
নওগাঁয় পরকীয়া সম্পর্কের জেরে বুলবুল আহমেদ
নামে এক যুবককে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় হাবিব নামে একজনকে আটক করেছে
পুলিশ। সোমবার রাত ৮টার দিকে শহরের চকমুক্তার মন্ডলপাড়া মহল্লায় এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার
দুপুরে বুলবুল মারা যায়। নিহত বুলবুল নীলফামারীরর উত্তর দুরাকুটি গ্রামের বাহান উদ্দিনের
ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ শহরের
চকমুক্তার মন্ডলপাড়া মহল্লায় গত এক বছর থেকে কাজী আব্দুস সামাদ এর বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস
করে আসছিল হাবিব ও তার স্ত্রী মোসলেমা। তাদের দাম্পত্য জীবনে প্রায় ২০ বছরের সংসারে
দুই সন্তান রয়েছে। হাবিবের গ্রামের বাড়ি নীলফামারি জেলার উত্তর দুরাকুটি। তবে তার স্ত্রী
মোসলেমার বাবার বাড়ি নওগাঁ শহরের মাস্টারপাড়া মহল্লায়। নিহত বুলবুল ও হাবিব দুজনের
মধ্যে সম্পর্কে চাচাতো ভাই। সোমবার রাত ৮টার দিকে কাজী আব্দুস সামাদ এর বাসার পেছনে
হাবিব ও মোসলেমার সাথে বুলবুলের তর্কবিতর্ক হচ্ছিল। এক সময় গায়ে আগুন নিয়ে চিৎকার দিয়ে
জীবন বাঁচাতে দৌঁড়ে পাশের ডোবা ভেবে কচুরিপানায় ঝাঁপ দেন বুলবুল। তবে সেখানে পানি
ছিল না। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে গিয়ে বস্তা ও পাশে পড়ে থাকা ইটের গুড়ি দিয়ে আগুন নেভায়।
তাকে উদ্ধার করে রাত ৯টার দিকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক
হওয়ায় রাতেই বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে
মঙ্গলবার দুপুরে সেখান থেকে রেফার্ড করে ঢাকায় নেয়ার পথে মারা যান বুলবুল। বুলবুলকে
এর আগে শহরের বাসিন্দারা কখনো দেখেনি। সন্ধ্যায় ওই মহল্লার রাস্তা ও গলিতে একটি প্রেমের
ঘটনা কাগজে লিখা অবস্থায় মোসলেমা ও বুলবুলের ছবিসহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। এতে বুঝা যায়
তাদের দুজনের মধ্যে পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল।
কাজী আব্দুস সামাদের স্ত্রী শাহারা বেগম
বলেন, গত এক বছর ধরে মোসলেমা ও হাবিব আমাদের বাসায় ভাড়া ছিল। রাত ৮টার দিকে গায়ে আগুন
নিয়ে দৌঁড়ে দোকানের সামনে দিয়ে একজন কচুরিপানার উপর লাফ দেয়। পরে কয়েকজন আগুন নিভিয়ে
আহত ছেলেকে হাসপাতালে নেয়। স্থানীয়রা বলেন, ভালোবাসার গল্প একটি কাগজে লেখা ছিল। এছাড়া
নিকাহনামা ফটোকপি কাগজের সাথে মোসলেমা ও বুলবুলের ছবি লাগানো ছিল। এতে বুঝা যাচ্ছে
স্বামী সংসার থাকার পরও দুজনের মাঝে পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় নওগাঁ সদর
থানার (ওসি তদন্ত) আব্দুল গফুর বলেন, কেরোসিন ঢেলে গায়ে আগুন লাগানোর ঘটনার সত্যতা
পাওয়া গেছে। তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে বুলবুলের গায়ে কেরোসিন দিয়ে তারা আগুন লাগিয়ে
দেয়। সে জীবন বাঁচাতে দৌঁড় দেয়। স্থানীয়রা তাকে আহতাবস্থায় নওগাঁ হাসপাতালে নেয়। সেখান
থেকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। পরে তাকে ঢাকায়
রেফার্ড করা হলে যাওয়ার পথে মারা যায়। নিহত বুলবুল ও হাবিব সম্পর্কে চাচাতো ভাই। ঘটনার
পর হাবিবকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার সন্ধ্যা
৭টা পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ হয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে
জানান তিনি।