কুমিল্লায় বাল্কহেডের ধাক্কায় ১৫ বছরের পুরনো সেতু ভেঙে পড়েছে। গত
রোববার (২ অক্টোবর) রাত ২টার পর জেলার দাউদকান্দি উপজেলার কালাডুমুর নদে এ দুর্ঘটনা
ঘটে। দুর্ঘটনার পর বাল্কহেডের চালক ও তার সহকারীরা সাঁতরে তীরে উঠে যায়। এ কারণে কোনো
হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে সেতুটির ভাঙা অংশ বাল্কহেডের ওপরে পড়লে বাল্কহেডের কিছু অংশ
নদীতে ডুবে যায়।
শুক্রবার (৭ অক্টোবর) পর্যন্ত এ দুর্ঘটনার পাঁচ দিনেও বাল্কহেডটি
কেউ উদ্ধার করেনি। সংস্কার করা হয়নি ব্রিজটিও। যে কারণে বন্ধ আছে নৌপথ ও স্থলপথ।
স্থানীয় বাসিন্দা মতিন সৈকত ও স্থানীয় রায়পুর পোস্ট অফিসের মাস্টার
রফিকুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনা ঘটেছে আরও পাঁচদিন আগে। ওইসময় থেকে এখন পর্যন্ত (শুক্রবার
সন্ধ্যা) ব্রিজের ভাঙা অংশ বাল্কহেডের ওপর পড়ে আছে।
স্থানীয় দুই বাসিন্দা জানান, দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর বাজারের
পাশের কালাডুমুর নদের ওপর দক্ষিণের ছান্দ্রা
গ্রাম থেকে উত্তরের গলিয়ার চর ও চরচার পাড়সহ অন্তত পাঁচ গ্রামের যোগাযোগের ব্রিজ এটি।
সেতু ভেঙে পড়ায় প্রায় ছয় কিলোমিটার পথ ঘুরে গৌরীপুর বাজার ও গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ড হয়ে
যাতায়াত করতে হবে এসব এলাকার বাসিন্দাদের।
সূত্র জানায়, প্রায় ১৫ বছর আগে কালাডুমুর নদের ওপর সেতুটি নির্মাণ
করা হয়। এতে জিংলাতলী ইউনিয়নের কৃষক থেকে শুরু করে ছাত্র-ছাত্রীসহ প্রতিদিন অন্তত দুই
হাজার মানুষের চলাচল। আবার নদের মধ্য দিয়ে চলতো নৌযান। এতে সেতুটিতে মালবাহী কার্গো
ও বাল্কহেডের ধাক্কা প্রতিদিনই লাগতো। ধীরে ধীরে সেতুর অবস্থা জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। সোমবার
রাতে মেসার্স রায়হান ইসরাত পরিবহনের একটি বাল্কহেড ইলিয়টগঞ্জ এলাকায় বালু ফেলে ফিরছিল।
খালি বাল্কহেডটি কালাডুমুর-গোমতী-মেঘনা নদী হয়ে গজারিয়ায় যাওয়ার পথে ছান্দ্রা গ্রামের
কাছে পৌঁছালে সেতুর মাঝখানের দিকের একটি পিলারে ধাক্কা দেয়। এতে সেতুর মাঝখানের অংশ
ভেঙে বাল্কহেডের ওপরে পড়ে। এসময় চালক ও তার তিন সহকারী সাঁতরে তীরে ওঠে।
জিংলাতলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বলেন, এই ব্রিজটি বাল্কহেডের
ধাক্কাতেই দুর্বল হয়ে গেছে। আল্লাহ বাঁচিয়েছে বড় দুর্ঘটনা ঘটেনি। আমরা দ্রুতই উদ্ধার
কাজ করবো।
দাউদকান্দি ফায়ার সার্ভিস ইউনিটের স্টেশন মাস্টার মো. রাসেল বলেন,
কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বলেছেন,
যেহেতু বাল্কহেড ভেঙেছে, তাই তারাই উদ্ধার কাজ করবে। প্রয়োজন হলে আমাদের ডাকবে। কিন্তু
এখনও আমরা কোনো মেসেজ পাইনি।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) দাউদকান্দি উপজেলা প্রকৌশলী
মো. আফসার হোসেন খন্দকার বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। ব্রিজটি মেরামতের সুযোগ নেই।
তাছাড়া ব্রিজটি ড্যামেজ হয়ে গেছে। এখানে নতুন আরেকটি ব্রিজ স্থাপনের জন্য সব কাগজপত্র
রেডি করেছি।