সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক
দুই মন্ত্রীসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট
আদালতে রাজধানীর একজন ব্যবসায়ী বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেছেন। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট
রাজেশ চৌধুরীর আদালতে এর শুনানি হবে বলে জানা গেছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী
ছাড়াও সাবেক সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পুলিশের মহাপরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুন, যুগ্ম কমিশনার
বিপ্লব কুমার সরকার, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ ও ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানকে
আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা পুলিশ কর্মকর্তা বা পুলিশের সদস্য ও তৎকালীন সরকারের
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অজ্ঞাতনামা হিসেবে মামলায় আসামি করা হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর
দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করার পর এই প্রথম তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলা দায়ের করা হলো।
মামলার বাদী হয়েছেন, আদাবর এলাকার বাসিন্দা
ব্যবসায়ী এস এম আমীর হামজা শাতিল। তিনি একজন সচেতন নাগরিক হিসাবে একজন নিরীহ নাগরিক
হত্যার বিচার চেয়ে এই মামলা করেছেন। বাদী আমীর হামজা বলেন, ‘বিবেকের তাড়নায়
আমি এই মামলা করেছি।'
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে,
সম্প্রতি
কোটা সংস্কার আন্দোলনে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা মিছিল সমাবেশ করে। ওই সব শান্তপূর্ণ
মিছিলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। বহু ছাত্র জনতা নিহত ও আহত
হন। গত ১৯ জুলাই মোহাম্মদপুরে বসিলার ৪০ ফিট এলাকায় ছাত্র-জনতা শান্তপূর্ণ মিছিল সমাবেশ
করছিল। সেখানেও পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। রাস্তা পার হওয়ার সময় স্থানীয় মুদি দোকানদার
আবু সায়েদ মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। তিনি ঘটনাস্থলে মৃত্যুবরণ করেন।
মামলার আরজিতে বলা হয়, নিহত সায়েদকে তাঁর
গ্রামের বাড়িতে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার নতুন বস্তি প্রধান হাটে নিয়ে দাফন করা হয়। তার
মা, স্ত্রী, ছেলে সন্তান সেখানেই থাকেন। এ কারণে তারা ঢাকায় এসে মামলা করতে অপারগ।
এ জন্য বিবেকের তাড়নায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি এই মামলা করলেন।
মামলার অভিযোগে বাদী আরও বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা কোটা সংস্কার আন্দোলন কঠোর হস্তে দমন করার বারবার নির্দেশ দিয়েছেন। ওবায়দুল
কাদের ও আসাদুজ্জামান কামালের নির্দেশে পুলিশের আইজিপি ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অধীনস্থ
পুলিশদের নির্দেশ দিয়ে মিছিলে গুলি চালায়। পরস্পর যোগসাজশে আসামিরা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
কাজেই এর বিচার হওয়া প্রয়োজন।
থানায় এজাহার হিসেবে নেওয়ার জন্য মামলায়
আবেদন জানানো হয়েছে বলে বাদীর আইনজীবী মো. মামুন মিয়া জানান।