পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে নিখোঁজের চার
দিন পর মো. হাসানুর রহমান অপু (৩৫) নামে এক যুবকের মাটিচাপা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার সকালে উপজেলার সমুদয়কাঠি ইউনিয়নের দক্ষিন সেহাংগল সুন্দর গ্রামের রুমান শেখ
এর বাড়ির খড়ের গাদার পাশের মাটি খুড়ে থেকে ওই লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় এলাকার বিক্ষুব্ধ
জনতা রুমানের মা লিপি বেগম বোন সুমনা আক্তার ও ভাতিজি সাদিয়া আক্তারকে আটক করে পুলিশে
সোপর্দ করেছে। অভিযুক্ত রুমান পালাতক রয়েছে। নিহত মো. হাসানুর রহমান অপু সমুদয়কাঠি ইউনিয়নের সেহাংগল গ্রামের
সাবেক ব্যাংক কর্মচারী খুলনা প্রবাসী আ. জব্বারের ছেলে। সে পেশায় একজন ব্যবসায়ী এবং
তার স্ত্রী এক কন্যা ও এক ছেলে সন্তান রয়েছে। নিহত অপু এবং রুমান ব্যবসায়িক বন্ধু,
তারা একত্রে সুপারীর ব্যবসা করতো।
পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে নিখোঁজের চার
দিন পর উদ্ধার হওয়া অপুর ফাইল ছবি (বামে), ঘটনার পর পলাতক অভিযুক্ত রুম্মান (ডানে)।
সরেজমিনে জানা যায়, হাসানুর রহমান অপুকে
গত বুধবার একই গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মকবুল হোসেন শেখের ছেলে রুমান ডেকে নেয় বলে
জানান নিহতের মামাতো ভাই আজাদ। সেই থেকে অপু নিখোঁজ রয়েছে। পরদিন বৃহস্পতিবার নিহতের
স্ত্রী এ বিষয়ে খুলনা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করেন। শনিবার সকালে ওই গ্রামের জহির
নামের এক ছেলে রুমানের বাড়ির পাশের বাগানে সুপারি পাড়তে গেলে খড়ের গাদার কাছে দুর্গন্ধ
পায়। বিষয়টি সন্দেহজনক হলে জহির পার্শ্ববর্তী মাদ্রাসার সামনে থাকা লোকজনকে জানালে
তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটি খুঁড়ে লাশ দেখতে পেয়ে ডাক চিৎকার দেয়। এ সময় তাদের ডাক চিৎকার
শুনে শত শত মানুষ ঘটনাস্থলে ছুটে এসে অপুর লাশ দেখে বিক্ষুব্ধ হয়ে রুমানের ঘর ঘেরাও
করে এবংসেখানে থাকা রুমানের দুটি মোটরসাইকেল
পুড়িয়ে দেয়। পরে স্থানীয়রা রুমানের মা লিপি
বেগম, বোন সুমনা আক্তার ও ভাতিজি সাদিয়া আক্তারকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে
গিয়ে অপুর লাশ উদ্ধার করে লাশ ও আটককৃতদের থানায় নিয়ে যায়। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে পিরোজপুরের
পুলিশ সুপার মো. সফিউর রহমান ও সহকারী পুলিশ সুপার (নেছারাবাদ- কাউখালী সার্কেল) সাবরিনা
মেহেবুবা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এ বিষয় নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি) থানার ওসি
মো. ছরোয়ার হোসেন জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়না
তদন্তের জন্য পিরোজপুর মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের
জন্য রুমানের পরিবারের তিনজনকে আটক করা হয়েছে। অভিযুক্ত রুমান পুলিশের নজরদারীতে আছেন
দ্রুততম সময়ের মধ্যেই তাকে গ্রেফতার করা হবে।
প্রসঙ্গত ওই এলাকার দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী
রুমান এরপূর্বে সেহাংগলের মা-মেয়ে জোড়া খুনের
প্রধান আসামী। সে ওই মামলায় জামিনে থেকে এলাকায় নানা প্রকার অপকর্ম চালিয়ে আসছে।