প্রচণ্ড তাপদাহে একটু শীতল ছায়া আর তৃষ্ণা নিবারণের জন্য সবাই যখন পানীয় খুঁজছেন তখন সেই চাহিদা মেটাচ্ছে তালশাঁস। এক সময় প্রচন্ড গরমে জনসাধারণের তৃষ্ণা নিবারণের অন্যতম পানীয় ছিল ডাবের পানি। কিন্তু এ বছর ডাবের দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেকের ক্রয় ক্ষমতার নাগালের বাহিরে চলে গেছে। ঠিক সেই জায়গায়টা দখল করে নিয়েছে তালশাঁস। দামে সস্তা হওয়ায় সবার কাছে প্রিয় হয়ে উঠেছে তালশাঁস। তীব্র গরম। ঘর থেকে বের হলেই মনে হচ্ছে অগ্নিকুণ্ড। একেবারেই হাঁসফাঁস অবস্থা।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার তালশাঁস বিক্রেতারা বলেন, মূলত সারা বছরই ডাব বিক্রি করি কিন্তু এ বছর ডাবের দাম বেশি হওয়ায় বিক্রি কমে গেছে। এখন তালশাঁস বিক্রি করি। দামে কম হওয়ায় প্রতিদিন বেশ ভালোই বিক্রি হয়। প্রতিদিন আনুমানিক পাঁচ শতাধিক তালশাঁস বিক্রি করছি।
তারা আরও বলেন, সাইজ অনুযায়ী ১০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২০ টাকার মধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে তালশাঁস। এক একটি তালের ফলে দুই-তিনটি করে শাঁস পাওয়া যায়। ভ্রাম্যমাণ তালশাঁস বিক্রেতা রফিক জানান, আগে স্থানীয় একটি ইটভাটায় কাজ করতেন। এখন ভ্যানগাড়িতে করে তালশাঁস বিক্রি করছেন।
তিনি আরোও জানান তালগাছের মালিকের কাছ থেকে প্রতি পিস ৫ টাকা দামে ক্রয় করেন তিনি। তবে গাছে উঠানোর জন্য তার আলাদা লোক ভাড়া করতে হয়। তাকে গাছ প্রতি দিতে হয় একশ টাকা। সবমিলিয়ে প্রতি পিসে ৭ টাকার মতো খরচ হয়।
আরও পড়ুন >> ৫ সিটিতে নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে চাই: ইসি
ক্রেতা আল আমীন বলেন, অন্যান্য জিনিসের যে দাম তার থেকে এগুলো অনেক কম। এছাড়া বাচ্চারও পছন্দ করে। এটাতে নেই কোনো ভেজাল, ফরমালিন, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক। একদম প্রাকৃতিক একটি খাবার পানীয়। তাই অনেকগুলো কিনে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছি।
ডাঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তালশাঁস স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এটার কোরো খারাপ দিক নেই। তালের শাসের পুষ্টি গুণ অনেক। প্রচণ্ড গরমে কচি তালের শাস এবং এর ভেতরের মিষ্টি পানি তৃষ্ণা মিটিয়ে শরীরে এনে দেয় আরামদায়ক অনুভূতি। তিনি আরো বলেন, তালের শাসে আশ থাকায় এটি হজমে সহায়ক। তালের শাস হাড় গঠনেও দারুণ ভূমিকা রাখে। কচি তালের শাস রক্তশূন্যতা দূর করে। মুখের রুচি বাড়ায়। এতে সুগার কম থাকায় ডায়াবেটিক রোগিরাও খেতে পারে। গরমে পানি শূন্যতা পূরণে খুবই কার্যকরী।