আজঃ শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

স্বাস্থ্যবিধি মেনে বায়তুল মোকাররমে নামাজ আদায়

প্রকাশিত:শুক্রবার ০২ জুলাই 2০২1 | হালনাগাদ:শুক্রবার ০২ জুলাই 2০২1 | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

কঠোর লকডাউনের পাশাপাশি বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন স্থান থেকে বায়তুল মোকাররমে আজ নামাজ আদায় করতে আসা মুসল্লিদের সংখ্যা ছিল কম। ফলে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রবণতা বেশি লক্ষ করা গেছে। নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে নামাজ আদায় করেছেন উপস্থিত মুসল্লিরা।

শুক্রবার জুমার নামাজে অন্যান্য সময়ের তুলনায় অনেক ফাঁকা ছিল মুসল্লিদের চলাফেরা ও অবস্থান। মূল চত্বর ছাড়া বারান্দা-সিঁড়িসহ বিভিন্ন স্থান প্রায় খালি ছিল। যেখানে অন্যান্য জুমায় নিচের মার্কেট চত্বর বা আশপাশের ফাঁকা স্থানে কাতার করে নামাজ আদায় করতে দেখা যায় মুসল্লিদের।

মসজিদে দেখা যায়, মূলভবনে ভেতরে একটির পর একটি কাতার ছেড়ে মুসল্লিদের নামাজ আদায় করছেন। এছাড়া বেশিরভাগ কাতারেই দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হয়েছে। পাশাপাশি অজুখানাসহ বিভিন্ন স্থানে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা ছিল। আগত মুসল্লিদের বেশিরভাগ অংশকেই মাস্ক পরে মসজিদে আসতে দেখা গেছে। তাদের হাতে ছিল জায়নামাজও।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের সব জুমা ও পাঁচ ওয়াক্তের নামাজ এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রার্থনার আগে ও পরে কতিপয় বিষয়ে নিরুৎসাহিত করতে শর্ত বেঁধে দিয়ে জরুরি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

নিউজ ট্যাগ: বায়তুল মোকাররম

আরও খবর
কুরবানি ঈদ কবে, জানাল আরব আমিরাত

মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪

শুক্রবারের বিশেষ ৪ আমল

শুক্রবার ১২ এপ্রিল ২০২৪




মসজিদে নববীতে মুসল্লিদের নামাজ আদায়ের রেকর্ড

প্রকাশিত:শনিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ইসলামের দ্বিতীয় পবিত্র স্থাপনা সৌদি আরবের মদিনা নগরীতে অবস্থিত পবিত্র মসজিদে নববীতে রমজান মাসে মুসল্লিদের নামাজ আদায়ের রেকর্ড হয়েছে। পবিত্র এই মাসের প্রথম ২০ দিনে মসজিদে নববীতে দুই কোটিরও বেশি মুসল্লি নামাজ আদায় করেছেন বলে সৌদি আরবের সরকারি পরিসংখ্যানে জানানো হয়েছে।

সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা এসপিএ বলছে, একই সময়ে মসজিদে অবস্থিত আল রওজা আল-শরিফায় ২ লাখ ৯৬ হাজার ৫৯৫ জন নারীসহ মোট ৬ লাখ ৫৫ হাজার ২২৭ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করেছেন।

পবিত্র নগরী মদিনার মসজিতে নববীতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর রওজা অবস্থিত। আল রওজা আল-শরিফা পরিদর্শন এবং সেখানে নামাজ আদায়ে ইচ্ছুক মুসলিমদের পৌঁছানোর আগে সৌদি সরকারের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়।

মসজিদে নববীর তত্ত্বাবধানের দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বলেছে, মুসল্লিদের স্বস্তিতে ইবাদত নিশ্চিত করার জন্য সমন্বিত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সেবা দেওয়া হচ্ছে। আগামী মঙ্গলবার শেষ রমজানের আগে সেখানে মুসল্লিদের উপস্থিতি ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে।

রমজানের শেষ শুক্রবার সাপ্তাহিক জুমআর নামাজ আদায় করতে গতকাল মসজিদে নববীতে মুসল্লিদের ব্যাপক উপস্থিতি ছিল। এসপিএ বলছে, মুসল্লিদের নামাজ আদায়ের জন্য আগেই মসজিদে নববীর ছাদ ও চত্বর প্রস্তুত করা হয়েছিল; যাতে মুসল্লিরা শান্ত ও সুন্দর পরিবেশে নামাজ আদায় করতে পারেন।

সাধারণত রমজান মাসে মক্কায় ইসলামের পবিত্রতম স্থান কাবায় ওমরাহ পালনের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মুসলিমরা ছুটে যান। ওমরাহ পালনের পর অনেকে মসজিদে নববীতে নামাজ আদায় ও হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর রওজা মুবারক জিয়ারত করতে যান।

সৌদির সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর মসজিদে নববীতে ২৮ কোটিরও বেশি মুসলমান নামাজ আদায় করেন। তবে চলতি বছর সেই সংখ্যা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।


আরও খবর
মিঠুনকে বিশ্বাসঘাতক বললেন মমতা

বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪




আজ থেকে যথা নিয়মে চলবে মেট্রোরেল

প্রকাশিত:শনিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ঈদ উপলক্ষে টানা দুই দিন বন্ধ থাকার পর আজ শনিবার (১৩ এপ্রিল) সকাল থেকে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হচ্ছে। ফলে যাত্রীরা আগের মতোই বিদ্যুৎচালিত দ্রুতগতির এই গণপরিবহনে ভ্রমণ করতে পারবেন।

গত বুধবার ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) উপব্যবস্থাপক নাজমুল ইসলাম ভূঁইয়া গণমাধ্যমে বলেন, আগের ঘোষণা অনুযায়ী ঈদের দিন মেট্রোরেল বন্ধ থাকবে। গত বছরের ঈদেও বন্ধ ছিল মেট্রো চলাচল।

নাজমুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) ঈদের দিনের বন্ধ। আর শুক্রবার তো সাপ্তাহিক ছুটির দিন। এর ফলে মেট্রোরেল চলাচল দুই দিন বন্ধ থাকবে। আগামী শনিবার থেকে যাথা নিয়মে চলবে মেট্রোরেল।

বর্তমান সময়সূচি অনুযায়ী, সকাল ৭টা ১০ মিনিটে দিনের প্রথম ট্রেন উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে মতিঝিল স্টেশনে উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে এবং মতিঝিল স্টেশন থেকে উত্তরা উত্তর স্টেশনের উদ্দেশ্যে সকাল সাড়ে ৭টায় ছেড়ে যায়। দিনের শেষ ট্রেন উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে মতিঝিলের উদ্দেশ্যে রাত ৮টায় এবং মতিঝিল স্টেশন থেকে উত্তরা উত্তর স্টেশনের উদ্দেশ্যে রাত ৮টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে যায়।


আরও খবর
ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিবের ঢাকা সফর স্থগিত

বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪




তীব্র তাপদাহে সুখবর দিল আবহাওয়া অফিস

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

চলমান তাপদাহে অস্থির জনজীবন। এমন গরম থেকে রেহাই পেতে বৃষ্টির অপেক্ষায় রয়েছেন অনেকেই। এ পরিস্থিতিতে দমকা হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ শুক্রবার (০৫ এপ্রিল ) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খুলনা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ সময় দেশের অন্যান্য জায়গায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানায়, শনিবার (০৬ এপ্রিল ) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।


আরও খবর



মাথাপিছু ঋণ বেড়ে দেড় লাখ টাকা: সিপিডি

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক

Image

গত তিন বছরে মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণ প্রায় ৫০ হাজার টাকা বেড়েছে বলে জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থাটি বলেছে, তিন বছর আগে মানুষের মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ ছিল এক লাখ টাকা। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দেড় লাখ টাকা। শ্রীলঙ্কার মতো বাংলাদেশেও স্বল্পমেয়াদি ঋণ বাড়ছে, ফলে বাংলাদেশও শ্রীলঙ্কার মতোই বিপজ্জনক পথে আছে।

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) গুলশানের একটি হোটেলে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ ও ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি ও এশিয়া ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিকবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন সিপিডির চেয়ারম্যান ড. রেহমান সোবহান, সংস্থাটির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য; মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান।

সিপিডির চেয়ারম্যান ড. রেহমান সোবহান বলেছেন, আশির দশকে অনেক আফ্রিকান ও লাতিন আমেরিকান দেশ স্বল্পমেয়াদি ঋণ নিয়ে বিপদে পড়েছিল। সম্প্রতি এর বড় উদাহরণ শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশেও স্বল্পমেয়াদি ঋণ বাড়ছে, শ্রীলঙ্কার মতোই বিপজ্জনক পথে আছে এ দেশ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ঋণের বড় বাধা এখন ঋণগুলোর শর্ত এবং এর সঠিক বাস্তবায়ন।

আমরা যদি আশির দশকে ওপেকের সময় ঋণের সংকটের দিকে তাকাই, সেখানে দুটি পরিস্থিতি ছিল। একটি, লাতিন আমেরিকায় খুব বেশি ঋণ নিয়ে বিপদে পড়া। তারা বিপদে পড়েছিল স্বল্পমেয়াদি ঋণে, সেগুলো তাদের খুব সস্তায় দেওয়া হয়েছিল। ফলে তারা একসময় গিয়ে ঋণসংকটে পড়েছিল। একই ঘটনা শ্রীলঙ্কার ঋণ সংকটের। শ্রীলঙ্কার অনেক ঋণ স্বল্পমেয়াদি। শ্রীলঙ্কার একই সময় অনেক আফ্রিকান দেশেও একই সমস্যা তৈরি হয়েছে।’

ড. রেহমান সোবহান বলেন, একইভাবে বাংলাদেশও স্বল্পমেয়াদি ঋণ নিয়ে সংকটের পথেই আছে। এটা খুবই উল্লেখ করার মতো, এ ধরনের ঋণ এখন বাড়ছে। যেহেতু আমাদের রপ্তানি আফ্রিকার অনেক দেশের চেয়ে ভালো, তাই এ জায়গায় তেমন সংকট নেই।’

মূল প্রবন্ধে ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কয়েক বছর আগে পর্যন্ত আমাদের বিদেশি ঋণ ছিল সহনীয় পর্যায়ে। আমরা এখন যদি সতর্ক না হই, তাহলে বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে। তবে সরকার যে সতর্ক তা আইএমএফের কাছে ৪.৭ বিলিয়নের জন্য যে গেল সেটা থেকেই বোঝা যাচ্ছে।’

প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় তিনি বলেন, বিদেশি ঋণ শুধু বাংলাদেশের সমস্যা না, ১৯৮০ সালের দিকে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো বিদেশি ঋণ নিয়ে এ ধরনের বড় সমস্যায় পড়েছিল। সাম্প্রতিক ঋণ নিয়ে দেউলিয়া হয়ে পড়া গ্রিস বড় উদাহরণ। পাশাপাশি শ্রীলঙ্কা ও ঘানার মতো দেশের উদাহরণ তো আছেই।’

আন্তর্জাতিকভাবে এ প্রভাব পড়ার বৈশ্বিক কারণগুলো হলো—কভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাব, বিশ্বে মালামাল ও সেবার চাহিদা কমে যাওয়া। দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ কারণ—ঋণ ব্যবস্থাপনা অনেক দুর্বল, অনেক দেশ অদূরদর্শী ঋণ নিয়েছে। ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে কঠিন শর্তে ঋণ নেওয়া হয়েছে, মুদ্রার ওঠানামাও অনেক দেশে হয়েছে। এসব কারণ অভ্যন্তরীণ।’

গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়, জাতিসংঘের গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপ বলেছে, উন্নয়নশীল দেশগুলো উন্নত দেশের তুলনায় অনেক দ্রুত ও বেশি বিদেশি ঋণ নিয়েছে। অনেক উন্নয়নশীল দেশেই এ কারণে তা উদ্বেগের কারণ হয়েছে। ঋণের চাপে অনেকে আছে, অনেকে খেলাপি হয়েছে।

উন্নয়নশীল এসব দেশের সরকারি ঋণ ২০১০ সালে জিডিপির তুলনায় ৩৫ শতাংশ ছিল, ২০২১ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ শতাংশে। এর মধ্যে একই সময় দেশগুলোর বিদেশি ঋণ ১৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৯ শতাংশ হয়েছে। এসব বিদেশি ঋণের মধ্যে ব্যক্তি খাতের ঋণও একইভাবে বেড়েছে। একই সময় ব্যক্তি খাতের ঋণ ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬২ শতাংশ হয়েছে বলে উল্লেখ করেন এই অর্থনীতিবিদ।

বিশ্বব্যাংকের গবেষণার একটি অংশ তুলে ধরে ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে বিদেশি ঋণের স্থিতি বেড়েছে ১০৯ শতাংশ, যেটি দেশগুলোর জিডিপির ৩৩ শতাংশ। পাবলিক অ্যান্ড পাবলিকলি গ্যারান্টেড (পিপিজি) ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪৩.৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি।

আইএমএফের সতর্কবাণী উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইএমএফ এসব দেশকে সতর্ক করে একটি প্রতিবেদন বানিয়েছে। আমরা কি আরেকটি ঋণ সংকটের দিকে যাচ্ছি?

তার মতে, বাংলাদেশের ঋণ ও পরিশোধের বাধ্যবাধকতা বাড়ছে, যা সরকারকে অপর্যাপ্ত রাজস্ব আদায়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধের জন্য ক্রমাগত নতুন ঋণ নিতে বাধ্য করছে।

তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে আমরা পাকলিক ও পাবলিকলি গ্যারান্টিযুক্ত ঋণের দায়বদ্ধতার একটি বড় অংশ পরিশোধের জন্য ঋণ নিচ্ছি। তাই দ্রুত অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ বাড়ানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।’

সিপিডি জানিয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বৈদেশিক ঋণ এবং ঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতার হার বেড়েছে। ২০২৩ সালের জুনে বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি বিদেশি ঋণ ছিল ৯৮.৯ বিলিয়ন ডলার, যা একই বছরের সেপ্টেম্বরে ১০০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে।

অনুষ্ঠানে সিপিডি জানিয়েছে, ঋণ পোর্টফোলিওর গঠন দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। রেয়াতি ঋণের অনুপাত কমছে, অন্যদিকে রেয়াতি ও বাজারভিত্তিক ঋণের অংশ বাড়ছে। ঋণের শর্তাবলিও আরো কঠোর হচ্ছে।

বিশেষ করে জিডিপি, রাজস্ব আয়, রপ্তানি, রেমিট্যান্স ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্গে তুলনা করলে বৈদেশিক ঋণ ও ঋণ পরিশোধের দায়বদ্ধতা দ্রুত বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান।

এই অর্থনীতিবিদ বলেন, এর সঙ্গে ঋণ বহনের সক্ষমতা ও ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা উদ্বেগ তৈরি করেছে। দিন শেষে অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ গুরুত্বপূর্ণ, যা অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি উভয় ঋণ পরিশোধের জন্য বিবেচনা করতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, অভ্যন্তরীণ সম্পদের একটি ক্রমবর্ধমান অংশ দেশি ও বিদেশি ঋণের মূল ও সুদ পরিশোধে ব্যবহার করা হচ্ছে।

মেগাপ্রকল্প সংশ্লিষ্ট প্রতিটি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অর্থপাচারের সম্পর্ক আছে বলে মনে করেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, বড় আকারের অনেক প্রকল্পই অতিমূল্যায়িত করে খরচ বাড়ানো হয়েছে। আবার প্রকল্পের ভেতরে বাস্তবায়ন পর্যায়ে কোনো না কোনো স্বার্থগোষ্ঠীকে উৎসাহিত করা হয়েছে।

ড. দেবপ্রিয় বলেন, অন্যান্য দেশে জনগণের প্রাথমিক সঞ্চয়ের মাধ্যমে পুঁজি গড়ে উঠলেও বাংলাদেশে ব্যাংকের টাকা ফেরত না দিয়ে ও অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে জনসাধারণের টাকা লুটের মাধ্যমে পুঁজি গড়ে উঠেছে। বিদেশি ঋণ নেওয়া প্রকল্পগুলোর মাধ্যমেও ব্যক্তি খাতে পুঁজি গড়ে উঠেছে। এটা বিদ্যুৎ, জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতের জন্যই প্রযোজ্য।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে পুঁজি সঞ্চয়কারী অলিগার্ক তৈরি হয়েছে। এর ফলে রাজনৈতিক নেতারা যে আশায় এই প্রকল্পগুলো নিয়েছিলেন, সেটায় সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।

দেশি-বিদেশি ঋণ থেকে সরকারের দায় বৃদ্ধির প্রবণতা তুলে ধরে তিনি বলেন, বর্তমানে সরকারের মাথাপিছু বিদেশি ঋণ তিন হাজার ১০ ডলার। আর অভ্যন্তরীণ উৎসর ঋণ মিলে সরকারের মোট ঋণ দাঁড়ায় আট হাজার ৫০ ডলারে। স্বাধীনতার এত বছর পরে সরকারের মাথাপিছু ঋণ এক লাখ টাকায় উঠেছিল অথচ তা পরের তিন বছরেই দেড়গুণ হয়ে গেছে।

কভিড, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতার কারণে ঋণ বেড়েছে বলে অনেকে দাবি করলেও প্রকৃত কারণ ভিন্ন বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। ঋণ পরিশোধের চাপের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০১৮-১৯ সালেও সরকারের আদায় হওয়া রাজস্বের ২৬ শতাংশ ঋণ পরিশোধে ব্যয় হতো। অথচ এই হার এখন ৩৪ শতাংশে উঠেছে, যেখানে অভ্যন্তরীণ ঋণ যাচ্ছে ২৮ শতাংশ আর বিদেশি ঋণ সাড়ে ৫ শতাংশ।

বিদেশি ঋণ নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই বলে অনেকেই দাবি করলেও বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, ক্রেডিট রেটিং সংস্থা মোডি বা স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওরস হিসেবে বাংলাদেশের ক্রেডিট রেটিং কমছে বলে দাবি করেন ড. দেবপ্রিয়। সামষ্টিক অর্থনীতির অস্থিরতাসহ বিভিন্ন ধরনের নেতিবাচক ফলাফলের মধ্যেও বিপুল পরিমাণ ঋণে নেওয়া মেগাপ্রকল্প প্রকৃত সুফল দিতে পারছে না বলে তিনি মন্তব্য করে বলেন, বিনিয়োগ না বাড়লে প্রকল্পের ফলাফল পাওয়া যাবে না।

ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ জিডিপির ২৩.৪ থেকে ২৩.৮ শতাংশে আটকে আছে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে। গত দেড় দশকের সাফল্য কেন বিনিয়োগে প্রতিফলিত হয়নি? এফডিআই কেন জিডিপির ১ শতাংশে আটকে আছে? প্রশ্ন রেখে ড. দেবপ্রিয় বলেন, ২০২৩ সালের ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ জিডিপির অনুপাতে সরকারের হিসেবেই কমেছে। এ ছাড়া শিক্ষা, ট্রেনিং বা কর্মে নেই এমন মানুষের হার বেড়েছে, বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তাহীন পরিবারের সংখ্যাও বেড়েছে। ২৫ শতাংশের বেশি মানুষ দৈনন্দিন প্রয়োজনে ঋণ করে চলে।

বড় প্রকল্পে অর্থায়ন করতে গিয়ে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের ক্ষতি হয়েছে মন্তব্য করে ড. দেবপ্রিয় বলেন, শিক্ষায় গত ১৫ বছরে কোনোভাবেই জিডিপির ২ শতাংশের বেশি এবং স্বাস্থ্যে ১ শতাংশের বেশি বরাদ্দ হয়নি। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে অবহেলার প্রতিফলন এই এসভিআরএস প্রতিবেদনেও এসেছে বলে তিনি জানান। এই ধরনের সমস্যা সমাধানে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি যথাযথ কাজ করছে না বলে মন্তব্য করেন এই অর্থনীতিবিদ।

তিনি বলেন, স্বচ্ছতা নিশ্চিতের জন্য তিন মাস পর আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে অর্থমন্ত্রী বিবৃতি দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয় না। এ ছাড়া অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে কেবিনেটের সাব কমিটি ক্রয় কমিটিতে পরিণত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।


আরও খবর
ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম

বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪

ফের ২০ বিলিয়নের নিচে নামল রিজার্ভ

বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪




জনতা ব্যাংকের ভল্ট থেকে ৫ কোটি টাকা চুরি, তিন কর্মকর্তা আটক

প্রকাশিত:সোমবার ২৫ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৫ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

Image

সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে জনতা ব্যাংকের তামাই শাখা থেকে ৫ কোটি ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে শাখা ব্যবস্থাপকসহ তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সাধারণ ডায়েরির (জিডি) প্রেক্ষিতে ওই তিনজনকে (৫৪ ধারায়) আটক করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। পরে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

রবিবার (২৪ মার্চ) রাতে তাদের আটক করে আজ সকালে আদালতে পাঠায় পুলিশ। এরপর দুপুরের দিকে আদালত এই নির্দেশ দেন। এছাড়াও বিষয়টি দুদক দেখবে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেলকুচি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান ও আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান।

অভিযুক্তরা হলেন জনতা ব্যাংক তামাই শাখার ব্যবস্থাপক আল আমিন শেখ (৪২), সহকারী শাখা ব্যবস্থাপক রেজাউল করিম (৩৪) ও ব্যাংক কর্মকর্তা রাশেদুল হাসান (৩৪)।

জনতা ব্যাংক পিএলসি সিরাজগঞ্জ এরিয়া অফিসের উপ মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) নজরুল ইসলামের লিখিত অভিযোগ ও জিডির সূত্রে জানা গেছে, জনতা ব্যাংক তামাই শাখা পরিদর্শনে গিয়ে হিসাবে গরমিল ও সন্দেহ পরিলক্ষিত হলে গত রবিবার তামাই শাখায় উপস্থিত হয়ে লেনদেনের সমস্ত কিছু অডিট শেষে ক্যাশ ভোল্টে ৫ কোটি ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকা হিসেবে গরমিল পাওয়া যায়। এ সময় তামাই জনতা ব্যাংক শাখা ব্যবস্থাপক, সহকারী ব্যবস্থাপক ও অফিসারের কাছে জানতে চাইলে তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি এবং পরে তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেন। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে বেলকুচি থানায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পরে রাতে পুলিশ তাদের আটক করে আদালতে পাঠায়। যেহেতু বিষয়টি টাকা লেনদেন সংক্রান্ত তাই জিডির কপি দুদকে পাঠানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে বেলকুচি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান বলেন, আমরা জনতা ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার জিডির প্রেক্ষিতে জনতা ব্যাংকের তিন কর্মকর্তাকে আটক করি। ঘটনাটি অর্থ আত্মসাৎ সম্পর্কিত হওয়ায় এটা দুদক দেখবেন। এরপরও তারা যেহেতু অপরাধ করেছেন তাই তাদেরকে সকালে (৫৪ ধারায়) আটক করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, বিষয়টি দুদক দেখবে কিন্তু ধর্তব্য অপরাধ হওয়ায় থানা পুলিশ তাদেরকে ৫৪ ধারায় আদালতে প্রেরণ করেন। আদালত তাদেরকে জেলা হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

দুদকের পাবনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক (ডিডি) মো. খায়রুল হক বলেন, তাদের জিডির কপিটি হাতে এসেছে। এখন পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের অনুমতির জন্য কমিশনে আবেদন পাঠানো হবে। অনুমতি আসার পরে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জনতা ব্যাংক পিএলসি সিরাজগঞ্জ এরিয়া অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার নজরুল ইসলাম জানান, জনতা ব্যাংক ঢাকা অফিসের নির্দেশনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আরও খবর