সম্প্রতি আরাফাত নতুন একটি বউ গাড়ী কিনলে ওই তিন ব্যাক্তি পূর্বের ন্যায় তার কাছে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে। উপায়ন্তর না দেখে আরাফাত বিষয়টি পৌর মেয়র গোলাম কবির
পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে রিক্সা চালানোর ক্ষেত্রে চালকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বরূপকাঠি পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের রিক্সা চালক মো. আরাফাত হোসেন বাদী হয়ে মো. মোস্তফা, আব্দুস সালাম ও নূর ইসলাম নামের তিন ব্যাক্তির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে নেছারাবাদ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। নেছারাবাদ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবির মোহাম্মদ হোসেন অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
থানায় দায়ের হওয়া অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, স্বরূপকাঠি পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের আব্দুল আউয়ালের ছেলে আরাফাত হোসেন (৩০) কিছুদিন পূর্বে জীবিকার তাগিদে একটি বউ গাড়ি (রিক্সা) ক্রয় করে চালানো শুরু করে। এসময় রিক্সা চালাতে হলে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে স্বরূপকাঠি পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের মৃত শওকত আলীর ছেলে মো. মোস্তফা (৫৫), আব্দুল খালেকের ছেলে আব্দুস সালাম (৪৫) ও উপজেলার কামারকাঠি এলাকার মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে নূর ইসলাম। অন্যথায় রিক্সা চালাতে দেয়া হবেনা মর্মে হুমকি দেয়। ভয়ে আরাফাত তাদের দাবীকৃত পাঁচ হাজার টাকা তাদের দিয়ে দেয়। এর কিছুদিন পর ওই গাড়ীটি পুরোনো হলে নতুন একটা গাড়ী ক্রয়ের উদ্দেশ্যে সেটা বিক্রি করলে ওই তিন ব্যাক্তি তার কাছে আরো দুই হাজার টাকা চাঁদা দাবী করলে আরাফাত তাদের এক হাজার টাকা প্রদান করে।
সম্প্রতি আরাফাত নতুন একটি বউ গাড়ী কিনলে ওই তিন ব্যাক্তি পূর্বের ন্যায় তার কাছে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে। উপায়ন্তর না দেখে আরাফাত বিষয়টি পৌর মেয়র গোলাম কবিরকে জানালে মেয়র ঘটনাটি শুনে তাকে ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য থানায় যাবার পরামর্শ দেয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধীক রিক্সা চালকরা অভিযোগ করেন এ উপজেলার পূর্ব পাড়ে রিক্সা চালাতে হলে ওই সকল ব্যাক্তিকে এভাবে চাঁদা দিয়ে রিক্সা চালাতে হয়। এটা এখন এক প্রকারের নিয়মে পরিনত হয়েছে।
গতকাল রবিবার সকালে আল আমিন নামের এক বৌ গাড়ি চালক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে শিশু রোগী সহ দুই মহিলা যাত্রী নিয়ে সেহাংঙ্গল যাবার সময় অভিযুক্ত মোস্তফা স্বরূপকাঠি কেন্দ্রিয় পূজা মন্দিরের কাছে গাড়িটি আটকায়। এসময় ওই যাত্রীরা রোগীর কথা উল্লেখ করে গাড়ীটি ছেড়ে দিতে অনুরোধ করলেও মোস্তফা বেশ সময় গাড়িটি আটকিয়ে রাখেন। গাড়ী আটকানোর কারণ জানতে চাইলে ওই চালক আল আমিন জানায় তিনি পূর্বে ভ্যানগাড়ি চানাতেন সেসময় তিনি মোস্তফাকে টাকা দিয়েছেন এখন বৌ গাড়ি কিনলে মোস্তফা আবার তার কাছে তিন হাজার টাকা চাঁদা দাবী করছে সেই টাকার জন্যই তার গাড়ী আটকানো হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে পৌর মেয়র গোলাম কবির বলেন, ওই রিক্সা চালক বিষয়টি নিয়ে আমার কাছে আসলে প্রাথমিকভাবে আমি এর সত্যতা খুজে পাই তাই আইনি ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য তাকে থানায় যাবার পরামর্শ দেই। পরবর্তীতে আরও কয়েকজন চালক একই অভিযোগ নিয়ে আমার কাছে আসলে তাদেরকেও একই পরামর্শ দেয়া হয়। এছাড়াও এখানে রিক্সা চলাচলের ক্ষেত্রে চাঁদা উত্তোলন, অতিরিক্ত ভাড়া সহ বেশ কিছু অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অতিদ্রুতই এসকল অনিয়ম বন্ধে কার্যকরী ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।
এ ব্যাপারে নেছারাবাদ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবির মোহাম্মদ হোসেন বলেন, এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে চাঁদাবাজীর ক্ষেত্রে কাউকে কোন প্রকার ছাড় দেয়া হবেনা। বিষয়টি তদন্তপূর্বক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।