
ইটভাটার অতিরিক্ত কয়লা ও মালামাল বোঝাই একাধিক ট্রাক আসা যাওয়ার কারণে নরসিংদী মনোহরদী উপজেলার একটি জনবহুল ব্রীজ ভেঙ্গে গেছে। ব্রীজটি ভেঙ্গে পড়ায় জনদূর্ভোগের পাশাপাশি মনোহরদীসহ আশেপাশের কয়েকটি ইউনিয়নের বাসিন্দাদের যোগাযোগ একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। বন্ধ হয়ে গেছে এ ব্রীজ দিয়ে চলাচলকারী শতাধিক সিএনজি, ব্যাটারীচালিত অটোরিক্সা চালকদের আয়ের পথ।
উপজেলার বড়চাপা ইউনিয়নের চালাকচর হতে শিমুলতলী রাস্তার বীরমাইজদিয়া মৌজায় ব্রীজটির অবস্থান। জরুরী ভিত্তিতে উক্ত ব্রীজটি পূর্ণনির্মান করার জন্য বড়চাপা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উপাধ্যক্ষ এম সুলতান উদ্দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে গত বুধবার একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, বড়চাপা ইউনিয়নের চালাকচর টু শিমুলতলী সড়কের উপর নির্মিত ব্রীজটি আগ থেকেই কিছুটা ভাঙ্গা ছিল। অথচ এ ভাঙ্গা ব্রীজ দিয়েই প্রতিদিন বিভিন্ন যান চলাচল করতো। সবচেয়ে ক্ষতির কারণ হয় স্থানীয় সি.বি.এফ ও বি.বি.এফ নামক দুটি ইটভাটার অতিরিক্ত কয়লা ও ইট বোঝাই ট্রাক চলাচল করায়। এই ইটভাটা দুটির কাঁচামাল ও ইট বোঝাই একাধিক ট্রাক প্রতিদিন আসা যাওয়ার কারণে গত ২ মে হঠাৎ করেই ব্রীজটি ভেঙ্গে পড়ে। ফলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে ব্রীজটি দিয়ে যাতায়াতকারী কয়েকটি ইউনিয়নের বাসিন্দাদের। তাছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মনোহরদী, বড়চাপাসহ কয়েকটি বাজারের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ও পথচারী নিয়মিত চলাচল করত এ ব্রীজ দিয়ে। ব্রীজটি ভেঙে পড়ায় চলাচলকারী পথচারীদের পড়তে হয়েছে সীমাহীন বিড়ম্বনায়।
ব্যাটারীচালিত অটোরিক্সা চালক মোজাম্মেল হক বলেন,এ রাস্তাটি আমার জীবিকা নির্বাহের পথ। প্রতিদিনই আমি অটোরিক্সা দিয়ে যাত্রী নিয়ে এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করি। এতে যা আয় হয় তা দিয়ে আমার সংসার চলে। কিন্তু ব্রীজটি ভেঙ্গে পড়ায় আমি বিপদে পড়েছি।
মকবুল হোসেন নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, গত (২মে) ভেঙে পড়া ব্রীজটি ৩০ বছরের পুরনো। সি.বি.এফ ও বি.বি.এফ ব্রিকফিল্ডের অতিরিক্ত কয়লা বোঝাই ট্রাক চলাচলের কারণে ব্রীজটির ভেঙ্গে পড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ এই পুরনো ব্রিজের উপর দিয়েই সি.বি.এফ ও বি.বি.এফ ব্রিকফিল্ডের যাবতীয় কাচামাল সরবরাহ হয়ে থাকে। এলাকার লোকজন বিভিন্ন সময় বাধা দিলেও ইটভাটার মালিকরা কর্ণপাত করেনি।
সি.বি.এফ ও বি.বি এফ ব্রিকফিল্ডের স্বত্তাধিকারী মোঃ কিরণ মিয়া বলেন, এখানে শুধু আমার ইটভাটা আছে এমন না। আরো একটি ইটভাটা আছে। রাতের কোন এক সময়ে ব্রীজটি ভেঙ্গেছে। কেন ভেঙ্গেছে সেটা আমি বলতে পারবোনা।
বড়চাঁপা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এম সুলতান উদ্দীন বলেন, ব্রীজটি ভেঙে পড়ার পর আমি উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকৌশলী বরাবর লিখিত আকারে পুননির্মাণের আবেদন জানিয়েছি। আশা করছি দ্রুততার সাথে এর একটা সমাধান হবে।
মনোহরদী উপজেলা প্রকৌশলী মীর মহিদুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম ও আমি পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। যেহতেু ব্রীজটি সম্পূর্ণরুপে ভেঙ্গে গেছে, এটা আর সংস্কার করার কোন সুযোগ নাই । ব্রীজটি নির্মাণ করার জন্য উধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অবগত করেছি।