আজঃ শুক্রবার ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩
শিরোনাম

শেখ হাসিনা: আজন্ম লড়াকু এক নির্ভীক যোদ্ধা

প্রকাশিত:বুধবার ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
শ ম রেজাউল করিম

Image

শেখ হাসিনা। বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা। বঙ্গবন্ধুর রক্ত ও আদর্শের সুযোগ্য উত্তরসূরি শেখ হাসিনা জীবনের প্রতিটি বাঁকে বাঁকে লড়াই-সংগ্রাম করে নিজ অস্তিত্বের জানান দিয়ে গেছেন বারে বারে। সংকটে পড়ে আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। বার বার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েও এদেশের মানুষের অধিকারের জন্য, এমনকি বিশ্ব মানবতার শান্তি ও কল্যাণে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন। কালক্রমে তিনি হয়ে উঠেছেন বিশ্ব মানবতার সোচ্চার কণ্ঠস্বর।

ভারতবর্ষ বিভাজনের পর ন্যায্যতা আর অধিকারের প্রশ্নে পর্যুদস্ত বাঙালিরা যখন শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে দ্রোহের সূচনায় সবেমাত্র মনোযোগী, ঠিক সে সময়টাতেই ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর বাইগার নদীর তীরে টুঙ্গিপাড়ায় বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমান আর বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ঘর আলো করে এসেছে এক কন্যাশিশু। তিনি বঙ্গবন্ধুর আদরের হাসু, গ্রাম বাংলার ধুলোমাটি ও সাধারণ মানুষের সংস্পর্শে বেড়ে উঠা একজন বঙ্গবন্ধুর আদরের হাসুই কালক্রমে হয়ে উঠেন বাঙালির মুক্তির অগ্রদূত, অন্ধকার জয়ের একমাত্র আলোকবর্তিকা, আশা-আকাঙ্খার শেষ আশ্রয়স্থল। তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু হয় টুঙ্গিপাড়ার এক পাঠশালায়।

১৯৫৬ সালে শেখ হাসিনা ভর্তি হন টিকাটুলির নারীশিক্ষা মন্দির বালিকা বিদ্যালয়ে। ১৯৬৫ সালে শেখ হাসিনা আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৬৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন ঢাকার বকশীবাজারের পূর্বতন ইন্টারমিডিয়েট গভর্নমেন্ট গার্লস কলেজ থেকে। ঐ বছরই ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি কলেজছাত্রী সংসদের সহসভানেত্রী পদে নির্বাচিত হন। রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান শেখ হাসিনা শিক্ষা জীবনেই সম্পৃক্ত হোন রাজনীতির সাথে।

অসাম্প্রদায়িক চেতনায় আত্মবিশ্বাসী দেশপ্রেমের অনন্য উদাহরণ একজন শেখ হাসিনাই একসময় হয়ে উঠেন আবহমান বাংলার প্রতিচ্ছবি। অসাধারণ রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, সংগ্রামী চেতনা, আপোষহীন নেতৃত্ব, মানবিক মূল্যবোধ কালক্রমে তাঁকে অনন্য উচ্চতায় আসীন করেছে।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকলের জন্য নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ এবং টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য অভিন্ন সঙ্কট মোকাবিলায় সম্মিলিত প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেছেন। তিনি তাঁর ভাষণে বলেছেন, আমি নিজে নিপীড়িত এবং যুদ্ধ ও হত্যার নৃশংসতার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে যুদ্ধ, হত্যা, অভ্যুত্থান ও সংঘাতের ভয়াবহতার কারণে মানুষ যে বেদনা ও যন্ত্রণা সহ্য করে, তা অনুভব করতে পারি। তাই বিশ্বনেতাদের কাছে আবেদন, যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা ও সংঘাতের পথ পরিহার করে আসুন, আমাদের জনগণ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য স্থায়ী শান্তি, মানবজাতির কল্যাণ এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করি।

বঙ্গবন্ধু কন্যা তাঁর ভাষণে এটিও বলেছেন, বাংলাদেশের সংবিধান সকলের মৌলিক মানবাধিকারের নিশ্চয়তা প্রদান করে। সকলকে আইনগত সুরক্ষা প্রদান ও সুবিচার নিশ্চিতকরণে গত এক দশকে বাংলাদেশের আইনি ব্যবস্থার তাৎপর্যপূর্ণ সংশোধন করা হয়েছে। একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে, জনগণের মানবাধিকার রক্ষায় আমরা সম্পূর্ণরূপে অঙ্গীকারাবদ্ধ।

জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের নির্বাচিত সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ সারা বিশ্বের আপামর জনগণের মানবাধিকার সংরক্ষণে অন্যান্য সদস্যগণের সঙ্গে যে কাজ করে যাচ্ছে তাও বঙ্গবন্ধু কন্যা তাঁর বক্তব্যে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরেছেন। বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দ্ব্যর্থহীন কন্ঠে এও ঘোষণা করেছেন, বাংলাদেশ সংবিধানের আলোকে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করবে।

প্রসঙ্গতও বলে রাখা ভালো, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৮৮ হাজার বাংলাদেশী নারী ও পুরুষ ৪০টি দেশে ৫৫টি শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন করেছেন। জাতিসংঘের অধীনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শান্তিরক্ষায় নিয়োজিত শান্তিরক্ষীদের মধ্যে সংখ্যার হিসাবে বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে। দেশে-বিদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নানা উদ্যোগ নিয়ে বিশ্বনেতারাও এখন তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে বিশ্বের বুকে অনন্য নজির স্থাপন করেছেন তিনি।

মাত্র কয়েক মাস পূর্বে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে (ইউএনএইচআরসি) এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে আগামী ২০২৩-২০২৫ মেয়াদকালের জন্য সদস্যপদ লাভ করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে মানবাধিকার পরিষদের সদস্য হওয়ার জন্য সমর্থন দিয়েছে ১৬০টি দেশের প্রতিনিধিরা। পঞ্চমবারের মতো জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ। এটি মূলত বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার অঙ্গীকারেরই প্রতিফলন।

সাম্প্রতিক আরেকটি ঘটনা বিশ্বব্যাপী সাড়া ফেলেছে। যার কেন্দ্রে রয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সামনে হাটু গেড়ে বসে কথা বলছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের ছবি এটি। এ ছবিটি যেমন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বিনয়ের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তেমনি বিশ্ব পরিমন্ডলে আস্থাভাজন ও গ্রহণযোগ্য একজন জ্যেষ্ঠ বিশ্ব নেতা হিসেবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার অনবদ্য স্বীকৃতিরও বহিঃপ্রকাশ। প্রাসঙ্কিভাবে আরেকটি বিষয় স্মরণ করা যেতে পারে। তা হলো এ বছর স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানাতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা এক চিঠিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন লিখেছেন, আপনি বিশ্বের জন্য সহানুভূতি ও উদারতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্র আর অন্তত ২০ বার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েও সব প্রতিকূলতা পেছনে ফেলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদেশের সাধারণ মানুষের সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকার আদায়ের সংগ্রামে আপোষহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় তাঁর অনবদ্য ভূমিকার প্রশংসা করেছেন বিশ্ব নেতারা অকপটে। তাঁর নেতৃত্বেই স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে বাংলাদেশ। আর্থ-সামাজিক খাতেও এসেছে অভাবনীয় সাফল্য। বঙ্গবন্ধু কন্যার অর্জনের স্বীকৃতিওে মিলেছে। দেশে-বিদেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য শেখ হাসিনাকে বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা সম্মানিত করেছে।

পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘ ২৫ বছরের গৃহযুদ্ধ অবসানের ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৯৮ সালে তাকে হুপে-বোয়ানি শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করে ইউনেস্কো।

রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও মানবাধিকারের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসিকতা ও দূরদর্শিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের রানডলপ ম্যাকন উইমেন্স কলেজ ২০০০ সালের ৯ এপ্রিল তাকে মর্যাদাসূচক পার্ল এস বাক পুরস্কারে ভূষিত করে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ক্ষুধার বিরুদ্ধে আন্দোলনের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ শেখ হাসিনাকে সম্মানজনক সেরেস মেডেল প্রদান করে। সর্বভারতীয় শান্তিসংঘ শেখ হাসিনাকে ১৯৯৮ সালে মাদার তেরেসা পদক প্রদান করে।

 ২০০৯ সালে ভারতের ইন্দিরা গান্ধী মেমোরিয়াল ট্রাস্ট শান্তি ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অসামান্য ভূমিকা পালনের জন্য শেখ হাসিনাকে ইন্দিরা গান্ধী পুরস্কারে ভূষিত করে। এছাড়া তিনি যুক্তরাজ্যের গ্লোবাল ডাইভারসিটি পুরস্কার এবং দুইবার সাউথ সাউথ পুরস্কারে ভূষিত হন। ২০১৪ সালে ইউনেস্কো তাকে শান্তি বৃক্ষ পুরস্কারে ভূষিত করে।

আদর্শ, চিন্তায়, কর্মে, আত্মবিশ্বাসে, মানবিকতায় শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর সত্যিকারের প্রতিচ্ছবি। বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, যিনি বিশ্বের শোষিত-বঞ্চিত মানুষের সোচ্চার কণ্ঠস্বর ছিলেন, যিনি বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার অনবদ্য প্রচেষ্টার স্বীকৃতিস্বরূপ জুলিও কুরি পদকে ভূষিত হয়েছেন, তাঁর উত্তরসূরি বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় অগ্রদূত হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন।

সার্বিক বিবেচনায় এ কথা আজ অবধারিতভাবেই বলা যায়। একজন মানবিক রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তিনি নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামেও তিনি পরীক্ষিত একজন বিশ্ব নেতা।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যার পর দুর্বিসহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে ছোট বোন শেখ রেহানা, স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়া, পুত্র জয় ও কন্যা পুতুলকে নিয়ে দীর্ঘ প্রবাস জীবন কাটাতে হয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে। বাবা-মা, কনিষ্ঠ সহোদর শেখ কামাল-শেখ জামাল, আদরের ছোট্ট রাসেল আর আত্মীয়-পরিজন হারিয়ে নিদারুণ যন্ত্রণা আর অবর্ণনীয় কষ্ট বুকে চেপে নির্বাসিত প্রবাস জীবনেও তিনি ভেবেছেন বাংলার মানুষের কল্যাণের কথা, তাদের অধিকারের কথা। ১৯৮১ সালের ১৭ মে  প্রত্যয়দীপ্ত শেখ হাসিনা তৎকালীন সামরিক শাসকদের রক্তচক্ষু, জনকের খুনিদের আস্ফালন ও সব ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন।

সাধারণ মানুষের ভালোবাসা আর সংবর্ধনার জবাবে বঙ্গবন্ধু কন্যা সেদিন বলেছিলেন, আমার আর হারাবার কিছুই নেই। পিতা-মাতা, ভাই রাসেল সকলকে হারিয়ে আমি আপনাদের কাছে এসেছি, আমি আপনাদের মাঝেই তাদেরকে ফিরে পেতে চাই। আপনাদের নিয়েই আমি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তা বাস্তবায়ন করে বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে চাই, বাঙালি জাতির আর্থ-সামাজিক তথা সার্বিক মুক্তি ছিনিয়ে আনতে চাই। ঐ বছরেই মানিক মিয়া এভিনিউয়ে আয়োজিত গণ-সংবর্ধনায় তিনি বলেছিলেন, আমি চাই বাংলার মানুষের মুক্তি। শোষণের মুক্তি। বাংলার মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য বঙ্গবন্ধু সংগ্রাম করেছিলেন। আজ যদি বাংলার মানুষের মুক্তি না আসে, তবে আমার কাছে মৃত্যুই শ্রেয়।

গত দেড় দশক একটনা সরকারের নেতৃত্বে আছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। এ সময়ে বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য উন্নয়ন অগ্রযাত্রা বিশ্বাবাসীর কাছে বিস্ময় হয়ে ধরা দিয়েছে। ২০২১ সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘের মানদন্ড অনুযায়ী স্বল্পোন্নত দেশে হতে উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ অর্জন করেছে। এটি বাংলাদেশের বড় অর্জন। গত ১৪ বছরে দেশে গড় প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ৭ শতাংশের বেশি। স্বাধীনতার পর মাত্র ৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের জিডিপি নিয়ে যাত্রা শুরু হওয়া বাংলাদেশের জিডিপি আটত্রিশ বছর পর ২০০৯ সালে ১০০ বিলিয়ন ডলার হয়। গত ১৪ বছরে জিডিপির আকার ২০০৯ সালের তুলনায় চার গুণের বেশি বৃদ্ধি পেয়ে ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪৬০ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়। দেশ আজ বিশ্বের ৩৫ তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। গত দেড় দশকে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নতুন ২ কোটি ৩৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।

২০২৩ সালের জরিপ অনুযায়ী দেশে বর্তমানে মোট কর্মসংস্থানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ১১ লাখ জনে। বেকারত্বের হার ২০১০ সালের ৪ দশমিক ৫ শতাংশ হতে ২০২২ সালে ৩ দশমিক ২ শতাংশে নেমেছে। মাথাপিছু আয় ২০০৭-০৮ অর্থবছরের ৬৮৬ মার্কিন ডলার হতে চারগুণ বৃদ্ধি পেয়ে ২০২১-২২ অর্থবছরে ২হাজার ৭৯৩ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১২ দশমিক ৩ শতাংশ, অথচ গত ১৪ বছরে নানা বৈশ্বিক সংকট সত্ত্বেও গড় মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। দারিদ্র্যের হার ২০০৫ সালের ৪০ শতাংশ থেকে অর্ধেকের বেশি কমে ২০২২ সালে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে নেমেছে। এ সময়ে অতি দারিদ্র্যের হার ২৫ দশমিক ১ শতাংশ থেকে তিন-চতুর্থাংশ কমে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ হয়েছে।  গড় আয়ু বেড়ে বর্তমানে প্রায় ৭৩ বছর হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২০০৯ সালে ৪ হাজার ৯০০ মেগাওয়াট থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২২ সালে ২৭ হাজার ৩৬১ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত বাংলাদেশে একজন মানুষও গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না এ কর্মসূচির আওতায় দেশের ৯টি জেলা ও ২১১টি উপজেলা গৃহহীন মুক্ত হয়েছে। অচিরেই অন্য জেলাগুলো গৃহহীন মুক্ত হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ পুনঃপ্রতিষ্ঠা, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, যুদ্ধাপরাধের বিচার, সমুদ্রসীমা জয়, ছিটমহল সমস্যার সমাধান, ভূমিহীন ও গৃহহীনকে বিনামূল্যে ঘর প্রদান, বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে মহাকাশ বিজয়, সাবমেরিন যুগে বাংলাদেশের প্রবেশ, সক্ষমতার প্রতিক হিসেবে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ, মেট্রোরেল যুগে প্রবেশ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ, নতুন নতুন উড়াল সেতু নির্মাণ, এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু আর ঢাকায় বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নিমার্ণের সাফল্যসহ স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে এ যাত্রা বিশ্বের কাছেও বিস্ময়। এতো সব বড় বড় অর্জনের নেপথ্যের কারিগর বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তারপরও একশ্রেণির মানুষ দেখেও দেখে না।

তারা সব সময় বর্তমান সরকারের সময়ে দেশ ভালো চলছে না, দেশ ভালো নেই, মানবাধিকার পরিস্থিতি ভালো নেই, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এমন বক্তব্য ও প্রতিবেদন উপস্থাপনের চেষ্টা করছে। দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে, দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছে। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের মনে রাখতে হবে, প্রস্তুতি রাখতে হবে, স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক অপশক্তি সুযোগ পেলেই আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। মনে রাখতে হবে, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা রাষ্ট্র পরিচালনায় না থাকলে এদেশে মুক্তযুদ্ধের চেতনা, মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত হবে, আবারও জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদের উত্থান হবে, এদেশ আবার অপরাধীদের অভয়ারণ্য হবে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও ন্যায়বিচার পাওয়া হবে অলীক কল্পনা, আবার দুর্নীতির মহোৎসব হবে, সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পে ছেয়ে যাবে বাংলার আকাশ, জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ হবে, এক ভয়ঙ্কর দুঃস্বপ্ন তাড়া করে ফিরবে এদেশের সাধারণ মানুষকে। আমরা সবাই চাই এ আশঙ্কাগুলো যেন সত্যি না হয়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭ তম জন্মদিনে আমাদের প্রত্যাশা দৃঢ়প্রত্যয়ী শেখ হাসিনা সব ষড়যন্ত্র, সব অন্ধকার দূর করে আলোর উৎস হয়ে আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন দীর্ঘজীবন। তিনি ভালো থাকলে বাংলাদেশে ভালো থাকবে। বাংলাদেশ ভালো থাকলে আমরা সবাই ভালো থাকবো। আজন্ম লড়াকু নির্ভিক যোদ্ধা শেখ হাসিনার হাত ধরে বিশ্বশান্তি ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা আরও একধাপ এগিয়ে যাবে, তৈরি হবে একটি বৈষম্যহীন মানবিক বিশ্ব।

লেখক: শ ম রেজাউল করিম এমপি, মন্ত্রী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

নিউজ ট্যাগ: শ ম রেজাউল করিম

আরও খবর



সাইকেলে চড়ে এসে মনোনয়ন ফরম জমা দিলেন পলক

প্রকাশিত:বুধবার ২৯ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ২৯ নভেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
Image

সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি:

সাইকেল চালিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাটোর-৩ (সিংড়া) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট জুনাইদ আহমেদ পলক মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন।

বুধবার (২৯ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় প্রতিমন্ত্রী পলক তার বাসা থেকে সাইকেলে সিংড়ার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ইউএনও মাহমুদা খাতুনের কার্যালয়ে গিয়ে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়ে সাইকেলে ফিরে যান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ মো. ওহিদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ও সিংড়া পৌরসভার মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস, সহ-সভাপতি আব্দুল ওয়াদুদ মোল্লা, আব্দুর রাজ্জাক খান, জাহেদুল ইসলাম ভোলা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, লুৎফুল হাবিব রুবেল, মাওলানা রুহুল আমিন, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন প্রমুখ।

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আমাকে পঞ্চমবারের মতো নাটোর-৩ (সিংড়া) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন। আজ দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। আগামীতে নান্দনিক, আধুনিক এবং স্মার্ট সিংড়া গড়ে তোলা হবে।


আরও খবর
পিরোজপুর মুক্ত দিবস আজ

শুক্রবার ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩

পিরোজপুর মুক্ত দিবস আজ

শুক্রবার ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩




এখনও আ.লীগের দিকে তাকিয়ে ১৪ দলের শরিকরা

প্রকাশিত:সোমবার ২৭ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:সোমবার ২৭ নভেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ যখন মহা উৎসবে প্রায় সব আসনে প্রার্থী ঘোষণা করছে, এরপরও দলটির দিকে তাকিয়ে আছেন ১৪ দলের শরিক দলগুলোর নেতারা।

সরকার পতন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের একদফা দাবি নিয়ে আন্দোলনে বিএনপি ও তার সমমনা দলগুলো। এর বিপরীতে আওয়ামী লীগ কর্মসূচি পালন করে রাজপথে অবস্থান নিচ্ছে। তবে দলটির নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটকে রাজপথে সেভাবে সক্রিয় থাকতে দেখা যাচ্ছে না। এমনকি অন্যতম বিরোধীরা ভোটে না আসায় ক্ষমতায় যেতে জোট গড়ার প্রয়োজন আছে কিনা সেই প্রশ্ন সামনে এনে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৮টি আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে। দলটির জোট শরিকরা বলছেন, তাদের সঙ্গে আসন সমঝোতা তো দূরের কথা, আসন বণ্টন নিয়ে কোনও আলোচনাই হয়নি। তবে আগামী দুই দিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত আলোচনা হওয়ার আশা করছেন তারা।

রবিবার (২৬ নভেম্বর) বিকালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৮টিতে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বাকি দুইটি আসনে প্রার্থী পরে ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি। এর মধ্যে একটি আসন ১৪ দলের অন্যতম শরিক দল জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনুর। অপরটিতে জাতীয় পার্টির (এরশাদ) এ কে এম সেলিম ওসমান বর্তমান সংসদ সদস্য।

এছাড়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বচনে ১৪ দলীয় জোট ও মহাজোটকে (বিকল্প ধারা, জাতীয় পার্টি) ছেড়ে দেওয়া ৩১টি আসনে নিজেদের প্রার্থী দিয়েছে আওয়ামী লীগ।

জাতীয় পার্টি-জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশাহ ও জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আকতারসহ জোট শরিকদের আসনগুলোতে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে। অবশ্য জোটের একাধিক দলের নেতা এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম নিলেও তাদের প্রার্থী করেনি আওয়ামী লীগ।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ যখন মহা উৎসবে প্রায় সব আসনে প্রার্থী ঘোষণা করছে, এরপরও দলটির দিকে তাকিয়ে আছেন ১৪ দলের শরিক দলগুলোর নেতারা। এবার বেশি আসন ছাড়ের আশা করে আসলেও এখন খোদ আসন সমঝোতা নিয়েই শঙ্কায় থাকার কথা জানিয়েছেন কয়েকজন নেতা। এই শঙ্কার মূলে রয়েছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের অতি সাম্প্রতিক জোট নিয়ে দেওয়া বক্তব্য।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাইছাইয়ের মধ্যেই শনিবার (২৫ নভেম্বর) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ওবায়দুল কাদের বলেন, শরিক সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত আমাদের এখনও হয়নি। আমরা এখনও ঠিক করিনি শরিকদের আসলে আমাদের প্রয়োজন আছে কিনা। জোটের বিপরীতে জোট, আমাদের প্রতিপক্ষ যদি বড় জোট করতো, তাহলে তার বিপরীতে আমাদের জোট হতো। তাছাড়া আমরা কেন অহেতুক জোট করতে যাবো? প্রয়োজন না থাকলে তো জোট করবো না। আর জোট করবো যাদের নিয়ে, তাদের তো মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা থাকতে হবে।

এমতাবস্থায় ১৪ দলের বড় কয়েকটি শরিক দলের শীর্ষ নেতারা বলেন, তারা ১৪ দলীয় জোটগতভাবেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে চান। জোটের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমুও ১৪ দল জোটগতভাবে নির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছেন।

দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অবস্থা ও বৈশ্বিক চাপের মধ্যে এই নির্বাচনকে আওয়ামী লীগও 'অগ্নিপরীক্ষা' হিসেবে দেখার কথা বলছে। এই কারণে জোট শরিকরা এখনও আওয়ামী লীগের দিকে তাকিয়ে আছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মিলন বলেন, আসন সমঝোতার বিষয়ে আমাদের সঙ্গে এখনও কোনও আলোচনা হয়নি। তবে তারা আশ্বস্ত করেছে আমাদের সঙ্গে সমঝোতা করবে। তারা দলীয় মনোনয়ন ঘোষণার পরই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। তারা জানিয়েছে সমঝোতার পথ আছে। দেখা যাক কী হয়।

জাসদ সাধারণ সম্পাদক শিরিন আকতার বলেন, দেখলাম তারা নমিনেশন ঘোষণা করেছে। আওয়ামী লীগ থেকে জানানো হয়েছে দুই একদিনের মধ্যে ১৪ দলের সভা হবে। সেখানে হয়তো সমঝোতা হবে। আমরা সেই পর্যন্ত অপেক্ষা করি।

জাতীয় পার্টির জেপি মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরাও দেখলাম আওয়ামী লীগ ২৯৮ আসনে মনোনয়ন দিয়েছে। গত তিন টার্ম সমঝোতার পরে মনোনয়ন ঘোষণা হলেও এবার কেন এককভাবে আগেই ঘোষণা করলেন সেটার কারণ উনারাই বলতে পারবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন শিগগিরই তিনি ১৪ দলের সঙ্গে বসবেন। উনার সঙ্গে বসলে হয়তো এটার একটা নতুন সমাধান হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাদের প্রার্থিতা ঘোষণায় আশা-হতাশা কোনটাই দেখছি না। তবে কিছুটা হতাশ এই কারণেই যে, উনারা যেভাবে নমিনেশন দিয়েছেন সেভাবে নির্বাচন হলে যে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রত্যাশা করা হচ্ছে সেটা সম্ভব হবে না। আর ওই নির্বাচনের পরে যে সরকার হবে সেখানে বিরোধী দলের অবস্থান-শূন্যের কোঠায় নেমে আসবে।

এক প্রশ্নের জবাবে শেখ শহিদুল ইসলাম বলেন, জানি না কেন ওনারা এভাবে নমিনেশন ঘোষণা করলেন। হয়তো নির্বাচনি মাঠ সরগরমের জন্য এটা করতে পারেন। তবে যেটা হয়েছে তা সরগরমের পরিবর্তে  নির্বাচনি মাঠকে স্থিমিত করবে।

এদিকে জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাতীয় পার্টি-জেপি, তরিকত ফেডারেশনসহ ১৪ দলের শরিক দলগুলো দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়ার শুরু করেছে এবং এগিয়ে নিচ্ছে। কোনও কোনও দল দলীয় প্রার্থী চূড়ান্তও করেছে। সম্ভাব্য এসব প্রার্থীরা প্রচারণা চালিয়ে আসছেন।

প্রসঙ্গত, নবম, দশম ও চলতি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরিক দলগুলোর সঙ্গে আওয়ামী লীগ আসন ভাগাভাগি করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। ওইসব নির্বাচনের ক্ষেত্রে দেখা গেছে দলীয় প্রার্থী ঘোষণার আগেই জোট নেতাদের সঙ্গে বসে আসন সমঝোতার বিষয়টি চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগ। সমঝোতার মাধ্যমে যেসব আসন ১৪ দলীয় জোটের শরিকদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে সেই সব আসনে আওয়ামী লীগ নিজেদের প্রার্থী দেয়নি। বিপরীতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতার আসনে ১৪ দলীয় জোটের কোনও দলও প্রার্থী দেয়নি।

গত তিনটি নির্বাচনের ধারাবাহিকতায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে এমনটি আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলীয় জোটের শরিকরা আগে থেকে বলে আসছে। এর অংশ হিসেবে ১৪ দলীয় শরিকদের মধ্যে নিবন্ধিত দলগুলোর প্রায় সবগুলোই নির্বাচন কমিশনে তাদের দলীয় প্রতীকের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকায় ভোট করবে বলে জানিয়েছে। আওয়ামী লীগ ইসিতে পৃথক চিঠি দিয়ে এই দলগুলোর নৌকা প্রতীকে ভোটের বিষয় তাদের সম্মতিও জানিয়েছে।


আরও খবর
রবিবার হরতাল-অবরোধ দিচ্ছে না বিএনপি

বৃহস্পতিবার ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩




সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন করতে শেখ হাসিনাকে কানাডার ৮ এমপির চিঠি

প্রকাশিত:শুক্রবার ১০ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১০ নভেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচন সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় হোক এমনটি চায় কানাডার হাউস অব কমন্সের আট সদস্য। নিজেদের এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়ে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি লিখেছেন।

বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে তারা চিঠি পাঠান। কানাডার ওই আট রাজনীতিক কানাডা-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের সদস্য। শুক্রবার কানাডা-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের চেয়ার ব্রেড রেডেকপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (টুইটার) এ তথ্য জানিয়েছেন।

কানাডার হাউস অব কমন্সের আট সদস্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠিতে লিখেছেন কানাডা-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশে ২০২৪ জানুয়ারির নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়, তা নিয়ে গভীর প্রত্যাশা থেকে আপনাকে লিখছি। এ নির্বাচন বাংলাদেশের কোটি কোটি ভোটারকে দেশ পরিচালনার জন্য পছন্দের রাজনৈতিক দল বেছে নেওয়ার সুযোগ করে দেবে বলেই মনে করি। এ লক্ষ্য পূরণে আমরা কয়েকটি প্রত্যাশার বিষয় তুলে ধরছি

আমরা আশা করি, সরকার মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখবে এবং ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে। আমাদের প্রত্যাশা ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানো, ভোট কারচুপি ও ব্যালটবাক্স ভর্তি করে দেওয়ার মতো ভোটে অনিয়ম রোধের বিষয়টি নিশ্চিত করতে সরকার সতর্কতার সঙ্গে যথাসাধ্য কাজ করে যাবে।

আমরা আশা করব সহিংসতা রোধ এবং যে কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শে বাংলাদেশের সব জনগণকে সুরক্ষায় সরকার সব ব্যবস্থা নেবে এবং আমাদের প্রত্যাশা থাকবে বাংলাদেশের সব বৈধ ভোটারের সক্রিয় অংশগ্রহণে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

কানাডা ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক যথেষ্ট শক্তিশালী। আমরা চাই ভবিষ্যতে এ সম্পর্ক আরও বিকশিত হোক। দুই দেশে গণতান্ত্রিক সরকার থাকলে তখনই সম্পর্কের এ বিকাশ সম্ভব।

চিঠির শেষে কানাডা-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের আট সদস্য লিখেছেন স্বচ্ছতার সঙ্গে সব রাজনৈতিক দলকে যুক্ত করে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করে গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য বিকাশের ধারা অব্যাহত রাখতে আপনার প্রতি আহ্বান জানাই।


আরও খবর
তৃতীয় দিনে ১৫৫ প্রার্থীর আপিল ইসিতে

শুক্রবার ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩




সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রশাসনকে ৩ নির্দেশনা

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৩ নভেম্বর 20২৩ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৩ নভেম্বর 20২৩ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে প্রশাসনকে তিনটি নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। মন্ত্রণালয়, বিভাগ, মাঠ প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ প্রশাসনের সব স্তরে এ নির্দেশনা দিয়ে বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পাদন করা সবার জাতীয় দায়িত্ব। নির্বাচন কমিশন সচিবালয় অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানে সবার সহযোগিতা কামনা করেছে।

এতে বলা হয়, নির্বাচন সংক্রান্ত কার্যাদি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও সম্পাদনের জন্য সব মন্ত্রণালয়-বিভাগ তথা সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্ত্বশাসিত, আধা-স্বায়ত্ত্বশাসিত অফিস-প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্য থেকে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেসরকারি অফিস-প্রতিষ্ঠান থেকেও প্রিজাইডিং অফিসার/সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার-পোলিং অফিসার নিয়োগ করার প্রয়োজন হবে।

সরকারি, সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মধ্য থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষককে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ ছাড়াও নির্বাচনে বিভিন্ন দায়িত্ব প্রদান করা হতে পারে। এ ছাড়া বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবনগুলো ভোটকেন্দ্র হিসেবে এবং প্রতিষ্ঠানের আসবাবপত্র নির্বাচনের কাজে ব্যবহার করা প্রয়োজন হবে। সে ক্ষেত্রে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে চিঠিতে।


আরও খবর
তৃতীয় দিনে ১৫৫ প্রার্থীর আপিল ইসিতে

শুক্রবার ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩




চীনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত ২৫

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

চীনের উত্তরাঞ্চলীয় শানসি প্রদেশে বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত ৫১ জনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য বিট্রিশ সংবাদ সংস্থা বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে শানসি প্রদেশের লুলিয়াং শহরে একটি বহুতল অফিস ভবনে আগুন লাগে। এতে ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আগুনের সূত্রপাত ওই ভবনের চতুর্থতলায় অবস্থিত ইয়ংজু কয়লা কোম্পানির অফিস থেকে হয়েছে। আগুন লাগার পর সেখান থেকে ৬৩ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫১ জনকে লুলিয়াংয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়েছে। তবে আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে তাৎক্ষণিক কিছু জানা যায়নি এবং এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। 

আরও পড়ুন>> হঠাৎ ওয়াশিংটন যাচ্ছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত

এদিকে চীনা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ওয়েইবোতে পোস্ট করা ভিডিওতে ভবন থেকে আগুনের শিখা ওই ভবন থেকে ছড়িয়ে পড়ছে। এ ছাড়া ভবনের পার্কিংয়ের জায়গায় বেশ কিছু লোক জড়ো হয়ে আগুন জ্বলতে দেখছেন। এ সময় জরুরি বিভাগের লোকজনকে আগুন নেভানোর তৎপরতা চালাতে দেখা যায়।

গত অক্টোবরে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইনচুয়ান প্রদেশের একটি বারবিকিউ রেস্তোরাঁয় বিস্ফোরণে ৩১ জনের প্রানহানি হয়। এছাড়াও চলতি বছরের এপ্রিলে রাজধানী বেইজিংয়ের একটি হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে ২৯ জনের মৃত্যু হয়।


আরও খবর