সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে বেড়াতে গিয়ে
বন্যায় আটকেপড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ (ঢাবি) বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থীকে
অবশেষে সেনাবাহিনীর সহায়তায় সুরমা নদীর চর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। আজ রোববার সকালে
এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
আইএসপিআর জানিয়েছে, শিক্ষার্থীসহ যারা
লঞ্চ নষ্ট হয়ে আটকা পড়েছিলেন, তাদের ছাতক থেকে উদ্ধার করে সিলেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
সুরমা নদীতে আটকেপড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী শোয়েব আহমেদ জানান, আমরা গতকাল দিবাগত
রাত আড়াইটার দিকে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার এলাকার একটি ফেরিঘাটে আশ্রয় নিয়েছিলাম এবং
সকাল পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করেছিলাম। আজ সকাল ৮টার পর সেনাবাহিনী আমাদের উদ্ধার
করতে আসে।
‘এখন আমরা গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২১ জন একটি নৌযানে আছি। আর বাকি যারা আটকা পড়েছিলেন, তারা আলাদা আলাদা লঞ্চে যাচ্ছেন’, বলেন শোয়েব আহমেদ।
জানা গেছে, গতকাল শনিবার দুপুর ২টার দিকে
পুলিশ লাইন্স থেকে ‘কপোতাক্ষ অনির্বাণ ট্যুরিজম বোট’ নামের একটি লঞ্চে
করে ঢাবির ৪৫ জন ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী সিলেট শহরের
দিকে রওনা দেন। কিন্তু রাত সাড়ে ৮টার দিকে তারা সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের কাছে সুরমা
নদীর চরে আটকা পড়েন। ভুক্তভোগীরা জানান, তাদের লঞ্চটি একদিকে হেলে পড়েছে। বিকল হয়ে
গেছে লঞ্চের দুটি ইঞ্জিন।
গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শোয়েব
আহমেদ বলেছিলেন, ‘রাত হয়ে গেছে। এখানে খুব অন্ধকার। চারিদিকে
পানি আর পানি। বিভিন্ন জায়গায় সাহায্যের আবেদন করেছি। কিন্তু কেউ ঠিকমতো সাহায্য করতে
পারছে না। এখানে প্রচুর স্রোত। বৃষ্টিও প্রচুর। এই রাতে সবাই জীবন নিয়ে শঙ্কায় রয়েছি।
জরুরি ভিত্তিতে আমাদের উদ্ধার করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
এদিকে, আটকেপড়া শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে
স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা কামনা করেছিলেন ঢাবির প্রক্টর এ কে এম গোলাম
রব্বানী। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান আবুল মনসুর আহাম্মদও শিক্ষার্থীদের
উদ্ধারে সেনাবাহিনীর সঙ্গে কথা বলেছিলেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১৪ জুন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস
থেকে সুনামগঞ্জ ভ্রমণে গিয়ে বন্যায় আটকা পড়েন ঢাবির ২১ শিক্ষার্থী। পরে সুনামগঞ্জ জেলা
প্রশাসনের উদ্যোগে পানসী রেস্তোরাঁ থেকে তাদের উদ্ধার করে গত শুক্রবার বিকেলে জেলা
পুলিশ লাইন্সে নেওয়া হয়। পরে গতকাল শনিবার ওই শিক্ষার্থীরা আবার আটকা পড়েন।