শরীয়তপুর থেকে সাইফ রুদাদ
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার দড়ি কান্দি দারুল উলুম মহিলা মাদ্রাসায় ৮ বছর বয়সী দ্বিতীয় শ্রেণীর এক ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত বুধবার(০৭ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে মাদ্রাসাটির হিসাবরক্ষক আব্দুল হান্নান(৫৫) এর কক্ষে। জাজিরা থানায় বাদী হয়ে ছাত্রীর বাবা আমিনুল মাদবর(৪০) মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামীরা হলেন, প্রধান অভিযুক্ত মাদ্রাসার হিসাব রক্ষক নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার তেলিগাতি গ্রামের মৃত মৌলভী মাঈন উদ্দিনের পুত্র আব্দুল হান্নান, সহায়তাকারী হিসেবে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি জিয়াউর রহমান(৪৫) নাসির দড়ি(৫০), আরিফ দড়ি(৩২) সাং দড়ি কান্দি, শরীয়তপুর।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, ঐ মাদ্রাসার এক শিক্ষক ৪ জন ছাত্রীকে খাবার নিয়ে আব্দুল হান্নানের কক্ষে পাঠায়, এসময় হান্নান দ্বিতীয় শ্রেণীর ঐ ছাত্রীকে রেখে বাকি ছাত্রীদের রুম থেকে বের করে দিয়ে ধর্ষণ চেষ্টার শিকার ঐ ছাত্রীর মুখ চেপে ধরে কক্ষের ভেতরে থাকা খাটে নিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থান স্পর্শ করে ধর্ষণ চেষ্টা করে। ছাত্রী চিৎকার করলে তাকে ছেড়ে দিয়ে হান্নান হুমকি দেয় যদি কাউকে বলে তাহলে মারধর করবে। পরে ধর্ষণ চেষ্টার শিকার ঐ শিক্ষার্থী তার বান্ধবী মারিয়াকে বিষয়টি জানালে মারিয়া তার মাকে জানায়। মারিয়ার মায়ের মাধ্যমে ধর্ষণ চেষ্টার শিকার শিক্ষাথীর মা বিষয়টি জানতে পারে।
ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি জিয়াউর, নাসির দড়ি, আরিফ দড়ি অভিযুক্ত হান্নানকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে। এ নিয়ে বর্তমানে এলাকার অবস্থা উত্তপ্ত।
ধর্ষণের শিকার শিক্ষার্থীকে মেডিকেল চেকআপ করার জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মেডিকেল চেকআপের বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. রোকসনা বিনতে আকবর জানান, শনিবার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট হাতে আসবে, রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত কিছুই বলতে পারছি না।
নির্যাতনের শিকার ঐ শিক্ষার্থী জানান, আমি হুজুরকে খাবার দিতে গেলে সে দড়জা আটকিয়ে আমার মুখ চেপে ধরে বিছানায় নিয়ে আমার প্যান্ট খুলে কষ্ট দেয়। তারপর হুজুর বলে এ কথা কাউকে বললে মেরে কাইট্টা গাঙে ভাসায়া দিমু।
মামলার বাদী আমিনুল মাদবর বলেন, আমার মাইয়ার সাথে যে এ জঘন্য কাজ করছে তার ফাঁসি চাই।
মামলার ৪ নং আসামী আরিফ দড়ি আজকের দর্পণকে বলেন, ঘটনার পর হান্নানকে একটি রুমে আটকে রেখে পুলিশকে জানানোর চেষ্টা করি। এসময় রুমের জানালা দিয়ে হান্নান পালিয়ে যায়। আমরা হান্নানকে পালাতে সাহায্য করিনি।
এ বিষয়ে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম সরকার মুঠোফোনে বলেন, ঐ মাদ্রাসার ছাত্রীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বৃহস্পতিবার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মামলার চারজন আসামীকে গ্রেফতারের অভিযান চলছে।