গাজীপুরের শ্রীপুরে নিখোঁজের ছয়দিন পর ১৪ বছর বয়সী রামিমুল হাসান বিজয়ের দেহ থেকে গলা বিচ্ছিন্ন গলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, আপন বড় ভাইয়ের ছেলেকে হত্যার পর থানায় গিয়ে জিডি করেন চাচা জুয়েল বেপারী। এঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে থানার মামলা দায়েরের পর চাচাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (২ অক্টোবর) বিকেলে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামলার এজাহার সূত্রে এ তথ্য জানিয়েছেন।
নিহত রামিমুল হাসান বিজয় (১৪) গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া চন্নাপাড়া গ্রামের রোমান বেপারীর ছেলে। সে স্থানীয় শতদল বয়েজ এন্ড গার্লস্ স্কুলের ৮ম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, নিহত রামিমুল হাসান বিজয়ের চাচা গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া চন্নাপাড়া গ্রামের মৃত নূর হোসেন বেপারীর ছেলে জুয়েল বেপারী (৩০), একই গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে জিহাদ (১৭) ও ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল থানার পূর্ব ধরিল্লা গ্রামের মজনু মিয়ার ছেলে উজ্জ্বল মিয়া শামীম (২৪)। শামিম চন্নাপাড়া গ্রামের রশিদ বেপারীর বাড়ির ভাড়াটিয়া।
নিহত রামিমুল হাসান বিজয়ের স্বজনরা জানান, গত মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে বিজয়ের কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। স্বজনরা সম্ভাব্য সব জায়গাতে খোঁজ করে না পেয়ে শ্রীপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন বিজয়ের চাচা জুয়েল বেপারী। পরে বিজয়ের বাবার মুঠোফোনে তারই নামে রেজিষ্ট্রেশন করা সিম কার্ড থেকে ফোন করে বিজয় অপহরণ হয়েছে এবং তাকে ছাড়িয়ে নিতে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল অপহরণকারী। সবশেষ আটককৃতদের দেখিয়ে দেয়া উপজেলার গোসিঙ্গা ইউনিয়নের কর্নপুর গ্রামের খিলা উফুই টেক এলাকার গভীর গজারি বন থেকে রোববার বিকেলে নিখোঁজ রামিমের দেহ থেকে গলা বিচ্ছিন্ন, পেটে আঘাত জনিত গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
শ্রীপুর থানার মামলা সূত্রে জানা যায়, বিজয়ের নিখোঁজ জিডি পাওয়ার পরপরই শ্রীপুর থানার একাধিক দল বিজয়কে উদ্ধারে মাঠে নামেন। জিডির সূত্র ধরে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে জিহাদকে চন্নাপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেয়া তথ্যমতে শামীমকে নেত্রকোনার নান্দাইল থানার পাছ দরিল্লা গ্রাম থেকে শামীমকে আটক করা হয়। তাদের দেয়া তথ্য মতে, শ্রীপুরের কেওয়া চন্নাপাড়া থেকে বিজয়ের চাচা জুয়েল বেপারীকে আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্য মতে ঘটনাস্থলে গিয়ে আটককৃতরা বিজয়ের গলাকাটা গলিত মরদেহ উদ্ধার করে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল ফজল মোঃ নাসিম বলেন, নিহত বিজয়ের মা বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছেন। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।