শিক্ষককে চড়-থাপ্পড় মারা সেই ছাত্রকে সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় দায়ের করা মামলা থেকে জামিন পেতে ওই ছাত্র আজ মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে চুয়াডাঙ্গার শিশু আদালতে আত্মসর্ম্পন করলে আদালতের বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাকে সংশোধনাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
চুয়াডাঙ্গার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আবু তালেব বিশ্বাস জানান, সরকারি কর্মকর্তাকে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া এবং মারপিটের অভিযোগে ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গার ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক হাফিজুর রহমানের দায়ের করা মামলায় আজ মঙ্গলবার একই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র সাইফুল আমিন শীর্ষ শিশু আদালতে আত্মসর্ম্পন করে। আদালতের বিচারক মুসরাত জেরিন উভয় পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শুনে মামলার আসামি সাইফুল আমিন শীর্ষকে সংশোধনাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
জানা গেছে, গত রবিবার চুয়াডাঙ্গা ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের নির্বাচনী পরীক্ষা চলাকালে ১০ম শ্রেণির ছাত্র সাইফুল আমিন শীর্ষ পরীক্ষার হলে অছাত্রসুলভ আচরণ করলে দায়িত্বরত শিক্ষক হাফিজুর রহমান ওই ছাত্রের খাতা কেড়ে নেন। এর পরপরই ছাত্র সাইফুল ইসলাম শীর্ষ নিজের আসন থেকে উঠে এসে শিক্ষক হাফিজুর রহমানকে দুই গালে দুটি চড় মারে। এর পরপরই পরীক্ষার হল ছেড়ে পালিয়ে যায় ওই ছাত্র।
পরদিন সোমবার শিক্ষক হাফিজুর রহমান চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় সরকারি কর্মকর্তাকে সরকারি কাজে বাধা প্রধান ও মারপিটের অভিযোগ মামলা দায়ের করেন। এর আগে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। তদন্ত কমিটির কাজ চলমান রয়েছে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে ওই কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।
থানায় মামলা দায়েরের পর থেকে অভিযুক্ত ছাত্র পলাতক অবস্থায় রয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার স্থানীয় সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শিক্ষককে মারধোর করার প্রতিবাদে শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও শহীদ হাসান চত্বরে মানববন্ধন করে।
আজ মঙ্গলবার শহরের শহীদ হাসান চত্বরে চুয়াডাঙ্গার ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করে ওই ছাত্রের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে। এক ঘন্টাব্যাপি চলে মানববন্ধন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, শিক্ষককে মারধোর করা গর্হিত অপরাধ। এ বিষয়ে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কোনোক্রমেই এ ঘটনাকে ছোট করে দেখা হবে না এবং কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।