শ্রেণিকক্ষে সহপাঠীর সঙ্গে কথা বলার অপরাধে বিদ্যালয়ের সবচেয়ে মেধাবী ছাত্রটিকে টিসি দিয়ে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনা নিয়ে গোটা এলাকায় বইছে আলোচনা-সমলোচনার ঝড়। ওই শিক্ষার্থীর সহপাঠীরা তাকে আবার বিদ্যালয়ের ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার বান্ধাবাড়ি জেবিপি উচ্চ বিদ্যালয়ে ঘটেছে এ ঘটনা।
জানা গেছে, বুধবার নবম শ্রেণির আইসিটি ক্লাসে নির্ধারিত শিক্ষক অনুপস্থিত থাকার কারণে বিদ্যালয়ের সহগ্রন্থাগারিক জ্যোতির্ময় অধিকারী ক্লাস নিতে যান। এ সময় তিনি ক্লাসে ভুল তথ্য উপস্থাপন করলে শিক্ষার্থীরা কানাঘুষা শুরু করে। এতে জ্যোতির্ময় অধিকারী রেগে গিয়ে শিক্ষার্থীদের মারধর করেন। পরে নবম শ্রেণির ফার্স্টবয় শেখ মোহেবুল্লাহ মাহি সহগ্রন্থাগারিক জ্যোতির্ময় অধিকারীকে শান্ত করাতে গেলে তিনি মাহিকে মারধর করতে করতে ক্লাস থেকে বের করে দেন। এ ঘটনার পরে বুধবার শেখ মোহেবুল্লাহ মাহিকে টিসি দিয়ে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়টির সহগ্রন্থাগারিক জ্যোতির্ময় অধিকারীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি কোনো প্রকার মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক শেখ আব্দুর রশিদ বলেন, শেখ মোহেবুল্লাহ মাহির মা-বাবা আমাদের কাছে টিসি চাওয়ার কারণে মাহিকে টিসি দেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যালয়টির এক শিক্ষক বলেন, শেখ মোহেবুল্লাহ মাহি খুবই মেধাবী ছাত্র। সে পঞ্চম এবং অষ্টম শ্রেণির পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছে। তার সঙ্গে যেটা করা হয়েছে তা কোনোভাবেই ঠিক হয়নি। এটা লঘু অপরাধে গুরুদণ্ডের শামিল।
নবম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের সহপাঠী শেখ মোহেবুল্লাহ মাহির সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। আমরা চাই তাকে আবার আমাদের মাঝে ফিরিয়ে আনা হোক।
শেখ মোহেবুল্লাহ মাহি বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের সহগ্রন্থাগারিক জ্যোতির্ময় অধিকারী সেই দিন আমাদের সঙ্গে যে ব্যবহার করেছেন এটা করা তার ঠিক হয়নি। স্যারকে বিষয়টি আমি বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু সে না বুঝে উল্টো আমাকে মারধর করেছেন। পরে শিক্ষকরা মিলে আমাকে টিসি দিয়ে বিদ্যালয় থেকে বের করে দিয়েছেন। শেখ মোহেবুল্লাহ মাহির মা শিরিন আক্তার বলেন, আমরা পরিবার থেকে মোহেবুল্লাহ মাহিকে টিসি দিতে বলা হয়নি। আমার ছেলেকে অন্যায়ভাবে টিসি দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাহবুবুর রহমান বলেন, রবিবার (৩ এপ্রিল) বিষয়টি আমি জেনেছি। মেধাবী শেখ মোহেবুল্লাহ মাহির টিসি যাতে প্রত্যাহার করা হয় সে বিষয়ে আমি পদক্ষেপ গ্রহণ করব।