চাকরিচ্যুত দুর্নীতি
দমন কমিশনের (দুদক) উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, স্রোতের অনুকূলে গা ভাসালে
চাকরি হারাতেন না বলে দাবি করেছেন চাকরি হারানোর পর পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন
বলে জানিয়েছেন মো. শরীফ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমি ও আমার পরিবার
নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বলতে গেলে এখন একপ্রকার লুকিয়ে আছি। কখন আবার গুম হয়ে যাই।’
শরীফ উদ্দিনকে
চাকরিচ্যুতির পেছনে নির্দিষ্ট কোনো কারণ দেখায়নি দুদক। পরে সারা দেশে এ নিয়ে তোলপাড়
শুরু হলে দুদক সচিব গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘শরীফ দুদকের ভাবমূর্তি
নষ্ট করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে কয়েকটি বিভাগীয় মামলা আছে। ভাবমূর্তি রক্ষায় শরীফকে চাকরিচ্যুতি
করা হয়েছে।’ তবে শরীফ বুঝতে পারছেন না কীভাবে
তিনি ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন।
শরীফ বলেছেন,
উল্টো তিনি দুদকের ভাবমূর্তি বাড়ানোর কাজই করেছেন। তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের
সক্রিয় দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কাজ করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রকল্পে জালিয়াতি
করে টাকা নষ্ট ও অপচয় করা এবং আত্মসাৎকারীদের ধরেছি। আমি তো বুঝতে পারছি না, কীভাবে
ভাবমূর্তি নষ্ট করেছি!’
শরীফ রাষ্ট্রের
হর্তাকর্তাদের প্রতি আকুল আবেদন জানিয়ে বলেন, ‘দেশকে জীবনের
চেয়ে বেশি ভালোবাসি। আমার দেশপ্রেমের চেতনাকে নষ্ট করে দিয়েন না। আমি দেশের জন্য কাজ
করতে চাই।’
হঠাৎ চাকরিচ্যুতির
পেছনে কিছু সন্দেহের কথা বলেছেন শরীফ। শরীফ বলেন, ‘চট্টগ্রামে কর্মরত
থাকার সময় চাঞ্চল্যকর এবং স্পর্শকাতর মামলা তদন্ত এবং অভিযোগের অনুসন্ধান করেছি। তার
প্রেক্ষাপটে প্রভাবশালী চক্রের রোষানলে পড়ি। একপর্যায়ে স্রোতের অনুকূলে গা না ভাসানোর
কারণে তাঁরা আমাকে গত ৩০ জানুয়ারি বাসায় এসে হুমকিও দেয়। বিষয়টি আমি মাননীয় কমিশন ও
স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েছি। ওই সময় হুমকিদাতারা বলেছিলেন, আমাকে এক সপ্তাহের মধ্যে
চাকরিচ্যুত করবেন। তবে আমার সৌভাগ্য এক সপ্তাহ নয়, তাঁরা ১৬ দিনের মাথায় আমার চাকরিটা
খেল!
অসাংবিধানিকভাবে
চাকরিচ্যুতি করা হয়েছে উল্লেখ করে শরীফ বলেন, ‘কমিশনের ভাবমূর্তি
ক্ষুণ্ন করার মতো কোনো কাজ করিনি। বরং আমি দেশের কল্যাণে কাজ করেছি। রোহিঙ্গা এনআইডি,
ভূমি জালিয়াতি, কর্ণফুলী গ্যাসের সংযোগ বাণিজ্য ও মেডিকেলের স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে
দেশের অনেক বড় বড় কাজ করেছি। প্রায় ৫০ কোটি টাকার ওপর অবৈধ টাকা জব্দ করেছি। এতে তো
কমিশনের ভাবমূর্তিই বাড়ার কথা। আমি গড্ডলিকাপ্রবাহে গা ভাসাইনি। এ কারণে দুর্নীতিবাজ
প্রভাবশালীদের ইন্ধনে হয়তো আমাকে বদলি ও চাকরিচ্যুত করা হলো।’
চাকরি
ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন শরীফ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো
সুযোগ দেওয়া হয়নি। কমিশনের নিকট আবেদন জানাচ্ছি, চাকরিটা ফিরিয়ে দেওয়া হোক।