনি তার প্রেমিক ফায়ের বলি হয়েছেন বলে দাবি করেন। ফা
তাকে জোর করে অপরাধে সহযোগিতা করতে বাধ্য করতেন বলে আদালতে দাবি করেছেন তিনি।
তিনি জানান, ফায়ের পদ্ধতি ছিল খুই নিষ্ঠুর।
তার সাথে সম্পর্ক চলাকালে তিনি শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এছাড়া
দুইবার তিনি গর্ভপাত করাতে বাধ্য হয়েছেন বলেও দাবি করেন।
আদালতে তিনি আরও জানান, গত দুই দশক ধরে
তিনি অন্ধকারে বসবাস করেছেন। এখন তিনি চূড়ান্তভাবে শান্তিতে ঘুমাতে পারবেন বলে জানান।
এছাড়া তাকে আর পুলিশের হাতে ধরা পড়ার ভয়ে থাকতে হবে না বলেও জানান।
এদিকে লাও আদালতে ক্ষমা চাইলেও খুনের শিকার
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তাকে ক্ষমা করা সম্ভব নয়। খুনের শিকার একজনের স্ত্রী ঝু
ডাহোং বলেন, দুই দশকের কষ্ট শুধু একটি ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমেই শেষ হয়ে যায় না।