আজঃ মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

তিস্তার পানি বেড়েছে ৪০ সেন্টিমিটার

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

মাত্র ৯ ঘণ্টার ব্যবধানে তিস্তা নদীর পানি বেড়েছে ৪০ সেন্টিমিটার। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টায় তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এতে চরাঞ্চল ও নদীর তীরবর্তী মানুষ আবারও বন্যার আশঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টায় ডালিয়া পয়েন্টে পানি ৫২ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটারে প্রবাহিত হয়েছে। ওই পয়েন্টে বিপৎসীমা ধরা হয় ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার। সকাল ৬টায় পানির প্রবাহ ছিল ৫২ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটারে।

৯ ঘণ্টায় পানি বেড়েছে ৪০ সেন্টিমিটার। সেপ্টেম্বরের শুরুতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমন চাষিরা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। কদিন আগে বন্যায় নদী তীরবর্তী অনেকের আমনের বীজতলা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। অনেকে ধার-দেনা করে আমনের আবাদ করলেও পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা আতঙ্কিত। এছাড়া পানি বাড়ায় চরের অনেক পরিবার পানি বন্দি পয়ে পড়ার শঙ্কায় রয়েছেন।

লহ্মীটারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, তিস্তার পানি আবারও বাড়ায় মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে। তিনি বলেন, কদিন আগের বন্যায় তার ইউনিয়নে হাজারের ওপর পরিবার পানি বন্দি হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে ধানসহ অন্যান্য ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে। রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব বলেন, পূর্বাভাস অনুযায়ী তিস্তার পানি বেড়েছে।


আরও খবর
কপালের বলিরেখা দূর করার উপায়!

শুক্রবার ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

অভিযানেও স্বস্তি ফেরেনি চালের বাজারে

শুক্রবার ২৬ জানুয়ারী ২০২৪




ঢাকায় ওভারব্রিজে উড়োজাহাজ আটকে বিপত্তি, সরানো হলো লেজ খুলে

প্রকাশিত:সোমবার ০১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

রাজধানী ঢাকার বিজয় সরণি থেকে মহাখালী অভিমুখী সড়কে যাওয়ার পথে ফুটওভার ব্রিজে আটকে যায় একটি উড়োজাহাজ। এতে কিছু সময়ের জন্য যানজটের সৃষ্টি হয় ওই সড়কে। পুরাতন এ উড়োজাহাজ বড় ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়ার সময় ঘটে এ বিপত্তি। পরে ওই উড়োজাহাজের লেজ খুলে সরানো হয়।

রবিবার (৩১ মার্চ) রাত সোয়া ১০টার দিকে বিএএফ শাহীন কলেজের গেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে। নীল-সাদা রঙের ডরনিয়ার ২২৮ টার্বোপ্রপ উড়োজাহাজটির গায়ে লেখা ছিল বাংলাদেশ নেভি। ২০১৩ সালে নৌবাহিনীতে যে দুটি মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্র্যাফট যুক্ত করা হয়েছিল, এটি তার একটি।

স্থানীয়রা জানায়, একটি ট্রাকে (ট্রেইলার) করে পুরাতন উড়োজাহাজটি নেয়া হচ্ছিল। ওই উড়োজাহাজের দুই পাশের ডানাগুলো আগেই খুলে রাখা হয়েছিল। তবে উড়োজাহাজের লেজ আটকে যায় ফুটওভার ব্রিজের সঙ্গে। এতে ট্রাকটিও ফুটওভার ব্রিজের নিচে আটকে থাকে।

পরে বেশ কিছুক্ষণ আটকে থাকার পর একটি ফর্ক লিফট এনে কয়েকজন কর্মী উড়োজাহাজের লেজটিও খুলে ফেলেন। পরে ফুটওভার ব্রিজের নিচ থেকে মুক্ত হয়ে সামনে এগোনোর সুযোগ পায় উড়োজাহাজবাহী ট্রাকটি।

এ ঘটনায় কিছু সময় যানজট থাকে ওই সড়কে। পরে অবশ্য ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা পাশ দিয়ে যান চলাচলের ব্যবস্থা করে দেন। একপর্যায়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ট্রাকটি উড়োজাহাজ নিয়ে মহাখালীর দিকে চলে যায়। তবে উড়োজাহাজটি কোথায় নেয়া হচ্ছিল তা জানা যায়নি।


আরও খবর



দিনাজপুরে অনুষ্ঠিত হলো দেশের সর্ববৃহৎ ঈদ জামাত

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দিনাজপুর প্রতিনিধি

Image

ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর-এ-শহীদ বড় ময়দানে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল ৯টায়  লাখ লাখ মুসল্লির অংশগ্রহণে ঈদের এ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

ঐতিহাসিক এ ঈদের জামাতে অংশ নিতে সদর উপজেলা ছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও আশপাশের কয়েকটি জেলার মুসল্লিরা আসেন। জামাতে ইমামতি করেন দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতাল জামে মসজিদের ইমাম শামসুল হক কাসেমি।

বৃহৎ এ জামাতকে ঘিরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছিল কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা। সিসিটিভি ক্যামেরার পাশাপাশি ছিল কঠোর গোয়েন্দা নজরদারি। মাঠের আশপাশে র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ, আনসার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরাও তৎপর ছিলেন।

নামাজে অংশ নেন স্থানীয় সংসদ সদস্য হুইপ ইকবালুর রহিম ও প্রধান বিচারপতি (ভারপ্রাপ্ত) এনায়েতুর রহিম, জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ, পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ, দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র (ভারপ্রাপ্ত) তৌয়বুল আলম দুলাল, দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলতাফুজ্জামান মিতাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সর্বস্তরের জনগণ।

রংপুর জেলা থেকে ঈদের জামাতে আসা অলিউল ইসলাম ইসলাম বলেন, এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বড় ও দেশের সর্ববৃহৎ ঈদ জামাতে নামাজ আদায় করার অন্য অনেক দিনে ইচ্ছে ছিল। আল্লাহ আজ সে আশা পুরণ করেছে। জীবনে প্রথম লাখ লাখ মুসল্লির সঙ্গে ঈদের নামাজ পড়তে পেরে ভালো লাগছে।

জেলার খানসামা  উপজেলা থেকে নামাজ পড়তে আসা ফারুক আহম্মেদ বলেন, আমি এর আগেও ঐতিহ্যবাহী এই ময়দানে নামাজ পড়েছি। সবাই মিলে একসঙ্গে লাখ লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করলাম। সবাই মিলে নামাজ পড়ে বেশ ভালো লাগলো।

নামাজ শেষে ঈদগাহ মাঠের সমন্বয়ক, পৃষ্ঠপোষক ও জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম বলেন, আয়তনের দিক দিয়ে এটি উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ মাঠ। এর আয়তন প্রায় ২২ একর। এবার দিনাজপুর জেলাসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলার প্রায় ছয় লাখ মুসল্লি এখানে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন।

তিনি আরও বলেন, মাননীয়  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থায়নে এ মাঠের সুন্দর মিনারটি নির্মিত হয়েছে। ভবিষ্যতে এটিকে আরও সুন্দর করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান ঈদগাহ মাঠের এ সমন্বয়ক।

ঈদের নামাজের আগে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র (ভারপ্রাপ্ত) তৌয়বুল  আলম দুলাল, পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমে, জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম।

জানা যায়, বিভিন্ন স্থান থেকে বড় বড় ঈদগাহ মাঠের চিত্র নিয়ে এসে এ মাঠের নির্মাণ পরিকল্পনা করা হয়। সর্বপ্রথম মাঠের পশ্চিম প্রান্তে গত ২০১৫ সালে এ ঈদগাহ মাঠের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রায় দেড় বছর পর এটি নামাজের জন্য পুরো প্রস্তুত করা হয়। এ ঈদগাহে রয়েছে ৫২টি গম্বুজের দুই ধারে ৬০ ফুট করে দুটি মিনার, এর মধ্যের দুটি মিনার ৫০ ফুট করে এবং প্রধান মিনারের উচ্চতা ৫৫ ফুট। এসব মিনার আর গম্বুজের প্রস্থ হলো ৫১৬ ফুট। দেশের বড় ঐতিহাসিক গোর-এ শহীদ ময়দানের পশ্চিম দিকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এ ঈদগাহ মিনারটি। প্রত্যেকটি গম্বুজে দেওয়া হয়েছে বৈদ্যুতিক বাতি সংযোগ। ৫২টি গম্বুজ ২০ ফুট উচ্চতায় স্থাপন করা হয়েছে। গেট দুটির উচ্চতা ৩০ ফুট নির্মাণে নান্দনিক স্থাপনা দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

উল্লেখ্য, আগে দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হতো কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায়। এখন দিনাজপুরের ৫২ গম্বুজের ঈদগাহ মাঠে সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।


আরও খবর
বৃষ্টির আশায় নাটোরে ব্যাঙের বিয়ে

মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪




সিলেটের কুমারগাঁও বিদ্যুৎকেন্দ্রে আগুন, সরবরাহ বিঘ্নিত

প্রকাশিত:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

সিলেটের কুমারগাঁও বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। এতে বিঘ্নিত হচ্ছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। সোমবার (১৫ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে আগুনের সূত্রপাত। ফায়ার সা‌র্ভিসের পাঁচ‌টি ইউনিট দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেট বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল কাদির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রের এয়ার ফিল্টারে আগুন লাগে। পল্লী বিদ্যুতের হাইভোল্টেজের তার ছিঁড়ে স্পার্কিং হয় এবং আগুনের সূত্রপাত ঘটে। ফলে কয়েকটি উপকেন্দ্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। স্বাভাবিক করতে বেশ কয়েক ঘণ্টা লাগবে।

সিলেট ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রহমান বলেন, ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। তবে প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।

আগুনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, মহান আল্লাহ আমাদের বড় বিপদ থেকে রক্ষা করেছেন। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীসহ স্থানীয় লোকজনের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশে যাতে একটি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন তৈরি করা হয় তার জন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন বলে জানান।


আরও খবর
বৃষ্টির আশায় নাটোরে ব্যাঙের বিয়ে

মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪




জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ও ২৩ নাবিক মুক্ত

প্রকাশিত:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

অবশেষে মুক্ত হয়েছে সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি থাকা বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। জাহাজটিতে থাকা ২৩ নাবিকই সুস্থ রয়েছেন।

জাহাজের মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম শনিবার (১৩ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩টা ৩৫ মিনিটে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অল্প কিছুক্ষণ আগে আমরা সুসংবাদ পেয়েছি। আমাদের জাহাজটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ২৩ নাবিকই অক্ষত অবস্থায় আমরা ফেরত পেয়েছি। আগামীকাল (রোববার) সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে।

জানা গেছে, জলদস্যুদের দাবি অনুযায়ী মুক্তিপণ নিয়ে একটি বিমান বাংলাদেশ সময় শনিবার বিকেলে জিম্মি জাহাজের ওপর চক্কর দেয়। এসময় জাহাজের ওপরে ২৩ নাবিক অক্ষত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। এরপর বিমান থেকে ডলারভর্তি তিনটি ব্যাগ সাগরে ফেলা হয়। স্পিডবোট দিয়ে এসব ব্যাগ জলদস্যুরা কুড়িয়ে নেয়। জাহাজে উঠে দাবি অনুয়ায়ী মুক্তিপণ গুনে নেয় জলদস্যুরা। তবে চুক্তি অনুযায়ী জাহাজটি যথাসময়ে ছেড়ে দেয়নি দস্যুরা। পরবর্তীতে আশপাশে কেউ আটক করছে কি না, সেটি নিশ্চিত হয়ে জাহাজ থেকে দস্যুরা নেমে যায়।

মুক্ত হয়ে বাংলাদেশ সময় শনিবার মধ্যরাতে ২৩ নাবিক নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় এমভি আবদুল্লাহ। যদিও মুক্তিপণ কত এবং কীভাবে দেওয়া হয়েছে সেটি নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি জাহাজের মালিকপক্ষের কোনো কর্মকর্তা।

কেএসআরএম গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান বলেন, সমঝোতার পর নাবিকসহ জাহাজটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। জাহাজের চারপাশে একাধিক আন্তর্জাতিক যুদ্ধজাহাজ রয়েছে।

এর আগে গত ১২ মার্চ দুপুরে কেএসআরএমের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজটি জিম্মি করে সোমালিয়ান দস্যুরা। সেখানে থাকা ২৩ নাবিককে একটি কেবিনে আটকে রাখা হয়। আটকের পর জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়। ৫৮ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে গত ৪ মার্চ আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে এমভি আবদুল্লাহ। ১৯ মার্চ সেটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল।

কবির গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এসআর শিপিংয়ের মালিকানাধীন এমভি আবদুল্লাহ আগে গোল্ডেন হক নামে পরিচিত ছিল। ২০১৬ সালে তৈরি বাল্ক কেরিয়ারটির দৈর্ঘ্য ১৮৯ দশমিক ৯৩ মিটার এবং প্রস্থ ৩২ দশমিক ২৬ মিটার। গত বছর জাহাজটি এসআর শিপিং কিনে নেয়। বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক রুটে চলাচলকারী এরকম মোট ২৩টি জাহাজ আছে কবির গ্রুপের বহরে।

২০১০ সালের ডিসেম্বরে আরব সাগরে সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল বাংলাদেশি জাহাজ জাহান মণি। ওই সময় জাহাজের ২৫ নাবিক এবং প্রধান প্রকৌশলীর স্ত্রীকে জিম্মি করা হয়। নানাভাবে চেষ্টার পর ১০০ দিনের চেষ্টায় জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তি পান তারা।


আরও খবর



বাপ-দাদার শেখানো পেশায় যাদের জীবন জীবিকা

প্রকাশিত:রবিবার ২৪ মার্চ 20২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৪ মার্চ 20২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মামুন হোসেন, পাবনা

Image

এক সময় মাটির তৈরি হাঁড়ি-পাতিল, থালা-বাসন, ঘটি, মটকা, সরা, চারি, কাসা, কলস, ব্যাংক, প্রদীপ, পুতুল, কলকি, দেবদেবীর মূর্তি ও ঝাঝরের বিকল্প ছিল না তবে আধুনিকতার ছোঁয়ায় মানুষের রুচির পরিবর্তনে মাটির তৈরি সামগ্রীর স্থান দখল করে নিয়েছে প্লাস্টিক, মেলামাইন, স্টিল আর অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি নানা রকম আধুনিক সামগ্রী। তাই বর্তমানে বাজারে চাহিদা কম থাকায় এবং কাঁচামালের চড়ামূল্য ও পুঁজির অভাবে টিকতে না পাড়ায় সংকটে পড়েছে পাবনার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্পীরা।

মৃৎশিল্পীরা জানান, বর্তমান মানুষের ব্যবহারিক জীবনে মৃৎশিল্পের তেমন কোন আর ভূমিকা নেই। প্রযুক্তি বিকাশের এ যুগে এই শিল্পের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন সাধিত না হওয়ায় বর্তমানে এই পেশায় টিকে থাকা অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে কালের আবর্তে বাপ-দাদার পেশা হারিয়ে যেতে চললেও এখনোও টিকিয়ে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন পাবনা চাটমোহর উপজেলার নিমাইচড়া ইউনিয়নের গৌড়িপুর পালপাড়া গ্রামের মৃৎশিল্পীরা।

সরেজমিনে গৌড়িপুর পালপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, ভোরের আলো ফুটতেই মাটির হাঁড়ি পাতিল তৈরি করে রোদে শুকাতে দিচ্ছে কুমাররা, কেউ বা ব্যস্ত সময় পার করছেন বিভিন্ন সামগ্রী তৈরীতে, কেউ বা করছেন রং এভাবেই সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলছে তাদের কর্মব্যস্ততা।

পালপাড়ায় গিয়ে কথা হয় মায়া রাণীর সাথে তিনি জানান, দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে মাটির তৈজসপত্র তৈরী করে আসছেন তিনি। আগে মাটির সামগ্রীর প্রচুর চাহিদা থাকলেও এখন আর তেমন কোন চাহিদা নেই, তাই শীত মৌসুমে পিঠাপুলির সামগ্রী তৈরী করেই কোনোমতে চলছে তার সংসার।

এমনিতেই ব্যবসা চলে কম তার উপরে নেই রাস্তাঘাট তাই গৌড়িপুর পালপাড়া থেকে নিমাইচড়া বাজার পর্যন্ত পাকা সড়কের দাবি জানান তিনি।

মৃৎপাত্র পোড়ানোর সময় কথা হয় দুলাল পালের সাথে কথা হইলে তিনি জানান, প্রায় ৪০ বছর ধরে বাপ-দাদার শেখানো পেশায় কাজ করছেন। আগের দিনে বাজারে মৃৎপাত্রের প্রচুর চাহিদা থাকলেও এখন অনেকটাই কম। অন্য কোন কাজ না জানায় এই পেশাই আঁকড়ে ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি।

দুলাল পাল আরও বলেন, পেশাগত প্রয়োজনে ব্যাংক ঋণ পাননা তারা। সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ পেলে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখেন তিনি। স্থানীয় মৃৎশিল্পীরা মনে করেন, ঐতিহ্যবাহী এই মৃৎশিল্পকে বাঁচাতে সরকারের বহুমুখী উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করা খুবই প্রয়োজন।

কথা হয় বিকাশ পাল, সম্বল পাল, দরদী পাল ও সুবর্ণা পালের সঙ্গে, তারা এই প্রতিবেদককে জানান, এক সময়ে এই গ্রামে মৃৎশিল্পের রমরমা ব্যবসা ছিল। আগে গৌড়িপুর গ্রামে প্রায় ১১০টি ঘর মৃৎশিল্পের কাজ করতো কিন্তু বর্তমানে বেশির ভাগ পালরা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ায় এখন ১০-১৫ টি ঘরে প্রায় ৩০-৩৫ জন পাল এই কাজের সাথে জড়িত বলে জানান তারা।

তারা আরও জানান, মৃৎশিল্পের সঙ্গে জড়িতরা সরকারি কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা বা প্রণোদনা কোন দিন পেয়েছেন কি না তা তাদের জানা নেই। তারা বলেন, এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হলে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। এছাড়াও মৃৎশিল্পীদের শিল্প জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে যদি আধুনিক করে গড়ে তোলা যায় তা হলেই কেবল গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই মৃৎশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব বলে তারা মনে করেন।

কথা হয় গোপাল চন্দ্রপালের সঙ্গে তিনি বলেন, আগের দিনে মৃৎশিল্পের প্রয়োজনীয় উপকরণ যেমন এঁটেল মাটি, রঙ, যন্ত্রপাতি ও জ্বালানি ছিল সহজলভ্য। কিন্তু বর্তমানে এসব প্রয়োজনীয় উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় তারা এখন হিমশিম খাচ্ছেন। তারা জানান, পূর্বে যেখানে বিনামূল্যে মাটি সংগ্রহ করা যেত বর্তমানে সেই মাটি ১০-১২ হাজার টাকায় কিনতে হয়। আগে খড় কিনতে তাদের কোন টাকা পয়সা লাগতো না, এখন সেই এক বুঝা খড় ৩০০ টাকায় কিনতে হয় তাদের।

গোপালচন্দ্র পাল বলেন, বর্ষা মৌসুমে তাদের হাতে তেমন কোন কাজ না থাকায় সে সময় বিভিন্ন জায়গা থেকে মাটি সংগ্রহ করে থাকেন তারা। তবে অনেক সময় মাটি কিনতে আইনি জটিলতায় পড়তে হয় তাদের।

বাড়ির উঠোনে পাত্রগুলোতে রং করতে দেখা যায় উজ্জ্বল কুমার পালকে, তার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, সাধারণত মৃৎপাত্রগুলো কুমার পরিবারের নারী-পুরুষ উভয়ে মিলেমিশে তৈরি করে থাকেন। এই তৈরিকৃত সামগ্রী বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা এসে কিনেন। অনেকে আবার বাড়ি বাড়ি ফেরি করেও বিক্রি করেন। বর্ষা মৌসুমে কাজ বন্ধ থাকায় কুমারদের অবস্থা সবচেয়ে বেশি খারাপ যায়। সে সময় কুমাররা সারা বছর কাজ করার জন্য এঁটেল মাটিসহ প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সংগ্রহে নেমে পড়েন। শুধু পাবনা নয়, গোটা দেশে এ পেশায় নেমে এসেছে চরম বিপর্যয়। এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে কারও যেন কোন মাথাব্যথাই নেই।

বাড়ির উঠোনে মাটির পাত্র তৈরি করছেন অনিতা পাল ও প্রার্থনা পাল তাদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, আগের দিনে তাদের ব্যবসা অনেক ভালো চলতো বর্তমানে মানুষ প্লাস্টিক, এ্যালুমিনিয়াম ব্যবহার করায় এখন কম চলে। তারা বলেন, আগে কলসিসহ বিভিন্ন তৈজসপত্র তৈরী করলেও বর্তমানে তা ব্যবহার কম হওয়ায় এখন শুধু ঝাঁঝর, কাসা, হাঁড়ি পাতিল তৈরী করে থাকেন তারা। 

এবিষয়ে নিমাইচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পারভিন সুলতানা মুক্তি বলেন, তারা কখনও আমার কাছে কোন দাবি নিয়ে আসেনি। আমি আমার এলাকার অনেক সড়কের কাজ করেছি, তাদের সড়কের বিষয়েও কাজ করার চেষ্টা করবো এবং আমি সবসময় তাদের পাশে থাকবো।


আরও খবর
বৃষ্টির আশায় নাটোরে ব্যাঙের বিয়ে

মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪