আজঃ শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
শিরোনাম

স্বরূপকাঠিতে ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের শপথগ্রহণ

প্রকাশিত:বুধবার ১৪ জুলাই ২০২১ | হালনাগাদ:বুধবার ১৪ জুলাই ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
হযরত আলী হিরু, স্বরূপকাঠি

Image

পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে নির্বাচিত ১০ টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্যদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকালে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে নব নির্বাচিত ১০জন চেয়ারম্যানকে শপথ বাক্য পাঠ করান পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন। আর ৯০ জন সাধারণ সদস্য ও ৩০ জন সংরক্ষিত মহিলা সদস্যদের শপথ পড়ান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোশারেফ হোসেন।

উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন নব নির্বাচিতদের সরকারি বিধি-বিধান মেনে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির উর্দ্ধে উঠে সততা ও নিষ্ঠার সাথে জনকল্যাণে কাজ করার নির্দেশনা দেন।

ইউএনও মো. মোশারেফ হোসেনের সভাপতিত্বে ও উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো জাহিদ হোসেনের সঞ্চালনে সংক্ষিপ্ত এ অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হক, পৌর মেয়র গোলাম কবির, ওসি আবির মোহাম্মদ হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো.আব্দুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট এস এম ফুয়াদ, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রনি দত্ত, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার কাজী মো. সাখাওয়াত হোসেন, প্রেসক্লাব সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম ও  নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান মো.আল আমিন প্রমুখ।

উল্লেখ্য, প্রথম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বরূপকাঠি উপজেলায় বলদিয়া ইউনিয়নে মো. সাইদুর রহমান, সোহাগদল ইউনিয়নে মো. আব্দুর রশিদ, স্বরূপকাঠি ইউনিয়নে মো. আল আমিন, আটঘর কুড়িয়ানা ইউনিয়নে মিঠুন হালদার, জলাবাড়ি ইউনিয়নে মো. তৌহিদুল ইসলাম, দৈহারী ইউনিয়নে মো. জাহারুল ইসলাম, গুয়ারেখা ইউনিয়নে মো. আব্দুর রব সিকদার, সমুদয়কাঠি ইউনিয়নে মো. হুমায়ুন কবির, সুটিয়াকাঠি ইউনিয়নে মো. রুহুল আমিন অসীম ও সারেংকাঠি ইউনিয়নে মো. নজরুল ইসলাম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।


আরও খবর



জিম্মি জাহাজ ছাড়তে ৫০ লাখ মার্কিন ডলার চেয়েছে জলদস্যুরা

প্রকাশিত:বুধবার ১৩ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৩ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ও জিম্মি নাবিকদের ছাড়তে ৫০ লাখ মার্কিন ডলার দাবি করেছে সোমালীয় জলদস্যুরা।

জাহাজে থাকা ২৩ নাবিকের মধ্যে ছিলেন চট্টগ্রামের আইনুল হক অভি নামের একজন নাবিক। বাংলাদেশি সময় বুধবার সকাল ৭টায় অভি তার মাকে এক মিনিটের একটি ভয়েস মেসেজ পাঠান।

ছেলে অভির ভয়েস মেসেজের বার্তা সম্পর্কে তিনি বলেন, আজ সকাল ৭টায় এক মিনিটের ভয়েস মেসেজ পাঠিয়েছে ছেলে। এতে সে বলে টাকা না দিলে তাদের সবাইকে মেরে ফেলবে জলদস্যুরা।

নাবিক অভির মা বলেন, জলদস্যুরা মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ লাখ মার্কিন ডলার চেয়েছে। এই অর্থ তাদের দিলেই মুক্তি মিলবে নাবিকদের।

মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বেলা দেড়টায় জাহাজটিতে উঠে নিয়ন্ত্রণ নেয় সোমালিয়ার জলদস্যুরা। জাহাজটিতে ৫৫ হাজার টন কয়লা রয়েছে। জাহাজের ২৩ জন নাবিকের সবাই বাংলাদেশি। জাহাজটি চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এস আর শিপিং লিমিটেডের মালিকানাধীন।

এ বিষয়ে কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, জলদস্যুরা নাবিকদের কোনো ক্ষতি করেনি। তাদের যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সে জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।

নাবিকদের খাবার সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়ার পর এখন রেশনিং করে চলতে হবে। ২০০ টন পানি দিয়ে সাধারণত এক মাস চলা যায়। রেশনিং করলে আরও বেশি দিন যাবে। একইভাবে ২৫ দিনের খাবার রেশনিং করে আরও কিছুদিন চালিয়ে নেওয়া যাবে।


আরও খবর



সর্বোচ্চ গতিতে বল করে রেকর্ড গড়লেন প্রোটিয়া পেসার

প্রকাশিত:বুধবার ০৬ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৬ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক

Image

ক্রিকেটে নতুন রেকর্ড গড়া এবং ভাঙা প্রতিদিনের ঘটনা। কখনও নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার রেকর্ড, কখনও সেটি অন্যদের ছাড়িয়ে যাওয়ার। তেমনই এক রেকর্ড বইয়ে নাম লিখিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার শবনিম ইসমাইল।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) ভারতের ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট নারী আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে দিল্লি ক্যাপিটালসের বিপক্ষে ইতিহাসের সবচেয়ে দ্রুতগতির বল করেন শবনিম। তার বলের গতি ছিল ঘণ্টায় ১৩২.১ কিলোমিটার (৮২.০৮ মাইল প্রতি ঘণ্টায়), যা নারী ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুতগতির বোলিং ডেলিভারি। এর আগে নারীদের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ গতির বল ছিল ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার। এবার সেটি টপকে নতুন রেকর্ড গড়লেন প্রোটিয়া পেসার।

তার রেকর্ডগড়া বলে ব্যাট করেন দিল্লির অধিনায়ক মেগ ল্যানিং। যদিও বল ব্যাট লাগাতে পারেননি অজি তারকা। সরাসরি ল্যানিংয়ের প্যাডে আঘাত করে। এর আগে নারীদের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ গতির বল ছিল ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার। এবার সেটি টপকে নতুন রেকর্ড গড়লেন প্রোটিয়া এই নারী পেসার।

এ দিকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও সর্বোচ্চ গতির বলের রেকর্ড রয়েছে শবনিম ইসমাইলের দখলেই। ২০১৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১২৮ কিলোমিটার গতিতে বল করেছিলেন তিনি। অন্যদিকে বাংলাদেশের জার্সিতে সর্বোচ্চ ১২২ কিমি গতিতে বল করার রেকর্ড পেসার জাহানারা আলম।


আরও খবর
ডি মারিয়াকে হত্যার হুমকিদাতা গ্রেফতার

বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪




দ্বিতীয়বার ময়মনসিংহের নগরপিতা হলেন ইকরামুল হক টিটু

প্রকাশিত:শনিবার ০৯ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৯ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

Image

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ঘড়ি প্রতীকের মেয়রপ্রার্থী ইকরামুল হক টিটু প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে বড় ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন। আজ শনিবার দিনভর ইভিএমে ভোটগ্রহণ শেষে ফলাফল ঘোষণা শুরু করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন চৌধুরী। ময়মনসিংহের টাউন হলের তারেক স্মৃতি মিলনায়তন থেকে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। 

আরও পড়ুন>> কুমিল্লা সিটির প্রথম নারী মেয়র তাহসীন বাহার

ময়মনসিংহের ১২৮টি কেন্দ্রের ফলাফলে ঘড়ি প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ইকরামুল হক টিটু পেয়েছেন ১ লাখ ৩৫ হাজার ৯৫৯ (এক লাখ পয়ত্রিশ হাজার নয়শত উনষাট) ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হাতি  প্রতীকের সাদেকুল হক খান টজু পেয়েছেন ৩৪ হাজার ৩৯৫ (চৌত্রিশ হাজার তিনশত পঁচানব্বই) ভোট। ১০ হাজার ৬৪৩ (দশ হাজার ছয়শ তেতাল্লিশ) ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী এহতেশামুল আলম। লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী শহিদুল ইসলাম ১ হাজার ২৭৬ (এক হাজার দুইশত ছিয়াত্তর) ভোট পেয়ে চতুর্থ হয়েছেন। পঞ্চম হয়েছেন হরিণ প্রতীকের প্রার্থী কৃষিবিদ রেজাউল করিম। তিনি পেয়েছেন ১ হাজার ৪৫৮ (এক হাজার চারশ আটান্ন) ভোট।

ইকরামুল হক টিটু জেলা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১৮ সালে তিনি ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রথম প্রশাসক এবং ২০০৯-২০১৮ সাল পর্যন্ত বিলুপ্ত পৌরসভার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে তিনি ২০১৯ সালে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রথম মেয়র হিসাবে নির্বাচিত হন।


আরও খবর



এনআইডি সংক্রান্ত দুর্নীতিতে কোনো ছাড় দেব না: সিইসি

প্রকাশিত:শনিবার ০২ মার্চ 2০২4 | হালনাগাদ:শনিবার ০২ মার্চ 2০২4 | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংক্রান্ত দুর্নীতিতে আমরা কোনো ছাড় দেব না। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করতে দ্বিধান্বিত হব না।

শনিবার (২ মার্চ) জাতীয় ভোটার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন হুঁশিয়ারি দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

তিনি বলেন, এনআইডির গুরুত্ব অনেক বেড়েছে। এটা এখন অপরিহার্য। সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়ে অনেক সময় সংকট দেখা যায়। এটা এখনো যায়নি। তবে আগের চেয়ে এনআইডি এখন অনেকটাই সুষ্ঠু অবস্থায় এসে পৌঁছেছে। এটা ছাড়া অনেক কাজ এখন আমিও করতে পারব না।

সিইসি বলেন, খুব বেশি নয়, যারা অতি চালাক তারা একাধিক কার্ড করে ফেলেন। তাই আমাদের কর্মকর্তারা সতর্কতার সঙ্গে কাজ করবেন। সম্পত্তি বেহাত করার জন্য যে এনআইডি কার্ড করা হয় আমি হয়তো ভুল করে দিতে পারি। কিন্তু সচেতনভাবে অপরাধের সঙ্গে অংশ হিসেবে যদি এটা আমরা করে থাকি তাহলে আমাদের টলারোন্স জিরো হবে। আমরা ওই ধরনের কর্মকর্তাদের পুলিশে হস্তান্তর করতে দ্বিধান্বিত হব না।

তিনি বলেন, এখন এনআইডিরই বাই প্রোডাক্ট হয়ে গেছে ভোটার কার্ড। এনআইডি বিষয় আজ নয়, আজ ভোটার দিবস। কীভাবে এটি বর্তমান পর্যায়ে এলো এটি ইতিহাসের একটা বিষয়।

সভায় অন্যদের মধ্যে নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান, মো. আলমগীর, রাদেশা সুলতানা, ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলমসহ সংস্থাটির সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।


আরও খবর



জিআই পণ্যের তালিকায় উঠছে রংপুরের হাঁড়িভাঙা আম

প্রকাশিত:রবিবার ১০ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১০ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

বসন্তময় ঋতু বৈচিত্র্যের এই ফাগুনে আমগাছের থোকায় থোকায় ভরা মুকুলে স্বপ্ন বুনছেন রংপুরের চাষিরা। বছরের নির্দিষ্ট এই সময় জুড়ে তাই চাষি তো বটেই, কম-বেশি সব শ্রেণির মানুষের দৃষ্টি থাকে সবুজ পাতায় ঢাকা আমগাছের শাখা-প্রশাখায়। প্রকৃতি বৈরি না হলে এবারও সাধারণ আমের পাশাপাশি হাঁড়িভাঙা আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন বাগান মালিক ও চাষিরা। হাঁড়িভাঙা আমের মুকুলে এবার নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন উত্তরের চাষিরা। এদিকে শতরঞ্জির পর এবার জিআই পণ্যের তালিকায় যুক্ত হতে যাচ্ছে বিখ্যাত আম হাঁড়িভাঙা।

সম্প্রতি রংপুর সদরের পালিচড়া, বদরগঞ্জের শ্যামপুর, মিঠাপুকুরের খোড়াগাছসহ বিভিন্ন এলাকা যেতে দেখা মিলে সারি সারি গাছ। রাস্তার দুপাশে যেন হাঁড়িভাঙ্গা আম গাছের সবুজ বিপ্লব। ধানসহ বিভিন্ন ফসলি জমির আইলে আইলে লাগানো হয়েছে আমের গাছ। বাদ পড়েনি বসতবাড়ির পরিত্যক্ত জায়গা, পুকুরপাড়, বাড়ির উঠান। এখন বসন্ত বাতাসে আম গাছে দোল খাচ্ছে হাঁড়িভাঙা আমের মুকুল। সদ্য মুকুল ফোটার এমন দৃশ্য এখন শুধু বিস্তৃত গ্রামীণ জনপদেই নয়, শহরের গাছে গাছেও সুঘ্রাণ ছড়াচ্ছে আমের মুকুল। একই চিত্র মিঠাপুকুরের আখিরাহাট, মাঠেরহাট, বদরগঞ্জের গোপালপুর, নাগেরহাট, সর্দারপাড়া, রংপুর সদরের সদ্যপুষ্করনী ইউনিয়নের কাঁটাবাড়িসহ আশপাশের এলাকাতেও।

ইতোমধ্যে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে হাঁড়িভাঙা আম এখন বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ার খবরে আনন্দিত এই অঞ্চলের মানুষ। অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের কারণে গত বছর বাংলাদেশ সরকার ভারত, ব্রিটেন, তুরস্ক ও আমেরিকার রাষ্ট্রপ্রধানসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের এই আম উপহার হিসেবে পাঠিয়েছে।

গত কয়েক বছরের মতো এবারও হাঁড়িভাঙ্গার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে হাঁড়িভাঙা আমের দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কা কাটছে না চাষি এবং ব্যবসায়ীদের। প্রতি বছর কম বেশি শত কোটি টাকার ওপরে বিক্রি হয় হাঁড়িভাঙা আম। কিন্তু পদাগঞ্জ হাটের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় আছেন চাষিরা। তারা মনে করছেন, সঠিক সময়ে আম বাজারজাত ও পরিবহন সুবিধা বাড়ানো না গেলে অনেকেই লোকসানে পড়বেন।

হাঁড়িভাঙা আমের গোড়াপত্তন করেছিলেন খোড়াগাছ ইউনিয়নের তেকানি গ্রামের নফল উদ্দিন পাইকার নামে এক বৃক্ষবিলাসী মানুষ। স্বাধীনতার আগের বছর ১৯৭০ সালে নফল উদ্দিন ১২০ বছর বয়সে মারা যান। এখন তার লাগানো হাঁড়িভাঙা গাছটির বয়স ৬৮ বছর।

মাতৃগাছটির সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে নফল উদ্দিন পাইকারের ছেলে আমজাদ হোসেন পাইকার বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু করে মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে আমের মুকুল এলে কৃষকরা আম বাগানের পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ঝড় কিংবা বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আমের ফলন ভালো হবে। হাঁড়িভাঙা আম এই অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

একই ইউনিয়নের তেকানি গ্রামের আমচাষি শাহ্জাহান মিয়া। বছর দশেক আগেও তিনি শুধু ধান, ভুট্টা আর পাটচাষ করতেন। কিন্তু গ্রামে হাঁড়িভাঙ্গা আম গাছের বাগানের পর বাগান দেখে তিনিও আমের বাগান গড়ে তোলেন।

অর্থনৈতিকভাবে লাভবান এই আমচাষি বলেন, এবার আমের মুকুল ভালো হইচে। খালি হামার গ্রামোতে নোয়ায় এ্যলা হাঁড়িভাঙ্গা আম বালুয়া, শ্যামপুর, হেলেঞ্চ, পাইকারেরহাট, জারুল্লাপুর, খোঁড়াগাছ, গোপালপুর, সরদারপাড়া, লালপুর, পদাগঞ্জ, দুর্গাপুরসহ কয়েকটা গ্রামোত চাষ হওচে। গ্রামোত একটা বাড়িও খুঁজি পাওয়া যাবার নায় যে বাড়ির খুলিত হাঁড়িভাঙার গাছ নাই।

হাঁড়িভাঙা আমকে ঘিরে বেকারের সংখ্যাও কমেছে রংপুরসহ আশপাশের কয়েকটি উপজেলায়। বিশেষত মিঠাপুকুরের লালপুর, পদাগঞ্জ, তেকানিসহ আশপাশের গ্রামের বেকার যুবকরা এখন আম ব্যবসায় জড়িয়ে বেকারত্ব দূর করেছেন। অনেকে আবার উদ্যোক্তা হিসেবে হাঁড়িভাঙার বাজার সম্প্রসারণ ও চাষাবাদ বাড়ানোর জন্য কাজ করছেন।

আখিরাহাটের বাসিন্দা আব্দুস সালাম ১৯৯২ সাল থেকে হাঁড়িভাঙ্গা আমের চাষ করে আসছেন। শুধু চাষবাদ নয়, এই অঞ্চলের হাঁড়িভাঙা সম্প্রসারণে তার অবদান অনস্বীকার্য। তার হাত ধরেই এ অঞ্চলের মানুষ এখন অন্যান্য ফসলের চেয়ে বেশি লাভের আশায় জেলার উঁচু-নিচু ও পরিত্যক্ত জমিতে প্রতি বছর হাঁড়িভাঙা আম চাষের দিকে ঝুঁকছেন।

আব্দুস সালাম সরকার বলেন, আমি প্রায় ৩৪ বছর ধরে হাঁড়িভাঙা আমের চাষ করছি। আমাকে দেখে এখন রংপুরে কয়েক লাখ  হাঁড়িভাঙা আমের গাছ রোপণ করেছে আমচাষিরা। আমার ২৫টির বেশি বাগান রয়েছে। এ রকম অনেকের আম বাগান রয়েছে। পুরো জেলায় এখান প্রতি বছর প্রচুর আম উৎপাদন হয়। টেকসই অর্থনীতির জন্য আমি শুরু থেকেই  হাঁড়িভাঙা আমের সংরক্ষণের জন্য হিমাগার স্থাপন, আধুনিক আমচাষ পদ্ধতি বাস্তবায়ন, গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনসহ  হাঁড়িভাঙাকে জিআই পণ্য হিসেবে ঘোষণার দাবি করে আসছিলাম। সরকার একটু দৃষ্টি দিলেই হাঁড়িভাঙাকে ঘিরেই এই অঞ্চলের অর্থনীতি আরও সচল হবে।

কৃষি বিভাগ ও আমচাষিরা বলছেন, জুনের শেষ সপ্তাহে বাজারে মিলবে পরিপক্ক হাঁড়িভাঙা আম। এর আগে বাজারে হাঁড়িভাঙা আম পাওয়া গেলেও তা অপরিপক্ক হবে। হাঁড়িভাঙার প্রকৃত স্বাদ পেতে জুনের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হবে। বর্তমানে বাগানগুলোতে পরিচর্যা চলছে। নির্ধারিত সময়ে আম বাগান মালিক ও চাষিরা গাছ থেকে হাঁড়িভাঙা আম পারতে পারবেন। এরপর থেকে শুরু হবে বাজারজাত।

গত বছরের চেয়ে এবার হাঁড়িভাঙা আমের লক্ষ্যমাত্রা অনেকাংশে বেড়ে যাবে বলছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ওবায়দুর রহমান মণ্ডল।

তিনি বলেন, ঠিক গত অর্থবছরে রংপুর অঞ্চলে ২ হাজার ৫৩৭ হেক্টর জমিতে হাঁড়িভাঙা আমের আবাদ হয়েছিল। গতবছরের চেয়ে এই বছর হাঁড়িভাঙা আমের ফলন বেশি আসবে। কারণ গতবছর যেই বাগানগুলো ছোট ছিল সেগুলোর ফল ধরবে এবং আমের উৎপাদন শুরু হবে। যার কারণে গত বছরের চেয়ে এই বছরে হাঁড়িভাঙা আমের উৎপাদন বেড়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, রংপুরে হাঁড়িভাঙা আমের গাছ রয়েছে ২ হাজার ৫৩৭ হেক্টর জমিতে। যেখানে গত বছর উৎপাদন হয়েছিল প্রায় ৩৫ হাজার মেট্রিক টন আম। হাঁড়িভাঙার সবচেয়ে বড় যেটা খবর সেটা হচ্ছে বিগত কয়েকবছর যাবৎ আমরা এই পণ্যটাকে কৃষি বান্ধব সরকারের যে বিভিন্ন কৃষি পণ্য জেলায় জিআই পণ্য হিসেবে ঘোষণা হতে যাচ্ছে তার প্রক্রিয়ার মধ্যে রেখেছি।

অন্যদিকে উত্তরের অর্থনীতিতে হাঁড়িভাঙা আশীর্বাদ হয়ে এসেছে বলে জানান রংপুরের জেলা প্রশাসক মোবাশ্বের হাসান। এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, প্রতি বছর হাঁড়িভাঙা আমের বাম্পার ফলন হয়। এবার হাঁড়িভাঙা আম নিয়ে সুখবর রয়েছে। কারণ জিআই পণ্য ঘোষণা হওয়ার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। খুব দ্রুত ভালো খবর পাব আশা রাখি।

তিনি আরও বলেন, এটার কার্যক্রম প্রায় সমাপ্তের পথে। আগামী দুই মাসের মধ্যে হাঁড়িভাঙার আম জিআই পণ্যে রূপান্তরিত হওয়ার অফিশিয়াল ঘোষণা আসবে।


আরও খবর