আজঃ সোমবার ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
শিরোনাম

সরকারি অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে: ড. ইউনূস

প্রকাশিত:বুধবার ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

সরকারি অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার নিদের্শনা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তেজগাঁওয়ে অবস্থিত প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সচিব সভায় এ নিদের্শনা দেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

সচিবদের প্রতি নির্দেশনা দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকারের সব পর্যায়ে সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নে মার্চিং অর্ডার প্রদান করতে হবে। সংস্কার কর্মসূচি প্রণয়নে প্রয়োজন অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা ও মতামত গ্রহণ করতে হবে। জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা বৈষম্যহীন মানবিক দেশ গড়ার যে প্রত্যয়, যে ভয়হীন চিত্ত আমাদের উপহার দিয়েছে, তার ওপর দাঁড়িয়ে বিবেক ও ন্যায়বোধে উজ্জীবিত হয়ে আমাদের স্ব স্ব ক্ষেত্রে সততা, নিষ্ঠা, জবাবদিহিতা নিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে। নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য গৎবাঁধা চিন্তাভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে, চিন্তার সংস্কার করে, সৃজনশীল উপায়ে জনস্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সরকারি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

দুর্নীতির মূলোৎপাটন করার নিদের্শ দিয়ে তিনি বলেন, সেবা সহজিকরণের মাধ্যমে জনগণের সর্বোচ্চ সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে। সরকারি অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি ক্রয়ে যথার্থ প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করতে হবে।

ড. ইউনূস বলেন, সৃষ্টিশীল, নাগরিকবান্ধব মানসিকতা নিয়ে প্রতিটি মন্ত্রণালয়/বিভাগ স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার কর্মসূচির কর্মপরিকল্পনা দাখিল করবে, যা নিয়মিত মূল্যায়ন/পরিবীক্ষণ করা হবে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সৃষ্ট নতুন বাংলাদেশ নিয়ে বিশ্বব্যাপী যে আগ্রহ, ইতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে, দেশের স্বার্থে তা সর্বোত্তম উপায়ে কাজে লাগাতে হবে।


আরও খবর



ইবির প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগ

প্রকাশিত:শনিবার ১৭ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১৭ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
রফিকুল ইসলাম, কুষ্টিয়া

Image

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ ও ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ পদত্যাগ করেছেন।

শনিবার (১৭ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর পদত্যাগ পত্র জমা দেন তারা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান। পত্রে তারা উভয়েই ব্যক্তিগত কারণ উল্লেখ করেছেন বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, ২০২২ সালের ২৩ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত দ্বিতীয় মেয়াদে ড. আজাদকে প্রক্টর পদে পুনঃনিয়োগ দেন তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম। পরে ২৯ জানুয়ারি থেকে পরবর্তী আরো এক বছরের জন্য তাকে নিয়োগ দেন উপাচার্য।

এদিকে এ বছরের ৩০ মার্চ ১ বছরের জন্য অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহকে ছাত্র উপদেষ্টা পদে নিয়োগ দেন উপাচার্য।


আরও খবর
রাবির নতুন উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব

বৃহস্পতিবার ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪




রামগঞ্জে খাল বিলের অর্ধ শতাধীক বাঁধ অপসারণ করলো প্রশাসন

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৩ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৩ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
উপজেলা প্রতিনিধি

Image

অতি বর্ষণে জলাবদ্ধতা ও বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় রামগঞ্জ উপজেলার বেশিরভাগ খাল থেকে দ্রুত পানি সরানো ও পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে রামগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার ও আজ শুক্রবার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

বিভিন্ন খাল ও উন্মুক্ত জলাশয় থেকে পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টিকারী বাঁধ, জাল, ও আন্টা, খড়াজালসহ বিভিন্ন সরাঞ্জম জব্দ ও বিনষ্ট করা হয়।

রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. শারমিন ইসলামের সার্বিক তত্বাবধানে সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেব্রবত দাশ এ অভিযান পরিচালনা করেন।

দুইদিন ধরে চলা এই অভিযানে পদ্মা বাজারে শাখা খাল, পানপাড়া ওয়াপদা খাল, পানপাড়া বাজার খালের অংশ, লামচর ইউনিয়নের বেড়ি বাজার সংলগ্ন খাল, রামগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন খাল, রামগঞ্জ লক্ষ্মীপুর সড়কের মঠের পোলের উপর সংযোগ খাল, বেড়িবাজার হতে ডাজ্ঞাতলী ওয়াপদা খাল থেকে অবৈধভাবে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ ও বিভিন্ন ধরনের জাল দিয়ে মাছ ধরার সরঞ্জাম ও বাঁধগুলো কেটে দেয়া হয়।

এছাড়া আইয়েনগর ও দরবেশপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় পানির প্রবাহ সচল করতে বেশ কিছু বাঁধ কাটা হয়।

এসময় উপস্থিত ছিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি টিম, রামগঞ্জ থানা পুলিশের সদস্যসহ রেডক্রিসেন্ট ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ব্যক্তিবর্গ।

রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. শারমিন ইসলাম জানান, জনস্বার্থে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি আরো জানান, উপজেলার কোন খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ বা বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির সাথে জড়িতদের ছাড় দেয়া হবে না।

কনক মজুমদার, রামগঞ্জ প্রতিনিধি

নিউজ ট্যাগ: রামগঞ্জ

আরও খবর
সুন্দরগঞ্জে ত্রাণের ৩ টন চাল জব্দ

সোমবার ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪




মিয়ানমারের বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে উঠছে টেকনাফ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৯ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৯ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

সীমান্তে নাফ নদীর ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে আসা মর্টার শেল ও বিমান হামলার বিস্ফোরণের শব্দে বুধবার (২৮ আগস্ট) গভীর রাতে কেঁপে উঠেছে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন নাফ নদী-তীরবর্তী উপজেলার বাসিন্দারা।

টেকনাফে বসবাসরত বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বিস্ফোরণের কথা জানান। এভাবে বিস্ফোরণের শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সীমান্তের বাসিন্দাদের মধ্যে।

টেকনাফ সীমান্ত এলাকার গিয়াস উদ্দিন নামক একজন সমাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন, মধ্যরাতে ভয়ংকর শব্দে ঘুম ভেঙেছে, মনে হচ্ছে যুদ্ধবিমান ঘরের ওপর দিয়ে চক্কর দিচ্ছে।

সাজ্জাদুল করিম নামে আরেকজন লেখেন, যেভাবে শব্দ ভেসে আসছে, মনে হয় কিছুক্ষণের মধ্যে শ্রবণশক্তি হারাবো।

সেন্টমার্টিন এলাকার বাসিন্দা জসিম উদ্দিন শুভ বলেন, গতকাল থেকে সেন্টমার্টিনে মিয়ানমার থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। ধারণা করছি, এবার হামলা হচ্ছে মায়ানমারের মংডু টাউনশিপের কাদিরবিল, মংনিপাড়া ও সুদাপাড়া এলাকায়।

টেকনাফ সাবারাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর হোসেন বলেন, রাত ১২টার পর থেকে টানা কয়েক ঘণ্টা বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাওয়া যায়। এতে মানুষের নির্ঘুম রাত কাটে।


আরও খবর
সুন্দরগঞ্জে ত্রাণের ৩ টন চাল জব্দ

সোমবার ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪




চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নতুন চেয়ারম্যান নুরুল করিম

প্রকাশিত:সোমবার ০২ সেপ্টেম্বর 2০২4 | হালনাগাদ:সোমবার ০২ সেপ্টেম্বর 2০২4 | অনলাইন সংস্করণ
মনীষা আচার্য, চট্টগ্রাম

Image

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুছকে সরানো হয়েছে। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পাওয়া প্রকৌশলী মো. নুরুল করিমের বাড়ি চট্টগ্রামে। তিনি জেলার ফটিকছড়ি উপজেলার নারায়ণহাট শৈলাকুপা গ্রামের সন্তান।

সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তি ও বৈদেশিক নিয়োগ শাখার উপসচিব কানিজ ফাতিমা স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, 'চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুছ-এর নিয়োগের অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিলপূর্বক প্রকৌশলী মো. নুরুল করিমকে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৮ এর ধারা-৭ অনুযায়ী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সাথে কর্ম-সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে যোগদানের তারিখ থেকে পরবর্তী ৩ (তিন) বছর মেয়াদে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ প্রদান করা হলো। এই নিয়োগের অন্যান্য শর্ত অনুমোদিত চুক্তিপত্র দ্বারা নির্ধারিত হবে। জনস্বার্থে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।'

গত ২৪ এপ্রিল আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুছকে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিন বছরের জন্য নিয়োগ দেওয়া হলেও মাত্র চার মাসের মাথায় তাঁকে এ পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।


আরও খবর
সুন্দরগঞ্জে ত্রাণের ৩ টন চাল জব্দ

সোমবার ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪




কামাল পরিবারের ৩২০ কোটি টাকা দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুদক

প্রকাশিত:সোমবার ০২ সেপ্টেম্বর 2০২4 | হালনাগাদ:সোমবার ০২ সেপ্টেম্বর 2০২4 | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতির মাধ্যমে বিগত আওয়ামী সরকারের প্রভাবশালী এমপি-মন্ত্রীরা কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। দেশ থেকে পাচার করেছেন হাজার কোটি টাকা। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রাথমিক অনুসন্ধানে একে একে সেইসব দুর্নীতির তথ্য বেরিয়ে আসেছে।

আওয়ামী সরকারের প্রভাবশালী সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ও তার পরিবারের নামে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পাশাপাশি সংস্থাটির অনুসন্ধানে আরও ২০০ কোটি টাকার বেশি মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধের প্রমাণ পেয়েছে সংস্থাটির অনুসন্ধান টিম। সব মিলিয়ে আপাতত ৩০০ কোটি টাকার বেশি দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে।

আর ওই দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে আসাদুজ্জামান কামাল, তার স্ত্রী লুৎফুল তাহমিনা খান, তার ছেলে শাফি মোদাচ্ছের খান, মেয়ে সোফিয়া তাসনিম খান ও সহকারী একান্ত সচিব মনির হোসেনকে আসামি করে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে। চলতি সপ্তাহের যে কোনো দিনই কমিশনের অনুমোদনক্রমে মামলা করার সম্ভাবনা রয়েছে।

এ বিষয়ে দুদকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, দুদকের অনুসন্ধানে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অকাট্য প্রমাণ মিলেছে। নিজ ও পরিবারের সদস্যদের নামে নামে-বেনামে ১০০ কোটি টাকার বেশি স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের প্রমাণ পাওয়া গেছে। যার মধ্যে ব্যাংকের নগদ অর্থ, ঢাকা ফ্ল্যাট ও জমি রয়েছে। অনুসন্ধানে তাদের ব্যাংক হিসাবেই শত কোটি টাকার বেশি অর্থের সন্ধান মিলেছে। এছাড়া তার এপিএস মনিরের বিরুদ্ধে প্রায় ২০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের প্রমাণ মিলেছে।

তিনি আরও বলেন, দুদক টিম ওই পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অন্তত ২০০ কোটি টাকার মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধের প্রমাণ পেয়েছে। আপাতত এসব কারণেই মামলা সুপারিশ করা হয়েছে। তবে আমাদের বিশ্বাস তদন্তে তাদের এর চেয়ে বহুগুন সম্পদ ও মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধের তথ্য পাওয়া যাবে। এছাড়া সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামালের অন্যান্য ৫ সহযোগীর বিরুদ্ধেও দুর্নীতির প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে। এ যাত্রায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা না হলেও খুব শিগগিরই মামলা সুপারিশ কমিশনে দাখিল করা হবে বলে জানা গেছে।

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ও তার পরিবারসহ ওই ৫ জনের বাইরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ধনঞ্জয় কুমার দাস, ডিআইজি মোল্যা নজরুল ইসলাম, মন্ত্রীর সাবেক পিএস অতিরিক্ত সচিব হারুন অর রশিদ বিশ্বাস, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোল্লা ইব্রাহিম হোসেন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপুর বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অনুসন্ধান চলমান আছে। ইতোমধ্যে তার নামে থাকা ব্যাংক হিসাব ও আয়কর নথিসহ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ওই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে পুলিশ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিস থেকে বস্তায় বস্তায় কোটি কোটি টাকা আদায় করা অভিযোগ ছিল। যার মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন কামাল-হারুন সিন্ডিকেট।

ইতোমধ্যে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা যাতে দেশত্যাগ করতে না পারেন সে কারণে আদালতের অনুমতিক্রমে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তার স্ত্রী, দুই সন্তান এবং মন্ত্রীর পিএস, এপিএসসহ ওই ১০ ব্যক্তিকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। দুদকের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলমের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই আদেশ দেয় আদালত। আদালতে দেওয়া আবেদনে বলা হয়, বিভিন্ন অনিয়ম এবং দুর্নীতির মাধ্যমে অকল্পনীয় অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তারা দেশ ছেড়ে বিদেশে পালাতে পারেন মর্মে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন।

কামাল সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই ঘুষ হিসেবে বস্তা বস্তা টাকা নিতেন। পুলিশ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিস থেকে এই টাকা আদায় করা হতো। এ জন্য তৎকালীন অতিরিক্ত সচিব ড. হারুন অর রশীদ বিশ্বাসের নেতৃত্বে সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন।

এই সিন্ডিকেটের অন্য সদস্য ছিলেন যুগ্মসচিব ধনঞ্জয় কুমার দাস, মন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মনির হোসেন, জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোল্লা ইব্রাহিম হোসেন। টাকা আদায় বা উত্তোলনে মূল ভূমিকা পালন করতেন ড. হারুন অর রশীদ বিশ্বাস। হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এই কামাল-হারুন সিন্ডিকেট। একপর্যায়ে হারুন অর রশীদ অবসরে গেলেও এই মন্ত্রণালয়ের সব ঘুষ, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি। ঝুঁকি এড়াতে টাকাগুলো পাঠানো হয়েছে দেশের বাইরে।

অভিযোগ রয়েছে জেলায় পুলিশ সুপার নিয়োগে সর্বনিম্ন ৮০ লাখ থেকে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত নিতো এই চক্র। এই সিন্ডিকেটের আশীর্বাদ ছাড়া পুলিশের কেউ কোনো জেলায় বা গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন পেতেন না। জেলা পুলিশ সুপার হিসেবে পদায়নের ক্ষেত্রে ১ থেকে ৩ কোটি টাকা নিতো এই সিন্ডিকেট।

২০২২ সালের ৩০ জুন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পান ডিআইজি মোল্ল্যা নজরুল ইসলাম। পাঁচ কোটি টাকার বিনিময়ে মোল্ল্যা নজরুলকে গাজীপুরের কমিশনার হিসেবে পদায়ন করা হয়। এর মাস খানেক আগে হারুন অর রশীদ বিশ্বাসের কাছে ৫ কোটি টাকার একটি চেক দেন মোল্ল্যা নজরুল। পরবর্তী সময়ে গাজীপুরের কমিশনার হিসেবে নিয়োগের পর হোটেল ওয়েস্টিনে হারুন অর রশীদের কাছে নগদ ২ কোটি টাকা দেন তিনি। এসময় পূর্বের চেকটি ফেরত নিয়ে মোল্ল্যা নজরুল ৩ কোটি টাকার একটি চেক দেন। পরে বাকি টাকাও দেওয়া হয়। এসব টাকা বস্তায় ভরে পৌঁছে দেওয়া হতো আসাদুজ্জামান খান কামালের ফার্মগেটের বাসায়।

সূত্র জানায়, এনজিওর নো অবজেকশন সার্টিফিকেট বা এনওসি দিতে গিয়ে প্রতি সংস্থা থেকে ৮০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা দিতে হতো আসাদুজ্জামান খান সিন্ডিকেটকে। এর মধ্যে ২০১৮ সালে রাজধানীর উত্তরা এলাকার একটি উন্নয়ন সংস্থার এনওসি নিতে গেলে বিপত্তি শুরু হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। এর আগে পুলিশের বিশেষ শাখা, জেলা প্রশাসক, এনএসআই ইতিবাচক প্রতিবেদন দাখিল করে। তারপরও অদৃশ্য কারণে ফাইলটি মাসের পর মাস আটকে রাখা হয় মন্ত্রণালয়ে। বাধ্য হয়ে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচনের আগে মন্ত্রীকে ৮৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়। ফার্মগেট এলাকায় কামালের বাসার সামনে টাকার ব্যাগটি দেওয়া হয় তার পরিবারের এক সদস্যের কাছে।

ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্সে কোনো সার্কুলার হলেই মন্ত্রীর দপ্তর থেকে একটি তালিকা পাঠানো হতো। সে মোতাবেক তাদের নিয়োগ দিতে ফায়ার সার্ভিসকে বাধ্য করতেন সাবেক এই মন্ত্রী। ২০২৩ সালে ২ অক্টোবর ৫৩৫ জনকে জনকে নিয়োগ দেয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। এর মধ্যে ছিলেন ৪৩৬ পুরুষ ফায়ার ফাইটার, ১৫ জন নারী ফায়ার ফাইটার ও ৮৪ জন গাড়িচালক। নিয়োগ কার্যক্রমের শুরুতেই মন্ত্রীর দপ্তর থেকে ২৫০ জনের একটি তালিকা পাঠানো হয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে। সাবেক এই মন্ত্রীর নির্দেশে সেই তালিকা মোতাবেক নিয়োগ দিতে বাধ্য হয় ফায়ার সার্ভিস। নিয়োগের জন্য জনপ্রতি ৮-১২ লাখ টাকা নিতো কামাল-হারুন সিন্ডিকেট।


আরও খবর