সিলেট ও ভারতের মেঘালয় রাজ্যে টানা বৃষ্টিপাতে পাহাড়ি ঢলের পানি বাড়তে শুরু করেছে সিলেট শহরসহ আশপাশের বিভিন্ন উপজেলায়। এতে সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলার বেশ কয়েকটি জায়গা প্লাবনের কবলে পড়েছে। অনেক জায়গায় বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। এদিকে গত পাঁচ থেকে ছয় দিনের অবিরাম বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে সুরমার পানির বিপৎসীমা যেখানে ১২ দশমিক ৭৫ মিটার, সেখানে সোমবার বিকেল ৩টায় পাওয়া গেছে ১৪ দশমিক ২৭ মিটার।
সরেজমিনে দেখা যায়, সিলেট নগরীর মাছিমপুর, ছড়ারপার, কালীঘাট, কাজিরবাজার, শেখঘাট, মোল্লাপাড়া, ঘাসিটুলা লামাপাড়া, লালদীঘিরপাড় এলাকায় ঢুকে পড়েছে বন্যার পানি।
নগরীর লালদীঘির পাড় এলাকার বাসিন্দা মামুন আহমদ বলেন, দুপুরের পর থেকেই আমাদের এলাকার বিভিন্ন জায়গায় পানি বাড়তে শুরু করেছে। এই পানি বাড়ার হার অনেক বেশি মনে হচ্ছে। অনেকের বাসাবাড়িতে পানি ঢুকেছে বলেও জানান তিনি। জৈন্তাপুর, কোম্পানিগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাটের বিভিন্ন নদ-নদী ও খালের পানি অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। এসব জায়গায় নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া সিলেট সদর উপজেলাসহ বিভিন্ন হাওরের পানিও বেড়েছে।
আবহাওয়া পরিস্থিতি নিয়ে সিলেটের আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ চৌধুরী বলেন, গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণের কারণেই মূলত সিলেটের বিভিন্ন জায়গায় পানি বেড়েছে। গতকাল থেকে সিলেটে বৃষ্টিপাত তুলনামূলক কম হওয়ায় আজকের আবহাওয়া দুই দিন ধরে ভালো।
এদিকে উজানী ঢলের কারণে হঠাৎ বেড়েছে সিলেটের সুরমা নদীর পানি। তিন দিন আগেও যেখানে পানি নদীর পাড় থেকে কয়েক ফুট নিচে ছিল, সেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে সিলেট জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমদ বলেন, সিলেটের নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে, এটি দুশ্চিন্তার কারণ। তিনি আরও জানান, ভারতের মেঘালয় রাজ্যে প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আর সেই পানি উজান বেয়ে বাংলাদেশে আসছে। যদি ভারতের মেঘালয় রাজ্যে বৃষ্টি না কমে, এই পানি কমার কোনো সম্ভাবনা নেই।
এই পানি বাড়াকে আগাম বন্যা হিসেবে চিহ্নিত করবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, গ্রীষ্মকালে এ রকম বৃষ্টিপাত ও নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়া নিঃসন্দেহে একটু চিন্তার বিষয়। এ সময় সাধারণত উজানের পানির ঢল নামলে সাময়িকভাবে কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়ে আবার আগের অবস্থায় ফিরে যায়। কিন্তু টানা বর্ষণ আর ঢলের কারণে সিলেটের সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১ দশমিক ৫ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমার পানির বিপৎসীমা যেখানে ১২ দশমিক ৭৫ মিটার, সেখানে আজ বিকেল ৩টায় পাওয়া গেছে ১৪ দশমিক ২৭ মিটার।