গেলো কয়েক সপ্তাহ আগেই বাংলাদেশে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় 'মিধিলি'। ভোলা উপকূলে 'মিধিলির' তেমন প্রভাব না পড়লেও ক্ষতির মুখে পড়েছেন চাষিরা। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কৃষকের আধাপাকা ধান নুইয়ে পড়ার কারণে পাকা ধানের কিছু অংশ পঁচে গেছে।
কৃষকরা জানান, বিলের পর বিল পাকা ধানে ভরা। কিছু কিছু ধান কেটে ঘরে তুলেছেন অনেকে। তবে বেশির ভাগই এখনও মাঠেই রয়েছে। অনেকে কাটার চেষ্টা করছেন। কিন্তু শ্রমিক সংকটে সে চেষ্টাও সমস্যার সৃষ্টি করেছে। আবার ঝড়- বৃষ্টি হলে এসব ধান মাঠেই নষ্ট হয়ে যাবে।
ভোলা সদর উপজেলার পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের গুপ্ত মুন্সি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, আমনের ফলন ভালো হলেও ঘূর্ণিঝড় কৃষকদের মানে শঙ্কা তৈরি করেছে। সবাই চেষ্টা করছেন দ্রুত ধান কেটে ঘরে তোলার।
স্থানীয় কৃষক নুরুল ইসলাম বলেন, ৪০ একর জমিতে ধান লাগিয়েছিলাম। মোটামুটি ভালো হয়েছে। আর সপ্তাহখানেক মাঠে থাকলে ধান পুরো পুষ্ট হতো। ঝাড় বৃষ্টি হওয়ার আগেভাগেই ধান ঘরে তোলার চেষ্টা করছি।
কৃষক মফিজ বলেন, বিলে আট বিঘা জমিতে আমন মৌসুমের বিআর ১০৩৮৭ ধান চাষ করেছি। 'মিধিলির' কারণে প্রায় দুই বিঘা জমির ধান ক্ষেতে নুইয়ে পড়ে। বিঘাতে ২০-২২ মণ ধান পেতাম। কিন্তু মিধিলির কারণে এ বছর কমপক্ষে ১০ মণ ধান কম পাব। আরও কিছু ধান চিটা হবে।
সদর উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, উপজেলায় ১৬ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। ইতোমধ্যে ৩০ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। এ সপ্তাহের মধ্যে আরও ২০ শতাংশ জমির ধান কাটা সম্ভব হতে পারে। এরপরও অবশিষ্ট ৫০ শতাংশ জমিন ধান গোলায় তোলা সম্ভব হবে না। কিছু কিছু জায়গায় ধান এখনো অপরিপক্ক রয়েছে। আধা পাকা এই ধান পাকতে আরও ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লাগতে পারে।
ভোলা জেলা কৃষি উপ-পরিচালক হাসান ওয়ারেসুল কবির বলেন, জেলার ৮০ শতাংশ ধান পেকেছে, এখন ধান কাটলে কোনো ক্ষতি হবে না। এবারে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লক্ষ ৭৫ হাজার ৯২৬ হেক্টর। তবে ঝড় বৃষ্টির কারণে ৫% ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। কৃষকদের ধান কাটার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এবারও মোটামুটি ভালো ফলন হওয়ার আশাকরি।