আফ্রিকার দেশ উগান্ডার পশ্চিমাঞ্চলে একটি
স্কুলে নৃশংস হামলা হয়েছে। জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে জড়িত সশস্ত্র
বিদ্রোহীরা এই হামলা চালিয়েছে বলে জানা গেছে। এতে কমপক্ষে ৪০ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের
বেশির ভাগই শিক্ষার্থী।
শুক্রবারের ওই হামলার সঙ্গে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক কঙ্গো (ডিআর কঙ্গো) ভিত্তিক উগান্ডার সশস্ত্র সংগঠন অ্যালাইড ডেমোক্রেটিক ফোর্সেসকে (এডিএফ) এই হামলার জন্য দায়ী করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ভারতের উত্তর প্রদেশে তীব্র গরমে ৩৪ জনের মৃত্যু
উগান্ডা পুলিশের মুখপাত্র ফ্রেড এনাঙ্গা
জানান, বেশিরভাই মরদেহ পার্শ্ববর্তী বেওয়ারা হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও
জানান, এই হামলায় স্কুলটির ছাত্রাবাস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং খাবার রাখার কক্ষটি লুট
করা হয়েছে।
হামলা সম্পর্কে বলতে গিয়ে উগান্ডা সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল ডিক ওলাম জানান, হামলাকারীরা স্কুলটির ছাত্রদের পুড়িয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে আর ছাত্রীদের অপহরণ করে নিয়ে যায়। কয়েকটি মরদেহ এতোটাই পুড়ে গেছে যে সেগুলো শনাক্ত করতে ডিএনএ পরীক্ষা করাতে হবে। হামলায় সশস্ত্র বিদ্রোহীরা শিক্ষার্থীদের তোষকগুলো পুড়িয়ে দেয় ও ওই এলাকায় বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়।
আরও পড়ুন: জার্মানিতে তিন হাজার বছর আগের তরবারির সন্ধান
এ ঘটনার পর উগান্ডার সৈন্যরা কঙ্গোর ভিরুঙ্গা
ন্যাশনাল পার্কের দিকে সরে পড়া বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অনুসরণ করতে থাকে। উগান্ডা ও রুয়ান্ডার
সীমান্তবর্তী এই বিশাল অভয়ারণ্যে এডিএফসহ অন্যান্য বিদ্রোহী সংগঠন পালিয়ে বেড়ায়।
গত সপ্তাহে এডিএফের সশস্ত্র যোদ্ধাদের
হামলায় উগান্ডার সীমান্তবর্তী ডি আর কঙ্গোর একটি গ্রাম থেকে শতাধিক লোক পালিয়ে যায়
আর ঠিক তার পরপরই উগান্ডার ওই স্কুলটিতে এই হামলার ঘটনা ঘটল। হামলার লক্ষ্যস্থলের এলাকাটি
ডি আর কঙ্গোর সীমান্ত থেকে দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
এর আগে ১৯৯৮ সালের জুন মাসে ডি আর কঙ্গোর সীমান্তবর্তী কিচওয়াম্বা টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের ছাত্রাবাসে এডিএফের হামলায় ৮০ জন শিক্ষার্থীকে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল এবং একশর বেশি শিক্ষার্থীকে অপহরণ করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানকে আবারও ১০০ কোটি ডলার ঋণ দিল চীন
১৯৯০ সালে উগান্ডার পূর্বাঞ্চলে সশস্ত্র
সংগঠন এডিএফের উৎপত্তি হয় দেশটির দীর্ঘ দিনের প্রেসিডেন্ট ইয়োয়েরি মুসেভেনির বিরুদ্ধে
অস্ত্র তুলে নেওয়ার মধ্য দিয়ে। মুসেভেনিকে সংগঠনটি মুসলিম জনগোষ্ঠীর সদস্যদের উচ্ছেদের
জন্য দায়ী করে আসছে। ২০০১ সালে উগান্ডার সেনাবাহিনীর কাছে পরাজিত হওয়ার পর এডিএফ ডিআর
কঙ্গোতে ঘাঁটি গড়ে তোলে। গত দুই দশক জুড়ে সেখান থেকেই সন্ত্রাসী তৎপরতা চালিয়ে আসছে
এই সশস্ত্র সংগঠনটি।