সূর্যের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছে ভারতের নভোযান আদিত্য-এল ১। শনিবার (২ সেপ্টেম্বর)
স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য শ্রীহরিকোটার লঞ্চপ্যাড থেকে
সূর্যের কক্ষপথের উদ্দেশে যাত্রা করে আদিত্য-এল ১। আশা করা হচ্ছে, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে
আগামী ১২৫ দিনের মধ্যে বা চার মাসের মধ্যে সূর্যের কক্ষপথে পৌঁছাবে আদিত্য-এল ১।
ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো জানিয়েছে, উৎক্ষেপণের পর প্রায় ১৬ দিন পৃথিবীর
চারিদিকে ঘুরবে আদিত্য-এল ১। এই ১৬ দিনে সূর্যের দিকে পাড়ি দেয়ার জন্য পাঁচটি ধাপে
গতিবেগ বাড়াবে আদিত্য। এরপর ১১০ দিন সূর্যের অভিমুখে যাত্রা করে একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে
দাঁড়িয়ে নক্ষত্রটিকে পর্যবেক্ষণ করবে সেটি। এই ল্যাগরেঞ্জ পয়েন্টে সূর্য এবং পৃথিবীর
আকর্ষণ এবং বিকর্ষণ বল একসঙ্গে ক্রিয়াশীল। ফলে এই অঞ্চলে পৌঁছে কৃত্রিম উপগ্রহ স্থির
থাকতে পারে। মহাকাশের পরিবেশ, আবহাওয়া, তার উপর সূর্যের কী প্রভাব পড়ে, সেসব জানার
চেষ্টা করবে আদিত্য-এল ১।
সংস্কৃত ভাষায় সূর্যের আরেক নাম আদিত্য। সূর্যের কক্ষপথের উদ্দেশে পাঠানো নভোযানটির
নাম তাই সূর্যের নামেই রাখা হয়েছে। আর, এল ১ আসলে লেগ্রেঞ্জ পয়েন্ট ১-এর সংক্ষিপ্ত
রূপ। পৃথিবী থেকে রওনা হয়ে ১৫ লাখ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করার পর যেখানে গিয়ে থামবে
আদিত্য, সেই এলাকাটিকেই সূর্যের লেগ্রেঞ্জ পয়েন্ট বলে উল্লেখ করেছে ইসরো।
ইউরোপের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইউরোপিয়ান
স্পেস এজেন্সির সংজ্ঞানুযায়ী, লেগ্রেঞ্জ পয়েন্ট হলো মহাবিশ্বের এমন একটি এলাকা, যেখানে
দুই বৃহৎ বস্তু, যেমন: সূর্য ও পৃথিবীর মহাকর্ষীয় শক্তি পরস্পরকে বিকর্ষণ করে। আদিত্য-এল
১ যদি তার নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে, তাহলে পৃথিবী যে গতিতে সূর্যকে প্রদক্ষিণ
করে—সেই একই গতিতে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে সক্ষম হবে
আদিত্য-এল ১।
আদিত্য-এল ১ ভারত থেকে সূর্যের দিকে পাঠানো প্রথম মহাকাশযান। ইসরো জানিয়েছে, মহাকাশযানটিকে
সূর্য ও পৃথিবীর মধ্যকার একটি ‘হ্যালো’ কক্ষপথের
এল-১ পয়েন্টে স্থাপন করা হবে। সংস্থাটির দাবি, এই পয়েন্ট থেকে সূর্য নিয়ে গবেষণা করা
তুলনামূলক সহজ।
বলা হচ্ছে, অভিযান সফল হলে সৌরঝড়ের পূর্বাভাস দিতে সক্ষম হবে ইসরো। পাশাপাশি সূর্যের
আবহাওয়া পরিবর্তনের প্রভাবও বুঝতে এ অভিযান সহায়ক হবে। ২০২০ সালেও সূর্যে অভিযান পরিচালনার
উদ্যোগ নিয়েছিল ইসরো। কিন্তু সে সময় করোনা মহামারির কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়।