ভারতের মেঘালয়ে অবস্থান করা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ ট্রাভেল পাস পেয়েছেন। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এখন যেকোনো সময় তিনি দেশে ফিরতে পারবেন।
সোমবার রাত ১১টার দিকে ভারতের গৌহাটিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে এ ট্রাভেল পাস দেয়া হয়। এখন ভারতে কিছু আইনি প্রক্রিয়া রয়েছে। সেগুলো শেষ করে তিনি শারীরিক চেকআপ করাবেন বলে জানা গেছে। এর পর দেশে ফিরবেন।
এর আগে গত ৮ মে মেঘালয়ের গৌহাটিতে সহকারী হাইকমিশন অফিসে আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাভেল ডকুমেন্ট বা ট্রাভেল পাসের জন্য আবেদন করেছিলেন সালাহউদ্দিন।
আরও পড়ুন: বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত ৬ কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচিত
গত ৮ জুন সালাহউদ্দিনের দেশে ফেরার আবেদন মঞ্জুর করার কথা জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনৈতিক শাখার মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) রফিকুল ইসলাম ওইদিন বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার দেশে ফেরার আবেদন মঞ্জুর করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে ভারতের আসাম রাজ্যের গৌহাটিতে বাংলাদেশ মিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তিনি যেকোনো সময় দেশে আসতে পারবেন।’
২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাজধানীর উত্তরা থেকে নিখোঁজ হন সালাহউদ্দিন আহমেদ। নিখোঁজের ৬৩ দিন পর ১১ মে ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ সালাহউদ্দিনকে আটক করে। পরে সেখানকার একটি মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। এর পরদিন তাকে শিলং সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ভারতে প্রবেশের অভিযোগে ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী তাকে গ্রেপ্তার দেখায় মেঘালয় থানা পুলিশ। একই বছরের ২২ জুলাই ভারতের নিম্ন আদালতে আনুষ্ঠানিকভাবে তার বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের দায়ে অভিযোগ গঠন করা হয়।
আরও পড়ুন: কেসিসি নির্বাচনে কাউন্সিলর হলেন যারা
২০১৮ সালের ২৬ অক্টোবর সালাহউদ্দিন আহমেদকে বেকসুর খালাস দেন শিলং আদালতের প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট ডিজি খার সিং রায়।
খালাস দিয়ে রায় দেয়ার সময় সালাহউদ্দিন আহমেদকে বিএসএফের মাধ্যমে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করারও নির্দেশ দেন আদালত। রায় অনুযায়ী তিনি দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিলেও পরে তা আটকে যায়। নিম্ন আদালতের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। আপিলে জেলা ও দায়রা জজ তাকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য বলা হয়।
পরে চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি শিলংয়ের জজ কোর্ট তাকে বেকসুর খালাস দেন। একই সঙ্গে দ্রুত যেন তাকে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়, সেই নির্দেশও দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর হলেন যারা
ভারতে আটকের সময় সালাহউদ্দিন আহমেদ বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন। ভারতে আটক অবস্থায় বিএনপির ষষ্ঠ কাউন্সিলে তিনি দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ ১৯৯১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এপিএস ছিলেন। এরপর প্রশাসনের চাকরি ছেড়ে তিনি রাজনীতিতে আসেন। ২০০১ সালে তিনি কক্সবাজার থেকে এমপি নির্বাচিত হন। বিএনপি ক্ষমতায় এলে তিনি যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী হন।