চার মাসেরও বেশি সময় ধরে রাজধানীর এভারকেয়ার
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখনও স্থিতিশীল
রয়েছে।
শারীরিক কিছু জটিলতার কারণে সোমবার সন্ধ্যা
৬টার দিকে তাকে করোনারি কেয়ার ইউনিট-সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসা শেষে সাড়ে
৭টায় তাকে কেবিনে নেওয়া হয়। এ নিয়ে একাধিকবার সিসিইউতে নেওয়া হয় সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিকেল
বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন জানান, শারীরিক একটু জটিলতার কারণে ম্যাডামকে
(খালেদা জিয়া) মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসা শেষে
আবারও কেবিনে নেওয়া হয়।
৯ আগস্ট থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন
খালেদা জিয়া। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের
একটি মেডিকেল বোর্ড সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসা কার্যক্রম সার্বক্ষণিক তদারকি
করছেন।
বোর্ডের একজন চিকিৎসক জানান, মেডিকেল বোর্ড
খালেদা জিয়াকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখছেন। তার স্বাস্থ্যের বিভিন্ন প্যারামিটার
স্থিতিশীল রয়েছে। যেগুলো একটু অবনতির দিকে যাচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে তা নিয়ন্ত্রণে
রাখা হচ্ছে। দীর্ঘদিন হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা নিতে গিয়ে শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিকভাবে
কিছুটা দুর্বল। তবে খাওয়া-দাওয়া স্বাভাবিক রয়েছে। নিয়মিত খাবারসহ আনুষঙ্গিক সেবার জন্য
পুত্রবধূ শর্মিলা রহমান সিঁথি হাসপাতালে থাকছেন।
২৫ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস
ইউনিভার্সিটির স্কুল অব মেডিসিনের লিভার ও কিডনি প্রতিস্থাপন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হামিদ
আহমাদ আবদুর রব, ইন্টারভেনশনাল অনকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ক্রিসটোস স্যাভাস জর্জিয়াডেস
এবং হেপাটোলজির অধ্যাপক জেমস পিটার হ্যামিলটন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকায় এসে জরুরিভাবে
তার (খালেদা জিয়া) লিভারে রক্তক্ষরণ বন্ধে অস্ত্রোপচার (ট্রান্সজুগলার ইন্ট্রাহেপাটিক
পোরটোসিসটেমিক সান্ট-টিপস) করেন। এরপর কয়েকদিনের মধ্যে খালেদা জিয়াকে কেবিনে নিয়ে চিকিৎসকরা
নিবিড় পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা দিচ্ছিলেন।
৭৮ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন
ধরে আর্থ্রাইটিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে ভুগছেন। খালেদা
জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর অনুমতি চেয়ে ২৫ সেপ্টেম্বর তার পরিবারের পক্ষ থেকে ছোট ভাই শামীম
এস্কান্দার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিলেন। মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশসহ (খালেদা
জিয়াকে দ্রুত বিদেশে পাঠানো জরুরি) সেই আবেদনটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলে তা নাকচ
করে দেয় সরকার।
দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা
জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দি হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দি ছিলেন সাবেক
এই প্রধানমন্ত্রী। করোনার মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ
সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছিল। এরপর ছয় মাস পরপর
তার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার।