ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের সনগাঁও গ্রামে অবস্থিত মোঘল আমলের স্থাপেত্যের অন্যতম নিদর্শন সনগাঁও তিন গম্বুজ মসজিদ। মসজিদটি কোন আমলে কিভাবে তৈরি হয়েছে বা কারা তৈরি করেছে তার নিদিষ্ট বর্ণনা কারো জানা নেই।
তবে প্রবীণরা বলছে বংশপরম্পরায় তারা জেনেছেন আজ থেকে ৬০০ বছর আগে মোঘল সম্রাট শাহ আলমের সময়ে মুসল্লিদের ধর্মপ্রচার ও নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদটি নির্মিত হয়।
জানা গেছে, মসজিদটি নির্মাণের পর সুধিবাদ নামে এক পীর ধর্মচর্চা ও প্রচারের জন্য সনগাঁও এলাকায় আসেন। সেখানে তিনি নামাজ আদায় ও ধর্মপ্রচার সহ নানান কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। পরে তাঁর মৃত্যু হলে মসজিদের পাশেই তাকে সমাধিস্থ করা হয়। তবে তিনি কোন দেশ থেকে এসেছিলেন তা জানাযায়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, পোড়ামাটির ফলকে বিভিন্ন নকশার মসজিদের তিনটি গম্বুজ ও তিনটি দরজা রয়েছে। তবে বর্তমানে সেগুলো নড়বরে। মসজিদের দক্ষিণ পাশে রয়েছে একটি পাকা কূপ। কূপের গায়ে পোড়া মাটির অস্পষ্ট বাংলা লিপি খোদাই করা থাকলেও লেখাগুলো মিশে যাওয়ায় তা পড়া সম্ভব হয়নি। মসজিদটিতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের পাশাপাশি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পাঠদান কার্যক্রমও অব্যাহত রয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহায়তায় মসজিদটি পুঃনির্মাণের মাধ্যমে সংরক্ষণ করা যেতে পারে। মসজিদটি প্রচীন হলেও এখনও সুরক্ষিত এবং মসজিদটিতে নিয়মিত নামাজ আদায় হয়।
মসজিদের মুয়াজ্জিনের দায়িত্বে থাকা ইয়াকুব আলী জানায়, মসজিদে একটি কাতার থাকার কারণে অনেক মুসল্লির নামাজ আদায়ে সমস্যা হচ্ছিলো। এ জন্য বারান্দায় টিনের ছাউনি দিয়ে কাতার বাড়ানো হয়েছে। তবে পুরোনো মসজিদটির কাতার ও অন্যান্য ব্যবস্থা আগের মতোই রাখা হয়েছে। কিন্তু গম্বুজগুলোর ওজন বেশি হওয়ার কারণে ধীরে ধীরে মাটির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে মসজিদটি এবং পোড়ামাটির ফলকে বিভিন্ন নকশার যেসব প্রতিকৃতি ছিলো বর্তমানে সেগুলো মিশে যাচ্ছে।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিপুল কুমার জানান, প্রাচীন নিদর্শন ও প্রত্মসম্পদগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সনগাঁও তিন গম্বুজ মসজিদটিও প্রকৌশলী দিয়ে পরিক্ষা নিরীক্ষা করে রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে।
আজকের দর্পণ/ মো: রেদওয়ানুল হক মিলন/ঠাকুরগাঁও