জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার রাউতনগর কুলিক নদীর ব্রিজটি সংস্কারের অভাবে দীর্ঘ ৩৬ বছর ধরে এভাবেই পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। সেতু নির্মাণ হবে এ আশায় ছত্রিশ বছর ধরে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন এলাকাবাসী। স্থানীয়দের কাছে সেতুটি যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা।
১৯৮৬ সালে মানুষের চলাচলের কথা চিন্তা করে দেড়শ মিটারের একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। ওই বছরেই ভয়াবহ বন্যায় ব্রিজটি দুমড়ে-মুচড়ে ভেঙে যায়। মধ্যখানে পড়ে থাকে প্রায় ৩০-৪০ মিটার সেতুর অবশিষ্ট অংশ এবং বিছিন্ন হয়ে পড়ে দু'পাড়ের যোগাযোগ ব্যবস্থা। তখন থেকেই জনবহুল ঐ দুই ইউনিয়নের মানুষ অদ্যাবধি এ চরম দুর্ভোগের মোকাবেলা আর আবেদন-নিবেদন করতে করতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। এরপরও মেরামত কিংবা নতুন ব্রিজ নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চলাচলের বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে কাঠ ও বাঁশের সাঁকো তৈরি করে ঠেকা সাড়তে হচ্ছে ঐ এলাকার মানুষদের। সেখানে পারাপারে পথচারীদের দিতে হয় জন-প্রতি ১০ টাকা। এভাবেই বাঁশের সেতুতে টাকা দিয়ে প্রায় ২৮ বছর ধরে পারাপার হচ্ছে বর্মপুর, রসুনপুর, বিরাশী, লেহেম্বা ও রাউতনগর এলাকার কয়েক হাজার মানুষ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ব্রীজটি সংস্কারে সাবেক সাংসদ জাহিদুর রহমান ও বর্তমান সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দিনসহ সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরগুলো বারবার নির্মাণের আশ্বাস দিলেও এর কোন বাস্তবায়ন হয়নি। বিভিন্ন সময়ে কয়েকবার মাপযোগ করে নিয়ে গেলেও সংস্কারের ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। প্রতিদিন এ অস্থায়ী বাঁশের সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে প্রায় পাঁচ হাজারেরও অধিক মানুষ চলাচল করেছে। এ বাঁশের সাকোতেই লেহেম্বা ও হোসেনগাঁও দুই ইউনিয়নের মানুষের মিলিত হওয়ার একমাত্র মাধ্যম। সেতুর পূর্ব পার্শ্বে বিরাশী বাজারসহ একটি মাদরাসা, চারটি বিদ্যালয় এবং পশ্চিম পাশে রাউতনগর বাজারসহ একটি কলেজ, দুইটি মাদরাসা এবং তিনটি বিদ্যালয় রয়েছে। প্রতিদিন শিক্ষার্থী, পথচারী, শিক্ষক ও সাধারণ মানুষ টাকা গুনে এই সাঁকো দিয়ে বাধ্য হয়ে যাতায়াত করতে হয়। অনেক দরিদ্র শিক্ষার্থীর অভিভাবক সাঁকো পারাপারের টাকা না দিতে পাড়ায় স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এটি নতুন ভাবে দ্রুত সংস্কার এখন যেন তাদের সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।
ঠাকুরগাঁও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী শাহারুল আলম মন্ডল জানান, ব্রিজটি যাতে নতুন ভাবে নির্মাণ করা যায় সে ব্যাপারের উদ্যোগ নেয়া হবে।