ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে উপকূলীয় দ্বীপ জেলা ভোলায় আজ রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে। মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর পানির স্রোতও বাড়ছে। বিকেল ৫টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বৃষ্টি কমলেও বেড়েছে বাতাসের গতিবেগ।
আবহাওয়া অধিদপ্তর তোলার পর্যবেক্ষক মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে এই জেলায় ৫ থেকে ৭ ফুট উচ্চতায় জলচ্ছাস হওয়ার সম্ভাবনা। আছে। ফলে, অনেকটা অজানা আতঙ্কের মধ্যেই রয়েছেন উপকূলবাসী। তবে মোখার ভয়াবহতা না থাকায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে যেতে রাজি নন জেলার উপকূলবাসি।
রোববার দুপুর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের শান্তিরহাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় ৩০ নম্বর উত্তর-পূর্ব শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেন্টারের নীচ তলা ফাঁকা। আর নীচতলার কলাবসিবল গেট তালাবদ্ধ। তবে, নীচতলাটা কিছুটা ঝাড়পৌঁছ করে পরিস্কার রাখা হয়েছে ।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ভ্যানচালক মো. হানিফের মেয়ে ফরিদা বলেন, আমরা মেঘনা পাড়ের বাসিন্দা আমাদের আল্লাহর উপরই ভরসা। যা হয়, হবে। ঘর ছেড়ে এবং ঘরের মালামাল রেখে কোথাও যাবোনা।
আরেক বাসিন্দা মাঈনুদ্দিনের স্ত্রী কুলসুম বেগম বলেন, আমাদের জন্য আল্লাহই একমাত্র ভরসা। তবুও যদি বড় শুরু হয় তাহলে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়া যাবে। কারণ, আমার ঘর থেকে আশ্রয় কেন্দ্র সামান্য দূর। এমনকি নদীর তীরে বসবাসকারী মান্তা সম্প্রদায়ের মানুষজনও আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে চাচ্ছে না। জানতে চাওয়া হলে বিবি ফাতেমা, উলফুল নেছা, আনোয়ারা বেগম ও নুর জাহানসহ মান্তা সম্প্রদায়ের মানুষ বলেন, নৌকায় আমাদের হাড়িপাতিলসহ অনেক মালামাল রয়েছে। সেগুলো ফেলে কেমনে যামু। তবুও ঘূর্ণিঝড় মোখা শুরু হলে তখন যাবো। ওই এলাকায় প্রায় দুইশো মান্তা সম্প্রদায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
শিবপুর ইউনিয়নে আরও কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্র ফাঁকা অবস্থায় দেখা গেছে। শিবপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়টিও দুপুর দেড়টার দিকে দেখা গেছে তালাবদ্ধ। স্থানীয়রা জানান, এ ধরণের বহু ঝর তুফানের সাথে যুদ্ধ করেই বেঁচে আছেন উপকূলের মানুষ। তাই, তারা তাদের মালামাল ও গবাদি পশু ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে চাইছেন না।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে ভোলায় ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেওয়ার পরেও এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব নৌকা ও মাছ ধরা ট্রলার তীরে আসার কথা বলা হলেও মেঘনা নদীতে অনেক মাছ ধরার নৌকাকে নদীতে মাছ শিকার করতে দেখা গেছে।
ভোলা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তৌহিদুল ইসলাম আজকের দর্পণকে বলেন, ভোলা সদর উপজেলায় এ পর্যন্ত দেড় হাজার মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে তবু গিয়েছিল। কিন্তু, দুপুরের দিকে বৃষ্টি ও বাতাসের গতি কমে যাওয়ায় তারা আবার ফিরে এসেছে।
বিআইডব্লিউটিএ ভোলা নৌ বন্দরের সহকারী পরিচালক: মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, নৌ রুটে চলাচলকারী সব ধরনের যান চলাচল পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।