আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ ৭৩ বছরে পা রাখলেন। আজ তাঁর ৭৩তম জন্মদিন। ১৯৫০ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বড় ক্যানভাসে গতিশীল ও পেশিবহুল মানুষের ছবি আঁকতে ভীষণ পছন্দ তার। তার চিত্রকর্মে বিচ্ছুরিত হয় রমণীর অলৌকিক ও অসীম শক্তি।
একজন গর্বিত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে শাহাবুদ্দিন এখনও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তার ছবির মোটিফ, রং ও কম্পোজিশনে অতুলনীয়ভাবে উপস্থাপন করে চলেছেন। তার ছবির মুখ্য বিষয় সমসাময়িক
মানুষ ও সময়। তার ছবিতে আশাবাদী মনোভঙ্গির প্রকাশ পায়। শিল্পী শাহাবুদ্দিনের ফিগার খুবই উদ্দীপনাময়। তার ব্রাশের সজীবতা এবং শক্তি এসব ফিগারে প্রাধান্য পায়। রেখার টান এবং স্থিতির জন্য তার স্কেচগুলো হয়ে ওঠে শক্তিশালী। বিশেষ করে তার চারকোণ স্কেচ খুবই দৃষ্টিনন্দন ও সজীব। তিনি অনবরত এঁকে চলেছেন বঙ্গবন্ধু, মহাত্মা গান্ধী ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে। তিনি শুধু তাদের পোর্ট্রেট করেন না, তাদের মধ্যে ঢুকিয়ে দেন মানবীয় অনুভূতি, আবেগ এবং আত্মপ্রকাশ। শাহাবুদ্দিন প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী একজন স্বপ্নচারী শিল্পী। বাঙালির সংগ্রাম ও অর্জনকে তিনি মহাকালিক স্পেসে প্রতিস্থাপন করেছেন।
শাহাবুদ্দিন আহমেদের ব্যক্তিগত পরিচয় তিনি একজন অভিবাসী শিল্পী। কিন্তু তার মন ও মনস্বিতায় বঙ্গবন্ধু এবং এদেশের মুক্তিযুদ্ধ। বর্তমানে তিনি বসবাস করছেন পাশ্চাত্যের শিল্পের নগরী প্যারিসে। ১৯৭৩ সালে ফ্রান্স সরকারের বৃত্তি নিয়ে প্যারিসে যান, তারপর সেখানেই তিনি থিতু হন। দেশ-বিদেশে নাম করা বহু গ্যালারিতে তার একক ও যৌথ প্রদর্শনী হয়।
শাহাবুদ্দিন আহমেদের চিত্রকর্ম বাংলাদেশ ছাড়াও বুলগেরিয়া, তাইওয়ান, সুইজারল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া ও ফ্রান্সের বিভিন্ন প্রখ্যাত গ্যালারি, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষিত আছে।
প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, ইউনেস্কো পুরস্কার, স্বাধীনতা পুরস্কারসহ নানা পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন এই শিল্পী। বিরল প্রতিভার অধিকারী এই চিত্রশিল্পী ফ্রান্সের সম্মানজনক 'নাইট' উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন।