গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এখন পর্যন্ত যে পরিস্থিতি আছে তাতে কেবল বাংলাদেশ নয়, এই সাবকন্টিনেন্টের কনটেক্সটে (উপমহাদেশের প্রেক্ষাপটে) অত্যন্ত ভালো বলে দাবি করেছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর। তিনি বলেন, ‘ভোটের পরিবেশ শুধু বাংলাদেশ নয়, উপমহাদেশের কনটেক্সটে ভালো আছে এখন পর্যন্ত এবং নির্বাচনের ফলাফল পর্যন্ত ভালো থাকবে।’
সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইসি মো. আলমগীর এসব কথা বলেন।
সম্প্রতি পাচঁ সিটি করপোরেশনে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। তফসিল অনুযায়ী, গাজীপুর সিটি করপোরেশনে ২৫ মে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এ ভোটে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন প্রচারকালে দুই দফা গাড়ি-ভাঙচুর ও হামলার শিকার হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। তবে নির্বাচন কমিশন বলছে, তারা এ ধরনের কোনো অভিযোগ পায়নি। বরং গাজীপুরের ভোটের পরিবেশ উপমহাদেশের প্রেক্ষাপটেই ভালো।
মো. আলমগীর বলেন, ‘অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে ও সুষ্ঠুভাবে প্রচার হচ্ছে। মেইনস্ট্রিম মিডিয়ায় গাড়ি ভাঙচুরের কোনো ভিডিও আসেনি। কোনো পত্রিকাতেও লেখা হয়নি। গতকাল আমি নিজে গিয়েছি গাজীপুর। এর আগেও গিয়েছি। সবাই মাইক দিয়ে প্রচার করছে দেখেছি। আমি তো আর যাওয়ার সময় বলে যাইনি যে, আমার সামনে দেখানোর জন্য একটু আসেন। গাজীপুর শহরের এক জায়গা দিয়ে ঢুকে আরেক জায়গা দিয়ে বের হই। আমার তো পরিচিত লোকজনও আছে। তাদের কাছ থেকেও খোঁজ নিই। অত্যন্ত সুন্দরভাবে প্রচার হচ্ছে। তারপরও আমাদের দেশে সংস্কৃতি যেটা, দ্বিতীয় পক্ষ মুখোমুখি হয়ে যায়। এও স্লোগান দেয়, সেও স্লোগান দেয় স্বাভাবিকভাবেই। তখন পুলিশ থাকে মাঝে। পুলিশ সুন্দরভাবে ভূমিকা পালন করছে।’
গাজীপুর সিটি নির্বাচন পরিস্থিতি কমিশনের নিয়ন্ত্রণে আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে এই কমিশনার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনাদের মনে হয় কি নেই? না থাকার প্রমাণ দেন।’
কেন্দ্রে ভোটারদের বাধা দেয়ার আশঙ্কার প্রসঙ্গ টেনে এই কমিশনার বলেন, ‘(কেন্দ্রে) যেতে যদি বাধা দেয়া হয়, ৫৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। প্রত্যেক ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে বিজিবির টিম থাকবে, র্যাব থাকবে, বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। এরপরও নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ার তো কোনো কারণ নেই। ভোটাররা যদি বলে যে ভয় পাচ্ছি, তো আন্দাজে ভয় পাইয়ে তো লাভ নেই। তারা ঘর থেকে বের হোক। ভোট দিতে যাক। তারপর যদি কেউ বাধা দেয় তখন বলুক। আমাদের কাছে পাঠাক যে উমুক বাধা দিচ্ছে। দেখেন তখন কী হয়। কঠিন অ্যাকশন হবে।’
প্রার্থীর এজেন্টের স্বাক্ষর ছাড়া নির্বাচনের কোনো ফলাফল শিট গ্রহণ করবেন না জানিয়ে এই কমিশনার বলেন, ‘না হলে সেখানে সার্টিফাই করতে হবে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে যে, এখানে এই পক্ষের কোনো এজেন্ট উপস্থিত ছিলেন না। এর আগে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানাবেন যে নেই। তখন আবার প্রার্থীকে জানানো হবে যে, নেই কেন, আপনার এজেন্ট নিয়ে আসেন। কেউ যদি বলে তাহলে পুলিশ নিজে গিয়ে দিয়ে আসবে।’
ভোটের প্রত্যেকটা বুথে সিসি ক্যামেরা থাকবে জানিয়ে মো. আলমগীর বলেন, ‘ঢাকায় বসে সিইসিসহ অন্যান্য কমিশনার, কর্মকর্তা এবং সাংবাদিকরা তা পর্যবেক্ষণ করবেন। আমরা কোনো অভিযোগ দেখলে আইনে যেভাবে অ্যাকশন নেয়ার কথা, সেভাবেই নেয়া হবে। গাইবান্ধায় তো কেবল নির্বাচন বন্ধ করা হয়েছে। এখানে তার চেয়েও কঠিন অ্যাকশন হবে। আপনারা দেখেন।’