আজঃ রবিবার ০৫ মে ২০২৪
শিরোনাম

শ্রীলঙ্কার সংকট নিয়ে মুখ খুললেন সাঙ্গাকারা

প্রকাশিত:সোমবার ০৪ এপ্রিল ২০২২ | হালনাগাদ:সোমবার ০৪ এপ্রিল ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

নিজের দেশ আছে বেশ সংকটে। দেশজুড়ে গ্যাস ও তেলের অভাব প্রকট আকার ধারণ করেছে। বিদ্যুৎ থাকছে না দিনের বেশির ভাগ সময়। মূলত দেশটির বৈদেশিক রিজার্ভ কমে যাওয়ায় এমন সংকটে পড়েছে তারা। দেশের এই সংকটের সময় চুপ থাকেননি ক্রিকেট কিংবদন্তি কুমার সাঙ্গাকারাও।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি লিখেছে, শ্রীলঙ্কান হিসেবে আমরা সবাই কঠিন এক সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, এখানে গোপন করার মতো কিছু নেই। ইতিহাসের যেকোনো সময়ের চেয়ে এটি বেশি পীড়াদায়ক ও কঠিন। শ্রীলঙ্কার মানুষ সীমাহীন কষ্ট ভোগ করছে। আমি বিশ্বাস করি এই অস্বস্তিকর পরিস্থিতির যথাযথ সমাধান প্রদান করা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। শ্রীলঙ্কার জনগণ বর্তমান দুর্যোগ পরিস্থিতির সমাধান চাইছে।

শ্রীলঙ্কার সাবেক অধিনায়ক বলেন, সংকীর্ণ রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য যারা জনগণকে কষ্ট দিচ্ছে এবং বিরক্ত করছে তাদের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। শাসকদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ধর্ম বা বর্ণবাদ থেকে দূরে থাকা উচিত।

সাঙ্গাকারা আরও লিখেছেন, আমি জোর দিয়ে বলতে চাই যে প্রতিটি সরকারের প্রথম এবং প্রধান দায়িত্ব হলো তাদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য সর্বোত্তম কাজ করা। জনসাধারণকে সাধারণ শত্রু হিসাবে বিবেচনা না করে নিরাপত্তা ও বাঁচার অধিকার নিশ্চিত করা। শ্রীলঙ্কাকে রক্ষা করা আমাদের সকলের কর্তব্য।


আরও খবর



উপজেলা নির্বাচন

কেন্দ্রে থাকবে সর্বোচ্চ পুলিশ-আনসার, প্রতি ইউনিয়নে ম্যাজিস্ট্রেট

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বোচ্চ সংখ্যক সশস্ত্র সদস্য মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোস্তাফিজুর রহমান।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।

সভা শেষে সিনিয়র সচিব মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বোচ্চ সংখ্যক সশস্ত্র সদস্য মোতায়েন করা হবে। ভোটকেন্দ্রগুলোতে ১৭ থেকে ১৮ জন সদস্য থাকবে। এর আগে কখনো এত বেশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ভোটকেন্দ্রে ছিল না।

তিনি জানান, প্রতিটি বুথ ব্যবস্থাপনার জন্য সর্বনিম্ন ১০ জন আনসার সদস্য থাকবে ও ৬টির বেশি বুথ আছে, এমন জায়গাগুলোতে একজন করে অতিরিক্ত আনসার থাকবে। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে অস্ত্রসহ চার পুলিশ সদস্য থাকবে। আনসার থাকবে তিনজন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মোট ১৭ থেকে ১৮ জন সদস্য থাকবে।

সচিব বলেন, ভোটের দিন ব্যালট পেপার পৌঁছানো হবে। এটা পৌঁছানোর কাজে নিয়োজিত থাকবে মোবাইল ফোর্স, স্ট্রাইকিং ফোর্স। ব্যালট পেপার সেন্টারে পৌঁছানোর পর তাদের এলাকাভিত্তিক যে দায়িত্ব বণ্টন করা হবে, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ সুপার ও রিটার্নিং অফিসার যেটা বলবেন, সেভাবে তারা (আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য) দায়িত্ব পালন করবে।

স্বরাষ্ট্রসচিব বলেন, প্রতিটি ইউনিয়ন একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে। প্রতিটি উপজেলায়ও একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। ভোটের আগের দিন ও পরের দিন পর্যন্ত তারা দায়িত্ব পালন করবেন। গড়ে ৫টি সেন্টারের জন্য স্ট্রাইকিং ফোর্স ও মোবাইল ফোর্স থাকবে। আনসার, পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাব ও কোস্ট গার্ডের সমন্বয়ে এই মোবাইল ফোর্স গঠন করা হবে। আর উপকূলীয় এলাকাগুলোতে বিজিবির বদলে কোস্টগার্ড বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। পার্বত্য এলাকার কিছু দুর্গম সেন্টারে হেলিকপ্টারে পোলিং কর্মকর্তা ও ভোটের উপকরণ পৌঁছানো হবে।


আরও খবর



পাকিস্তানে ভারী বর্ষণ ও বজ্রপাতে নিহত ৩৯

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে কয়েক দিন ধরে অস্বাভাবিক ভারী বর্ষণ ও বজ্রপাতে অন্তত ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের অনেকেই মাঠে গম চাষের সময় বজ্রাহত হয়েছিলেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে বৃষ্টির পানিতে ডুবে থাকা ফসলের মাঠ দেখা যায়। আকস্মিক বন্যার কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও পরিবহন ব্যবস্থায়ও বিঘ্ন দেখা দিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পাকিস্তানে চরম আবহাওয়া বিপর্যয় বেড়ে চলেছে।

২০২২ সালে আকস্মিক বন্যায় দেশটির বেশ কয়েকটি এলাকা সম্পূর্ণ পানিতে ডুবে যায়। এতে ১ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয় এবং আহত হয় আরও কয়েক হাজার। ওই সময় বন্যার কারণে কয়েক লাখ মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে এবং কয়েক মাস ধরে সুপেয় পানির অভাবে ভুগতে থাকে।

খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তানসহ ২০২২ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কিছু এলাকা সাম্প্রতিক ঝড়ের কারণে আবারও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আগামী কয়েক দিনে বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়ার পূর্বাভাসের সঙ্গে ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যার হুঁশিয়ারি দিয়েছে পাকিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।

পাকিস্তানের সবচেয়ে জনাকীর্ণ প্রদেশ পাঞ্জাবে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি নিহতের ঘটনা ঘটেছে। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদন অনুসারে, গত শুক্রবার থেকে রোববারের মধ্যে প্রদেশটিতে বজ্রপাতে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির সর্ব পশ্চিমের প্রদেশ বেলুচিস্তানে অন্তত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রদেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল সোমবার ও আজ মঙ্গলবার বেলুচিস্তানের স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।

বেলুচ উপকূলীয় শহর পাসনির বেশির ভাগ এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।

শহরের মিউনিসিপ্যাল কমিটির চেয়ারম্যান নূর আহমেদ কালমাতি পাকিস্তানের সংবাদপত্র ডনকে বলেন, বসতি এলাকায় এবং প্রধান বাণিজ্যিক অঞ্চলে আকস্মিক বন্যা দেখা দেওয়ায় পাসনিকে এই মুহূর্তে একটি বড় হ্রদের মতো দেখাচ্ছে।

পার্শ্ববর্তী দেশ আফগানিস্তানেও ভারী বন্যার খবর পাওয়া গেছে। গত রোববার আফগান কর্তৃপক্ষ জানায়, বৃষ্টির কারণে অন্তত ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং শত শত বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, পাকিস্তানে ২০২২ সালের বন্যায় বৈশ্বিক উষ্ণায়নেরও ভূমিকা ছিল। জাতিসংঘের গ্লোবাল ক্লাইমেট রিস্ক ইনডেক্স অনুসারে, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য পঞ্চম সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে স্থান পেয়েছে পাকিস্তান।


আরও খবর



নয় জেলায় কালবৈশাখীর তাণ্ডব, নিহত ১৩

প্রকাশিত:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ১৫ মিনিটের কালবৈশাখী ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে পিরোজপুর পৌরসভার পালপাড়া ও সদর উপজেলার শারিকতলা ডুমরিতলাসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম। ঝড়ের তাণ্ডবে নলবুনিয়া গ্রামের খালে পড়ে মৃত কানাই লাল পালের ছেলে অনিল পাল (৮২) মারা গেছেন।

ঝড়ের সময় কানাই লাল গ্রামের একটি বাজারে ছিলেন। ঝড়ের গতি বাড়তে থাকায় এ সময় তিনি বাড়িতে রওনা দিলে প্রচণ্ড বাতাসে তিনি খালে পড়ে নিখোঁজ হন। ঝড় থামলে পরে স্থানীয়রা তাকে মৃত অবস্থায় খাল থেকে উদ্ধার করে। অপরদিকে, ঝড়ের সময় শারিকতলা ইউনিয়নের মরিচাল গ্রামে ঘরের ওপর গাছ চাপা পড়ে রুবী বেগম (২২) নামে এক নারী নিহত হন। এসময় তার শিশু কন্যা গুরুতর আহত হলে তাকে খুলনায় চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

ঝড়ে পিরোজপুর পৌরসভা ও সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় শত শত গাছ উপরে পড়ে ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কাঁচা ঘর-বাড়ির টিনের চালা উড়ে গেছে। বিভিন্ন এলাকায় বন্ধ হয়ে গেছে সড়ক যোগাযোগ। ঝড়ে গাছ উপড়ে পড়ে বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। বিদ্যুৎ বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস ও যুব রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা রাস্তায় কাজ করছে।

পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, হঠাৎ ঝড়ে গাছপালা উপড়ে পড়ে পিরোজপুরের সদর উপজেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সময় ২ জন নিহত হয়েছেন।

কালবৈশাখী ঝড়ে তছনছ হয়ে গেছে ভোলার লালমোহন উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বহু ঘর-বাড়ি। রোববার বেলা ১১টার দিকে লালমোহনে হঠাৎ করেই বইতে শুরু করে ঝড়। প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে চলে ঝড়ের তাণ্ডব। এতে ঘর চাপা পড়ে ও বজ্রপাতে দুইজন নিহত হয়েছেন।

জানা গেছে, ঝড়ের প্রভাবে উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ঘর চাপা পড়ে হারিছ আহমেদ (৭০) নামে একজন নিহত হয়েছেন। তিনি পার্শ্ববর্তী ফরাজগঞ্জ ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।

একই সময় বজ্রপাতে উপজেলার চরভূতা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চরলেঙুটিয়া গ্রামে মো. বাচ্চু নামে (৩৫) এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি ওই এলাকার কয়ছর আহমেদের ছেলে। এছাড়া ঝড়ে দুই শতাধিক ঘর-বাড়ির ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। ঝড়ের তাণ্ডবে ছিঁড়ে গেছে বিদ্যুতের তার।

লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ঝড়ে দুই জনের প্রাণহানিসহ এলাকায় বেশ কিছু ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।

অপরদিকে, বিচ্ছিন্ন মনপুরা উপজেলায় হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। এতে উপজেলার হাজিরহাট, উত্তর সাকুচিয়া ও দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকার তিন শতাধিকের ওপরে ঘর-বাড়ি সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের তিনটি গ্রাম ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে।

দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত আধা ঘণ্টাব্যাপী কালবৈশাখী ঝড়ের পাশাপাশি বৃষ্টির তাণ্ডব শুরু হলে এ ক্ষয়-ক্ষতি হয়। ঝড়ে বিধ্বস্ত ঘরের নিচে চাপা পড়ে তিনজন আহত হয়েছে। সবাইকে মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। তাদের সবার বাড়ি হাজিরহাট ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে পূর্ব সোনারচর গ্রামে।

এছাড়াও অনেকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ঘর বিধ্বস্ত হওয়ার পাশাপাশি উপজেলার মনোয়ারা বেগম মহিলা কলেজের টিনশেড ক্লাসরুমটি বিধ্বস্ত হয়। বিভিন্ন চরে থাকা কৃষকের ৩০টি গরু নদীতে পড়ে নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গেছে।

উপজেলার ২নং হাজিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানান, হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ে হাজিরহাট ইউনিয়নে দুই থেকে আড়াইশ ঘরের ওপরে সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত হয়। চর থেকে কৃষকের ৩০টি গরু নদীতে পড়ে হারিয়ে যায়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জহিরুল ইসলাম জানান, কালবৈশাখী ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। কোনো সাহায্য সহযোগিতা পেলে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে দেওয়া হবে।

পটুয়াখালীর বাউফলে কালবৈশাখী ঝড়ে রাতুল (১৪) নামের এক কিশোর ও সুফিয়া বেগম (৮৫) নামের এক বৃদ্ধা নিহত হয়েছেন। রাতুলের বাড়ি উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের রায় তাঁতের কাঠি গ্রামে। বাবার নাম জহির সিকদার। তাকে রাস্তায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে বজ্রপাতে তিনি মারা গেছেন। আর সুফিয়া বেগমের বাড়ি উপজেলার দাশপাড়া ইউনিয়নের চরআলগী গ্রামে। তার স্বামীর নাম মৃত আহম্মেদ প্যাদা। ঘরের উপর গাছ চাপা পরে তিনি নিহত হন। এছাড়াও ঝড়ে উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

রবিবার সকাল সাড়ে ১০টা থকে ১১টা ৫ মিনিট পর্যন্ত ৩৫ মিনিট স্থায়ী এ ঝড়ে কাঁচা বাড়ি-ঘর, গাছ গাছালি উপরে গেছে। বাউফলের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় শতাধিক আধাপাকা বাড়ি বিধ্বস্ত ও কয়েক হাজার গাছগাছালি উপরে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। এ সময় ব্যাপক শিলাবৃষ্টি ও বিরামহীনভাবে বজ্রপাত হয়েছে। বাউফল পৌর শহরের থানার সামনে ছালেহিয়া ফাজিল মাদরাসার একটি ভবনের টিনের চালা উপড়ে রাস্তায় পরে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

গোসিংগা গ্রামের আফসেরের গ্রেজ এলাকায় ঘরের উপর গাছ ভেঙে পড়ে মা সাবিহা (৩০), তার মেয়ে ইভা (১২) ও দুই বছর বয়সি শিশু মারাত্মক আহত হয়েছে। ঝড়ে বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেছে ও বেশ কয়েকটি খুঁটি ভেঙে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। শিলাবৃষ্টিতে তরমুজসহ রবি ফসল ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বশির গাজী বলেন, ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য কৃষি বিভাগ ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রবিবার সকাল ৯টার দিকে বাগেরহাটে আকস্মিক ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলার বিভিন্নস্থানে কয়েকশ কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রচুর গাছপালা উপড়ে ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। আকস্মিক ঝড় চলাকালে জেলার কচুয়া উপজেলার চর সোনাকুড় গ্রামে বজ্রপাতে আরিফুল ইসলাম লিকচান (৩৫) নামে মাদরাসার দপ্তরি নিহত হয়েছেন।

এছাড়া জেলা কেন্দ্রীয় বাস-টার্মিনালে একটি সাইনবোর্ডের টাওয়ার ভেঙে দাঁড়িয়ে থাকা একটি যাত্রীবাহীবাসেরওপর পড়ে এক বাস শ্রমিকসহ বিভিন্ন স্থানে ১৫ জন আহত হয়েছেন।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খালিদ হোসেন জানান, আকস্মিক ঝড়ে বাগেরহাটের দেড় শতাধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক এলাকায় ঘরবাড়ি ও গাছপালা উপড়ে পড়েছে।

জেলার রাজস্থলী উপজেলায় বজ্রপাতে সাজেউ খিয়াং (৪৮) নামে একজন নিহত গেছেন। রবিবার (৭ এপ্রিল) বিকেলে এ বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে।

সাজেউ খিয়াং রাজস্থলী উপজেলার ১নং ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের ধনুছড়ি পাড়া গ্রামের  অংসাউ খিয়াং এর ছেলে। বিকেলে ধনুছড়ি পাড়া গ্রামের নিজের বাড়ির সামনে কাজ করছিলেন সাজেউ খিয়াং। এ সময় বজ্রপাতসহ বৃষ্টি শুরু হলে তিনি নিজের ঘরে অবস্থান নেন। তখন ঘরে বজ্রপাত হলে মারা যান তিনি।

রাজস্থলী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন বজ্রপাতে যুবকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

ঝালকাঠি জেলার দুই উপজেলায় ঝড়ের সময় মাঠে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে দুই নারী ও এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। বেলা ১১টার দিকে ঝালকাঠি সদর উপজেলার শেখেরহাট, পোনাবালিয়া ইউনিয়ন এবং কাঁঠালিয়া উপজেলার আওরাবুনিয়া ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফরুজুল হক টুটুল।

মৃতরা হলেন, কাঁঠালিয়া উপজেলার আওরাবুনিয়া ইউনিয়নের মুন্সিরাবাদ গাজীবাড়ি এলাকার মৃত আলম গাজীর স্ত্রী গৃহিনী হেলেনা বেগম, সদর উপজেলার শেখেরহাট এলাকার ফারুক হোসেনের স্ত্রী গৃহিনী মিনারা বেগম ও পোনাবালিয়া এলাকার মো. বাচ্চুর মেয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী মাহিয়া আক্তার ঈশান। ঝড়ের আধা ঘণ্টাব্যাপী তাণ্ডবে ঝালকাঠির চার উপজেলায় শতাধিক বসতঘর, দোকানপাট, বিদ্যুতের খুটি ভেঙে পড়ে। এ সময় গাছপালারও ব্যাপক ক্ষতি হয়।

ঝালকাঠি সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, বজ্রপাতে শেখেরহাট এলাকায় মিনারা বেগম নামে এক নারী এবং পোনাবালিয়া এলাকায় মাহিয়া আক্তার ঈশান নামে এক কিশোরী নিহত হয়েছে।

কাঁঠালিয়া থানা পুলিশের ওসি নাসির উদ্দিন সরকার বলেন, বজ্রপাতে কাঁঠালিয়া উপজেলার মুন্সিরাবাদ গাজীবাড়ি এলাকায় গরু আনতে গিয়ে হেলেনা বেগম নামে আরেক নারী নিহত হয়েছেন।

খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলায় বজ্রপাতে মো. ওবায়দুল্লাহ গাজী (২৯) নামের এক মৎস্যচাষি নিহত হয়েছেন। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ডুমুরিয়া উপজেলার গুটুদিয়ার কোমলপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ওবায়দুল্লাহ গাজী ওই গ্রামের মো. দেলোয়ার হোসেন গাজীর ছেলে। ডুমুরিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকান্ত কুমার সাহা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নিহতের ফুফাতো ভাই আবু সুফিয়ান বলেন, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ওবায়দুল্লাহ পাশের কানাইডাঙ্গা বিলে গরুর জন্য ঘাস কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান।

নেত্রকোণা জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার হাওরে বজ্রপাতে শহীদ মিয়া (৫২) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। বেলা পৌনে ১২টার দিকে উপজেলার রাজঘাট হাওরে বজ্রপাতে এ ঘটনা ঘটে।

শহীদ মিয়া উপজেলার মেন্দীপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের কফিল উদ্দিনের ছেলে। নিহতের ভাই স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম জানান, সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে গ্রামের সামনে রাজঘাট হাওরে মরিচ ক্ষেতের পরিচর্যা করছিলেন তার ভাই। দুপুরের দিকে হঠাৎ বজ্রসহ বৃষ্টি শুরু হলে এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলায় ধান ক্ষেতে কাজ করতে গিয়ে বজ্রপাতে আব্দুল মালেক পাটোয়ারী (৬০) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। সকালে উপজেলার বড়পোদাউলিয়া গ্রামের বিলে এ ঘটনা ঘটেছে। ঝিকরগাছার শংকরপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য পোদাউলিয়া গ্রামের জাহান আলি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত আব্দুল মালেক উপজেলার বড়পোদাউলিয়া গ্রামের মৃত ওমর আলি পাটোয়ারীর ছেলে।

নিউজ ট্যাগ: কালবৈশাখী ঝড়

আরও খবর



হিটস্ট্রোকে মারা যাচ্ছে খামারের শত শত মুরগি

প্রকাশিত:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | হালনাগাদ:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

বছর ১৭ আগে মুরগির খামার শুরুর পর ভালোই চলছিল বরিশালের আমানতগঞ্জের সেলিনা হোসেনের। কিন্তু ব্যবসায় বিপত্তি শুরু হয় করোনা মহামারীকালে। এরপর কিছুটা ঘুরে দাঁড়ান। সম্প্রতি বয়ে চলা তাপপ্রবাহ ও তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে হিটস্ট্রোকে মারা গেছে তার প্রায় ৭০০ মুরগি। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন স্বামীহারা এ খামারি।

সেলিনা হোসেন বলেন, পরিবারের একমাত্র উপার্জনের উৎস আমার এ মুরগির খামার। করোনার সময় একবার বড় লোকসান হয়। অনেক মুরগি মারা গিয়েছিল তখন। অনেক কষ্টে আবার ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছি। ৮০০ ব্রয়লার মুরগি তুলেছিলাম। কিন্তু এবার সব শেষ। বিদ্যুৎ যায় আসে। যে গরম পড়ছে তাতে ফ্যান চালিয়ে রাখতে হয়। টিনে পানি দিতে হয়। কিন্তু লোডশেডিংয়ের কারণে আরো বেশি স্ট্রোক বেড়েছে। ওষুধ খাইয়েছি, তবু মুরগিগুলোকে রক্ষা করা যায়নি। আবার মুরগি ওঠানোর ক্ষমতা আমার নেই।

সেলিনার মতো অন্য খামারিদের একই হাল। অতিরিক্ত গরম ও লোডশেডিংয়ের কারণে গ্রামাঞ্চলের প্রায় প্রতিটি খামারেই দেখা দিয়েছে মড়ক। প্রায় প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে শত শত মুরগি। অনেক খামারি লোকসান গুনে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন। এদিকে হিটস্ট্রোকে মুরগি মারা গেলেও প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে তাদের কাছে কেউ যাচ্ছে না বলে অভিযোগ খামারিদের।

খামারসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, করোনার পর থেকে পোলট্রি খাতে দুর্ভোগ যেন কাটছেই না। এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে পোলট্রিখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় খামার গুটিয়ে নেন বেসরকারি ও ব্যক্তিগত পর্যায়ের প্রায় ৪০ শতাংশ খামারি। এছাড়া খাদ্য ও মুরগির বাচ্চার অতিরিক্ত দামের পাশাপাশি এখন পোল্ট্রি খাতের অন্যতম নীরব ঘাতক হয়ে উঠছে জলবায়ু পরিবর্তন। গত কয়েক দিন দেশের বিভিন্ন স্থানে তীব্র তাপপ্রবাহে খামারগুলোয় ব্যাপক হারে ব্রয়লার মুরগি হিটস্ট্রোকে মারা যাচ্ছে। কমে যাচ্ছে ডিম উৎপাদনও। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য খামারিরা বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল থাকলেও তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে সেটিও ব্যাহত হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, পাঁচদিন ধরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের গণ্ডি ছাড়াচ্ছে, আবহাওয়ার পরিভাষায় যাকে বলা হয় তীব্র তাপপ্রবাহ। গতকালও চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া বাগেরহাট ও কুষ্টিয়ায়ও তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে। এ তাপপ্রবাহ আরো বেড়ে সামনে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। এতে ভবিষ্যৎ নিয়ে আরো বেশি শঙ্কায় রয়েছেন পোলট্রি খামারিরা।

বরিশালে গত কয়েক দিনে ৬১৭টি খামারে প্রায় পাঁচ হাজার ব্রয়লার মুরগি মারা গেছে বলে জানিয়েছেন জেলার পোলট্রি মুরগির খামার মালিকদের সংগঠনের নেতা কালাম শিকদার। তিনি জানান, জেলায় ১ হাজার ৬০৮টি মুরগির খামার রয়েছে। এর মধ্যে ব্রয়লার মুরগির ৬১৭টি, লেয়ার ৫৩৫টি ও সোনালি মুরগির ৪৫৬টি। মাত্রাতিরিক্ত গরমের কারণে পোলট্রি খামারে দেখা দিয়েছে হিটস্ট্রোক। তাপপ্রবাহ থেকে মুরগি বাঁচাতে অনেক খামারে বৈদ্যুতিক পাখা সংযুক্ত করলেও ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে সেটিও কাজে আসছে না। ফলে পোলট্রি খামারে বড় ধরনের লোকসানের আশঙ্কা করছেন খামারিরা।

তীব্র গরমে খামারে মড়ক লাগলেও কোনো তথ্য দিতে পারেনি জেলার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. আবু সুফিয়ান বলেন, গরমের সময় খামারে বারবার পানি স্প্রে ও টিনের চালে ছালার চট ভিজিয়ে রাখার পরামর্শসহ একাধিক গাইডলাইন দেয়া হয়েছে বিভাগের প্রত্যেক মাঠ কর্মকর্তাকে। তারা খামারিদের এ বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন। তবে গরমে মুরগির মৃত্যুর বিষয়টি আমাদের অবহিত করা হয়নি এখনো।

চট্টগ্রামের খামারিরা জানিয়েছেন, ওষুধ ও পানি স্প্রের মাধ্যমে হিটস্ট্রোক নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হলেও প্রতিনিয়ত ব্রয়লার মুরগি মারা যাচ্ছে। আবার লেয়ার মুরগির ডিম উৎপাদন কমেছে প্রায় ১৫ শতাংশ।

বৃহত্তর চট্টগ্রাম পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লিটনের খামারে দেড় কেজির বেশি মুরগি ছিল প্রায় চার হাজার। কিন্তু গত দুদিনের গরমে প্রায় এক হাজার মুরগি মারা গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ছোট মুরগি মারা যায় কম। কিন্তু এক কেজি ওজনের বেশি মুরগি প্রচুর মারা যাচ্ছে। আমার বড় মুরগির খামারে গত দুদিনে ২৫ শতাংশই মারা গেছে। আশপাশের সবার ক্ষেত্রেই এমন হচ্ছে। যত ভালো খামার ব্যবস্থাপনাই থাকুক এ গরমে মুরগি মারা যাবেই। তবে এ বছর মৃত্যুটা বেশি।

একই কথা জানান রাউজান উপজেলার অর্ণব পোলট্রি ফার্মের স্বাত্বাধিকারী দেবাশীষ ভট্টাচার্য্য। তিনি বলেন, গত কয়েক দিনের তীব্র তাপপ্রবাহে আমার খামারের বেশকিছু মুরগি মারা গেছে। আরো কিছু মুরগির অবস্থা সংকটাপন্ন। লেয়ার মুরগির ডিম উৎপাদন কমে গেছে। স্যালইন, ভিটামিন সি খাওয়ানোর পাশাপাশি ঠাণ্ডা পানি দিয়ে স্প্রে করে খামারের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। অন্যদিকে গরমের কারণে ভূগর্ভস্থ পানিও তোলা যাচ্ছে না। এ কারণে পানিরও সংকট আছে। এভাবে গরম পড়তে থাকলে খামার রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হবে না। কম দামে তখন বিক্রি করে দিতে হতে পারে।

চট্টগ্রাম প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় প্রায় চার হাজার ব্রয়লার ও পাঁচ শতাধিক লেয়ার মুরগির খামার আছে। চট্টগ্রাম আঞ্চলিক মুরগি খামারের উপপরিচালক মো. আলমগীর বলেন, অনেক বেসরকারি পর্যায়ের খামারে গরমের কারণে মুরগি মারা যাওয়ার খবর শুনেছি। তবে সরকারি খামারগুলোয় এখন কোনো মুরগি মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। খামারগুলোয় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে আমরা বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিচ্ছি।

যশোরে গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা দেশের সর্বোচ্চ। আগের দিন ছিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত কয়েক দিনের তীব্র গরমে ১০ হাজারের মতো মুরগি মারা গেছে। শহরের নাজির শংকরপুর এলাকার খামারি সানজিদা বেগম বলেন, প্রচণ্ড গরমে মুরগি মারা যাচ্ছে। আমার খামারে ৭০০ মুরগি ছিল। এখন আছে ২৫০টি।

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, যশোরে মুরগি খামার রয়েছে ১ হাজার ৫৩৪টি। সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তপু কুমার জানান, তার অধীনে ২৪৯টি ব্রয়লার ও ২৫টি লেয়ার মুরগির খামার রয়েছে। কয়েক দিন ধরে যশোরে প্রচণ্ড গরম পড়েছে। এতে মুরগির হিটস্ট্রোক বেড়ে গেছে। খাওয়া কমে গেছে। তবে কী পরিমাণ মুরগি মারা গেছে তার হিসাব নেই।

তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকায় রংপুরের খামারিরাও দুশ্চিন্তায় আছেন। লোডশেডিং তাদের আতঙ্ক আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। জেলায় লেয়ার মুরগির খামার আছে দেড় শতাধিক এবং ব্রয়লার চার শতাধিক।

রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. মোস্তাফিজার রহমান বলেন, গরমে সাধারণত ৩৪ ডিগ্রি তাপমাত্রাকে সহনীয় ধরা হয়। এর ওপরে গেলে অস্বাভাবিক তাপমাত্রা বলা হয়, যা সব প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর। হিটস্ট্রোকসহ নানা অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

এ মুহূর্তে চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর তাতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ আরো বেড়েছে খামারিদের। এ গরম চলতে থাকলে মুরগির মৃত্যু আরো যে কত বাড়বে তা নিয়েই আতঙ্কিত তারা।

আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা বেশি ছিল। কিছু স্থানে হালকা বৃষ্টি হলেও তাপমাত্রা কমেনি। আগামী দুদিন তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে। খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোয় বেশি গরম পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বব্যাপী আবহাওয়া বিরূপ আচরণ করছে। এর সঙ্গে নগরায়ন ও গাছপালা কেটে ফেলার কারণে খারাপ হচ্ছে বাংলাদেশের আবহাওয়া।

পোলট্রি বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মুরগির বাচ্চার তাপমাত্রা সহ্যক্ষমতা বেশি থাকে। তবে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে তা কমে আসে। এ কারণে বড় আকারের মুরগি হিটস্ট্রোকে বেশি মারা যায়।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পোলট্রি সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শওকত আলী বলেন, অতিরিক্ত গরমে তুলনামূলক ব্রয়লার মুরগি বেশি মারা যায়। কারণ তাদের সহ্যক্ষমতা কম। গরমে ব্রয়লার মুরগি খাবার কমিয়ে দেয়। সে কারণে তার খাবারে এনার্জির পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে। টিনের চালে পানি বা ভেজা বস্তা দিতে হবে যেন শেড ঠাণ্ডা থাকে।


আরও খবর



মুন্সিগঞ্জে হিট স্ট্রোকে দুজনের মৃত্যু

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
সাকিব আহম্মেদ, মুন্সিগঞ্জ

Image

মুন্সীগঞ্জে হিট স্ট্রোকে দুই জন মারা গেছেন। হিট স্ট্রোকের উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও চার জন। হিট স্ট্রোকে যে দুজন মারা গেছেন তারা হলেন- ওমর আলী (৬৫) ও আব্দুল বাতেন মাঝি (৬০)। তাদের দুই জনের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের সদর উপজেলায়।

মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ওমর আলীকে আজ মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে এবং আব্দুল বাতেন মাঝিকে সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতালে আনা হয়।

ওমর আলী চরকিশোরগঞ্জের বাবু হাজারীর ছেলে এবং আব্দুল বাতেন মাঝি মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার মানিকপুরের ওলিউল্লা মাস্টারের ছেলে।

মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবু হেনা মোহাম্মদ জামাল বলেন, সকালে ওমর আলী মাঠে কাজ করার সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন। আর আব্দুল বাতেন মাঝি বাজার এলাকায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের দুজনকেই মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাদের মধ্যে হিট স্ট্রোকের উপসর্গ ছিল।

তিনি আরও বলেন, আরও চার জনকে হিট স্ট্রোকের উপসর্গ নিয়ে সদর হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে তিন জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং একজনকে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরত পাঠানো হয়েছে।'


আরও খবর