ভারতে বিক্ষোভ যেন থামছেই না। সম্প্রতি
কলকাতায় এক নারী চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে দেশজুড়ে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ চলছে।
এরই মধ্যেই নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে মুম্বাইয়ের কাছের বলদাপুর শহরে।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে
এ তথ্য জানিয়েছে টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মুম্বাইয়ের বলদাপুর
শহরে চার বছর বয়সি দুই শিশু শিক্ষার্থীকে যৌন নিগ্রহের ঘটনা ঘটেছে। এর প্রতিবাদে বুধবার
(২১ আগস্ট) দ্বিতীয় দিনের মতো শহরটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষ
সেখানকার সব স্কুল ও ইন্টারনেট-সেবা বন্ধ করে দিয়েছে।
বলদাপুরের ডিসিপি সুধাকর পাথারে বলেছেন,
বিক্ষোভ এবং পরবর্তী সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে শহরে ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছে।
দুই শিশু শিক্ষার্থীকে হয়রানির অভিযোগে
ইতোমধ্যে স্কুলের এক পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ এ ঘটনায়
স্কুলের অধ্যক্ষ ও তিনজন স্টাফকে বরখাস্ত করেছে।
অপরাধীদের কঠোর শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভকারীরা
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বলদাপুর রেলওয়ে স্টেশনে কয়েক ঘণ্টা রেললাইন অবরুদ্ধ করে রাখেন।
পরে স্থানীয় পুলিশ লাঠিপেটা করে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা পাথর
নিক্ষেপ করলে অন্তত ১৭ জন পুলিশ এবং আটজন রেল পুলিশ আহত হন।
পরে সহিংসতার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ৭২ জনকে
গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলাও হয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে শহরে আইনশৃঙ্খলা বজায়
রাখতে অতিরিক্ত পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে।
জানা গেছে, চার বছর বয়সী ওই দুই শিশু বলদাপুর
শহরের সামনের সারির একটি প্রাক-প্রাথমিক স্কুলে পড়ে। ওই স্কুলে ছেলে-মেয়ে সবাই একসঙ্গে
পড়ে।
অভিযোগে বলা হয়, চলতি মাসের ১২ ও ১৩ তারিখ
অক্ষয় সিন্ধে নামের এক পরিচ্ছন্নতাকর্মী ওই দুই শিশুকে যৌন হয়রানি করেন। মেয়েদের শৌচাগারে
এ ঘটনা ঘটে। সেখানে তেমন নারী তত্ত্বাবধায়কও ছিলেন না। অভিযুক্তকে গত ১ আগস্ট চুক্তিভিত্তিক
নিয়োগ দেওয়া হয়।
এই দুই শিশুর একজন বাড়িতে গিয়ে তার মা-বাবার
কাছে স্পর্শকাতর জায়গায় ব্যথা ও তার সঙ্গে কী হয়েছে, তা খুলে বলে। ওই অভিভাবক অবাক
হন, যখন তারা জানতে পারেন একই অভিজ্ঞতা আরেক শিশুরও হয়েছে। এ নিয়ে ১৬ আগস্ট রাতে থানায়
অভিযোগ করা হয়। এরপর অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ এ ঘটনায় স্কুলের
অধ্যক্ষ ও তিনজন স্টাফকে বরখাস্ত করেছে। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা অভিযুক্তের মৃত্যুদণ্ডের
দাবি জানিয়ে আসছে।
মহরাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে
জানিয়েছেন, মামলার বিচার হবে দ্রুত বিচার আদালতে। এছাড়া চলমান বিক্ষোভকে রাজনৈতিকভাবে
উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন তিনি।