স্টর্মি ড্যানিয়েলসের প্রকৃত নাম স্টেফানি ক্লিফোর্ড। তাঁর জন্ম লুসিয়ানার ব্যাটন রুজের একটি অপেক্ষাকৃত দরিদ্র পাড়ায়। বেড়ে ওঠাও সেখানে। ছোটবেলায় তিনি ঘোড়ায় চড়তে ও লেখালেখি করতে পছন্দ করতেন।
এক সন্তানের মা স্টর্মি নিউইয়র্ক টাইমসকে তাঁর পর্নো স্টার হয়ে ওঠার গল্প বলেছেন। তিনি বলেন, ছোটবেলায় আমার স্বপ্ন ছিল বড় সাংবাদিক হওয়ার। আমি খুব চঞ্চল ও দুষ্টু প্রকৃতির ছিলাম। তবে আমি খুব একটা জনপ্রিয় ছিলাম না। তাঁর সাংবাদিক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয়নি। ঘটনাচক্রে জড়িয়ে পড়েন পর্নো ইন্ডাস্ট্রিতে। এই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার আগে মাত্র ১৭ বছর বয়সে প্রথম তাঁর স্ট্রিপিং (নগ্ন হওয়া) করার অভিজ্ঞতা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন স্টর্মি।
পরে তিনি গেইসমারের স্থানীয় গোল্ড ক্লাবে কাজ শুরু করেন। পর্নো ইন্ডাস্ট্রিতে জনপ্রিয় হওয়ার পাশাপাশি তিনি অসংখ্য পুরস্কার জিতেছেন। তিনি বেশ কয়েকটি মূলধারার চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। ২০১০ সালে তিনি লুসিয়ানার রিপাবলিকান সিনেট মনোনয়নের জন্য প্রতিযোগিতা করে রাজনীতিতেও নাম লেখিয়েছিলেন।
২০১৮ সালে ট্রাম্পের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক আছে বলে প্রকাশ্যে এক অনুষ্ঠানে দাবি করেন স্টর্মি ড্যানিয়েলস। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, ২০০৬ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলে প্রার্থিতার লড়াইয়ে ট্রাম্প বিজয়ী হওয়ার পর যখন একের পর এক নারী তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনছিলেন, স্টেফানি তখনই মুখ খুলতে চেয়েছিলেন।
পরে ট্রাম্পের নির্দেশে কোহেন মুখ বন্ধ রাখার চুক্তির (নন ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্ট) খসড়া প্রস্তুত করেন। এই খসড়ায় এসেনশিয়াল কনসালট্যান্টস-এলএলসি নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে স্টেফানির নীরবতার বিনিময়ে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। মামলায় এই চুক্তির একটি কপিও সংযুক্তি হিসেবে দিয়েছেন স্টেফানি। তাঁর নথিতে এই পর্নো স্টার আরও বলেন, এলএলিসর সঙ্গে চুক্তিতে ডেভিড ডেনিসন ও পেগি পিটারসন ছদ্মনামে স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প ও স্টেফানি।
পরের এক টুইটার পোস্টে স্টর্মি ড্যানিয়েলস লেখেন, বিষয়টি নিয়ে মুখ না খুলতে ট্রাম্পের সঙ্গে ‘নীরব থাকার’ যে চুক্তি স্টেফানির হয়েছিল, তা অকার্যকর। কারণ এতে ট্রাম্প স্বাক্ষর করেননি। স্টেফানির মুখ বন্ধ রাখতে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এক মাস আগে ট্রাম্প তাঁকে ১ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার দিয়েছিলেন। পরে স্টেফানিকে অর্থ দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেও এর সঙ্গে ট্রাম্প বা তাঁর প্রচারণা দলের কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না বলে দাবি করেছিলেন ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের আইনজীবী মাইকেল কোহেন।