শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের
আওতাধীন দপ্তর ও সংস্থার অনিয়ম ও দুর্নীতি রোধ করতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি
দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তিনি বলেন, ‘সর্ষের মধ্যে ভূত থাকলে তা তাড়ানো হবে। কেউও আইনের ঊর্ধ্বে নয়।’
আজ সোমবার সকালে
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে শিক্ষা বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন এডুকেশন রিপোর্টার্স
অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইরাব) সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন মন্ত্রী।
মন্ত্রণালয়ের
অধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) কর্মকর্তাদের দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে
মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘সর্ষের মধ্যে ভূত থাকলে তা তাড়ানো হবে। কেউও আইনের ঊর্ধ্বে নয়।’
ইরাব সভাপতি
অভিজিৎ ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক আকতারুজ্জামান অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
অনুষ্ঠানে বিইআরএফ সভাপতি মুস্তফা মল্লিক, সাধারণ সম্পাদক এসএম আব্বাস উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভায়
শিক্ষামন্ত্রী জানান, ‘শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা প্রবণতা ঠেকাতে কাউন্সেলিং কার্যক্রম জোরদার
করা হবে। যে কোনো আত্মহত্যাই অনাকাঙ্ক্ষিত। অনেক ক্ষেত্রে পারিবারিক প্রত্যাশার চাপ
বেশি থাকে শিক্ষার্থীদের ওপর। বাবা-মায়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শারীরিক নির্যাতনের
ঘটনাও ঘটে। করোনার প্রভাবেও শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
ও পরিবারে শিক্ষার্থীদের কাউন্সেলিং করতে হবে। মাধ্যমিকের দুই লাখ শিক্ষককে কাউন্সেলিং
বিষয়ে ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে। প্রতি বিদ্যালয়ে দুজন কাউন্সেলিং অভিজ্ঞ শিক্ষক থাকবেন।’
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস শুরুর সময় পরিবর্তন হচ্ছে
না জনিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সরকারি অফিসের সময় সাময়িকভাবে পরিবর্তন
করা হয়েছে। সে কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্লাস শুরুর সময় পরিবর্তন করার চিন্তাভাবনা
করা হচ্ছে না। স্কুল-কলেজের ছুটি পরিবর্তন করা হলে পরে সেটি পরিবর্তন করা কঠিন হয়ে
যাবে। আগামী বছর থেকে আমাদের নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের
সাপ্তাহিক ছুটি দুদিন কার্যকর করার কথা ছিল। সেটি এখন থেকেই কার্যকর করা হয়েছে।’
স্কুল-কলেজের
ছুটি শুক্রবার-শনিবারের বদলে বৃহস্পতিবার-শুক্রবার কেন করা হচ্ছে না—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘অনেক কর্মজীবী অভিভাবক বৃহস্পতিবার বাসায় থাকেন না। সেই ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর
ছুটি কাজে আসে না। এটি আমাদের প্রস্তাবনায় থাকলেও সেটি বাতিল করে শুক্রবার-শনিবার করা
হয়েছে।’
হলিক্রসের শিক্ষার্থী
নিহতের বিষয়ে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের কাছে এখানো স্পষ্ট
নয়। এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে বোঝা যাবে। নিহত শিক্ষার্থী তিন বিষয়ে ফেল
করেছিল। পরিবারে এ নিয়ে এক ধরনের চাপ ছিল। সামাজিকভাবেও এক ধরনের চাপ তৈরি হয়। এসব
কারণে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিতে পারে।’
এ সময় ইরাবের
উপদেষ্টা রাকিব উদ্দিন, সাবেক সভাপতি মুসতাক আহমেদ, সহসভাপতি নুরুজ্জামান মামুন, যুগ্ম
সম্পাদক নাজিউর রহমান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক মুরাদ হুসাইন, কোষাধ্যক্ষ এলতেফাত হোসাইন,
দপ্তর সম্পাদক সেলিম আহমেদ, প্রচার সম্পাদক রাহুল শর্মা, প্রকাশনা সম্পাদক তুহিন সাইফুল,
প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সম্পাদক রুম্মান তূর্য, ক্রীড়া ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মুরাদ মজুমদার,
আইসিটি সম্পাদক এনামুল হক প্রিন্স, কার্যনির্বাহী সদস্য বিভাষ বাড়ৈ আবদুল হাই তুহিনসহ
অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।