ঝালকাঠি-১ (কাঠালিয়া-রাজাপুর) আসনে আওয়মী লীগের মনোনীত প্রার্থী এম শাহজাহান ওমর বিএনপির নেতা-কর্মীদের নিয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে যোগ দেন। এ সময় তিনি কাঠালিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।
সমাবেশে কাঠালিয়া বিএনপির সভাপতি আব্দুল জলিল মিয়াজীর হাতে দুই নালা বন্দুক দেখা গেছে। বন্দুকটি শাহজাহান ওমরের বলে জানা গেছে। তবে এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলতে রাজি হননি তিনি।
এ ঘটনায় শাহজাহান ওমর অথবা তার ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে সশরীরে এসে ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকাশ্যে অস্ত্র বহন ও প্রতীক বরাদ্ধের আগেই নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর ব্যখ্যা চেয়ে চিঠি দিয়েছেন নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি।
সোমবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় কাঠালিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত সমাবেশে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন>> নির্বাচনের প্রস্তুতি দেখে বিদেশিরা সন্তুষ্ট : ইসি আলমগীর
সমাবেশে শাহজাহান ওমরের বাম পাশে কাঠালিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি (ওমর গ্রুপ) আব্দুল জলিল মিয়াজী ও সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন কবির হাওলাদার চেয়ারে বসা ছিলেন। অপরদিকে ডান পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন কাঠালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. গোলাম কিবরিয়া সিকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবুল বাসার বাদশা, শৌলজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মাহমুদ হোসেন রিপন।
শাহজাহান ওমর বলেন, কাঠালিয়া আওয়ামী লীগের কোনো গ্রুপিং থাকতে পারবে না। এখানে তরুণলীগ, কিবরিয়ালীগ, বুড়ালীগ ও বাচ্চা লীগ থাকতে পারবে না। এখানে থাকবে শুধু শেখ হাসিনা গ্রুপ।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি এবং বিএনপির দলবলসহ আপনাদের মেহমান’ আমাদের বরণ করে নেবেন। আমরা শিক্ষিত লোক, আমাদেরকে সম্মান করলে আপনাদেরকেও সম্মান করবো। সমাবেশ শেষে তিনি আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। আগামী ১১ ডিসেম্বরের পরে আবার দেখা হবে বলে জানান। এ সময় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন নেতা-কর্মীরা ফুলের তোড়া নিয়ে আসলেও শাহজাহান ওমরকে ফুল দিতে চাইলে সুযোগ না দেওয়ায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আব্দুল সালেহ বলেন, বৈধ অস্ত্র নিয়ে সমাবেশে যেতে পারবে না এমন কোনো নির্দেশনা আসেনি। তবে এ ঘটনায় সোমবার বিকালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহজাহান ওমরকে কারণ দর্শানোর চিঠি দিয়েছেন নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। কমিটির প্রধান ঝালকাঠি সিনিয়র সহকারী জজ পল্লবেশ কুমার কুণ্ড স্বাক্ষরিত চিঠিতে ‘শাহজাহান ওমর অথবা তার ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে সশরীরে এসে ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকাশ্যে অস্ত্র বহন ও প্রতীক বরাদ্ধের আগেই নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর ব্যখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন>> মঙ্গলবার থেকে ইসিতে আপিল করতে পারবেন প্রার্থীরা
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক (ওমর গ্রুপ) জাকির হোসেন কবির জানান, শাহজাহান ওমরের লাইসেন্স করা বন্দুক ও পিস্তল ছিল তার সঙ্গে।
বিষয়টি নিয়ে শাহজাহান ওমর বলেন, কারণ দর্শানোর চিঠি পাইনি। পেলে দেখব। আগ্নেয়াস্ত্র হাতে নিয়ে বসা কাঠালিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল জলিল মিয়াজি বলেন, আগ্নেয়াস্ত্রটি শাহ্জাহান ওমরের। সেটি লাইসেন্সকৃত ও বৈধ। তিনি থানার অনুমতি নিয়ে কাঠালিয়া আসছেন। তখন কাঠালিয়া থানার ওসিও উপস্থিত ছিলেন। তার বন্দুক আমার কাছে ছিল এবং তার লাইসেন্সকৃত পিস্তল ছিল তার সঙ্গে।
কাঠালিয়া থানার ওসি মো. শহীদুল ইসলাম জানান, পুলিশ রাস্তায় অবরোধ ডিউটিতে ছিল। এ ধরনের একটি ঘটনা শুনেছি।