সংখ্যালঘু উন্নয়নে পশ্চিমবঙ্গ প্রথম অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণের চব্বিশ পরগনা জেলার জয়নগর-১ সরকারি পরিষেবা প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
মঙ্গলবার জেলাটির বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস এবং পরিষেবা প্রদান শেষে সরকারি প্রকল্পের অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কিছু টিভি চ্যানেল আছে সারাদিন দেখায় ওই রাস্তা খারাপ, জল নেই। আমি বলি তোমাদের অনেক টাকা আছে। যেটা কেন্দ্র দিচ্ছে না তোমরা দিয়ে দাও। আমরা সব করে দেব। বিজেপি উল্টোপাল্টা ভিডিও ছাড়ে। এটা বিশ্বাস করবেন না।
তিনি বলেন, থানায় ডায়েরি করুন। তৃণমূলকে ভয় পায় বলে সবাইকে তৃণমূল হিসেবে সাজিয়ে গ্রেফতার করা হচ্ছে। ভাবছে লোকসভা নির্বাচনের আগে সবাইকে গ্রেফতার করলে এলাকা খালি হবে। আর বাজেপি ডুগডুগি বাজাবে। এত সোজা নয়, সে আশায় গুড়ে বালি। আমরা বিনা যুদ্ধে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়বো না। বিজেপি অনেক লোক এপাশে ওপাশে রুপি দিয়ে ঢুকিয়েছে। ১০০ দিনের কাজের রুপি ওরা বন্ধ করে দিলেও আমরা কিন্তু করছি। ৫ লাখ জব কার্ড হোল্ডার কাজ পাবে এই রাস্তা তৈরির জন্য। কেন্দ্র বন্ধ করেও দিলেও আমরা আমাদের রুপি থেকে ৪০ শতাংশ বেশি করেছি। ভাঙ্গর সাব ডিভিশন নতুন করে করাও হয়েছে বলে জানান তিনি।
‘সন্ত্রাসবাদী সিপিএম ৩৪ বছর মানুষকে নিয়ে খেলেছে, তাদের সঙ্গে আপোষ করব না’ উল্লেখ করে মূখ্যমন্ত্রী বলেন, ৩৪ বছরে সিপিএম মানুষের মুন্ডু নিয়ে খেলছে। ওদের সঙ্গে আপোষ করবো না। আজ টিভির পর্দায় বসে বড় বড় কথা বলে। ৩৪ বছর কি করেছিল? নাপিত, ধোপা, স্কুল, কলেজ সবকিছু বয়কট, কৃষি জমি দখল করেছে। এখন কত মানুষ ভাতা পাচ্ছে। আজ ২০ হাজার মানুষ সরকারি পরিষেবা পেলেন। ইঁদুর-চামচিকেরা যেভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে আপনার অর্জিত পয়সা লুঠ করে নিয়ে যাবে। সিজার লিস্ট ও পাবেন না। মুখ্যসচিবের কাছে জানতে চাইবো, যে জিনিসপত্র নিয়েছিল সিবিআই সেগুলো কি ফেরত পাওয়া গেছে।
এসময় কৃষ্ণনগরের সংসদ সদস্য মহুয়া মৈত্রকে সমর্থন করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী বলেন, আমাদের লোকের ওপর অনেক অত্যাচার চলেছে। ইন্ডিয়া চলছে একটা এজেন্সি দিয়ে। বিলকিস বানু মামলায় অভিযুক্তদের ছেড়ে দেওয়া হলো। সেখানে আমাদের সংসদ সদস্য মহুয়া মৈত্র ছিলেন, সেও পার্টি ছিল। এটা কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের জয়। কেউ কেউ বলছে আমি গুন্ডাদের নেতা। সারাজীবন করে এলাম মানুষের কাজ। আমি নেতা নই কর্মী। মানুষের পাহারাদার। কোনো মানুষ বিপদে পড়লে আমরা ছুটে যাই।
এরপর মমতা সংখ্যালঘু অঞ্চল মেটিয়াবুরুজের উন্নয়নের কথা বলতে গিয়ে বলেন, সংখ্যালঘুদের জন্য মেটিয়াবুরুজে বড় টেক্সটাইল হাব তৈরি করেছি। তারা দর্জির কাজ ভালো করে। পড়াশুনায় উন্নত হচ্ছে। আমার সেল্ফের গ্রুপের মেয়েরা আছে। সবথেকে বেশি সেল্ফ হেল্প গ্রুপ পশ্চিমবঙ্গে আছে। দেশের মধ্যে সংখ্যালঘু উন্নয়নে এই রাজ্যই প্রথম। এখানে কবরস্থান, তীর্থস্থান শ্মশান সব উন্নত হচ্ছে।
সুন্দরবন অঞ্চলের মানুষদের উন্নয়নের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সুন্দরবনের মধুও জিআই ট্র্যাক পেয়েছে। এখানকার প্রোডাক্টের নাম দিয়েছিলাম সুন্দরিনী। জেলার মুকুটের দুটি স্বর্ণপালক পেল। এই জেলাকে ৭০০ কোটি রুপির প্রকল্প দিয়ে যাচ্ছি।