আজঃ শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
শিরোনাম

ভরিতে স্বর্ণের দাম কমল ১১৬৬ টাকা

প্রকাশিত:বুধবার ০২ ডিসেম্বর 2০২0 | হালনাগাদ:শনিবার ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করেছে। এতে ভরিপ্রতি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ১৬৬ টাকা কমিয়েছে। মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) বাজুসের সভাপতি এনামুল হক খান ও সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। তবে রুপার দাম অপরিবর্তিত থাকবে।

বুধবার (২ ডিসেম্বর) থেকে স্বর্ণের এ নতুন দর কার্যকর হবে। এর আগে গত ২৫ নভেম্বর থেকে প্র‌তিভরিতে ২ হাজার ৫০৭ টাকা ক‌মি‌য়ে স্ব‌র্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়। এর ফলে এক সপ্তাহে দুই দফায় ভরিতে ৩ হাজার ৬৭৩ টাকা কমল স্বর্ণের দাম।

বাজুসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় শঙ্কিত বৈশ্বিক অর্থনীতি, ডলার ও তেলের দরপতন, আন্তর্জাতিক ও দেশীয় স্বর্ণবাজারে দামের উত্থান-পতন সত্ত্বেও এক সপ্তাহের মধ্যে টানা দ্বিতীয়বারের মতো বাজুসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বুধবার (২ ডিসেম্বর) থেকে বাংলাদেশের বাজারে স্বর্ণের দাম ভরিপ্রতি ১ হাজার ১৬৬ টাকা কমানো হলো।

নতুন দাম অনুযায়ী, ২ ডিসেম্বর থেকে ভালো মানের, অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের প্রতিভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ১ হাজার ১৬৬ টাকা ক‌মি‌য়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৭২ হাজার ৬৬৭ টাকা। ২১ ক্যারেটের স্বর্ণ ৬৯ হাজার ৫১৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ ৬০ হাজার ৭৬৯ টাকায় ও সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরি স্বর্ণ ৫০ হাজার ৪৪৭ টাকা নির্ধারণ করা হ‌য়ে‌ছে।

স্ব‌র্ণের দাম কম‌লেও রুপার পূর্বনির্ধা‌রিত দাম বহাল রয়েছে। ক্যাটাগরি অনুযায়ী ২২ ক্যারেটের প্রতিভরি রুপার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫১৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের রুপার দাম ১৪৩৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ১২২৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রূপার দাম ৯৩৩ টাকা নির্ধারণ করা হ‌য়েছে।

নিউজ ট্যাগ: স্বর্ণের দাম

আরও খবর
দেশে এলো এক হাজার টন আলু

বুধবার ২৭ মার্চ ২০২৪




হলমার্কের তানভীর-জেসমিনসহ ৯ জনের যাবজ্জীবন

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আদালত প্রতিবেদক

Image

হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. তানভীর মাহমুদ ও তার স্ত্রী গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলামসহ ৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারক মো. আবুল কাশেম এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডের পাশাপাশি তানভীর মাহমুদ ও জেসমিন ইসলামকে ৫ কোটি টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রতারণার আরেক ধারায় তাদের সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি ২৫ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন প্রতিষ্ঠানটির সহকারী উপমহাব্যবস্থাপক সাইফুল হাসান, নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল মতিন, জেনারেল ম্যানেজার তুষার আহম্মেদ, ম্যাক্স স্পিনিং মিলসের মালিক মীর জাকারিয়া, প্যারাগণ গ্রুপের এমডি সাইফুল ইসলাম রাজা, নকশী নিটের এমডি আব্দুল মালেক এবং টি অ্যান্ড ব্রাদার্সের পরিচালক তসলিম হাসান। যাবজ্জীবন দণ্ডের পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে ১০ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। প্রতারণার আরেক ধারায় তাদের সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে।

অপরদিকে সোনালী ব্যাংকের শীর্ষ সাত কর্মকর্তা প্রধান কার্যালয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন কবির, সাবেক জিএম ননী গোপাল নাথ, সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সাবেক জিএম মীর মহিদুর রহমান, ডিএমডি মাইনুল হক, উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. সফিজউদ্দিন আহমেদ, এজিএম কামরুল হাসান খান ও সোনালী ব্যাংক ধানমণ্ডি শাখার জ্যেষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুন্নেছা মেরীকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর প্রতারণার আরেক ধারায় তাদের সাত বছরের কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া সাভারের হেমায়েতপুরের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জামাল উদ্দিন সরকারকে এক ধারায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আরেক ধারায় দুই বছরের কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে।

গত ২৮ জানুয়ারি মামলার যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আদালত রায়ের জন্য ২৮ ফেব্রুয়ারি ঠিক করেছিলেন। তবে ওইদিন রায় থেকে মামলাটি উত্তোলন করে আরও দুই জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দুদকের পক্ষ থেকে আবেদন করা হলে আদালত তা মঞ্জুর করেন। পরে গত ১২ মার্চ আদালত দুদক ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন।

মামলার সূত্রে জানা যায়, ম্যাক্স স্পিনিং মিলস নামে ভুয়া কোম্পানির হিসাবে সুতা রপ্তানির নামে ৫২৫ কোটি ৬২ লাখ ৯২ হাজার ৮০০ টাকা মূল্যের সুতা রপ্তানি করা হয় বলে নথিপত্রে দেখানো হয়। ওই হিসাবে পুরো অর্থ জমা করা হলে তা থেকে ১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা হলমার্কের আরেক ভুয়া প্রতিষ্ঠান অ্যাপারেল এন্টারপ্রাইজের হিসাবে স্থানান্তর করা হয়, যা পরে তানভীর ও তার স্ত্রী তুলে নেন।

২০১২ সালের ৪ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎ, পরস্পরের যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অর্থের অপব্যবহার এবং পাচারের অভিযোগে রাজধানীর রমনা থানায় মামলা করে দুদক। সংস্থাটির সহকারী পরিচালক নাজমুচ্ছায়াদাৎ মামলাটি দায়ের করেন। পরবর্তীতে তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. মশিউর রহমান মামলার তদন্তকাজ শেষ করেন বলে জানা গেছে।

২০১৬ সালের ২৭ মার্চ তৎকালীন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। পরে মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এ বদলির আদেশ দেন।


আরও খবর



শাহবাগ থানার ভেতরে পরিত্যক্ত গাড়িতে আগুন

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৫ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৫ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

রাজধানীর শাহবাগ থানার ডাম্পিং স্টেশনে পরিত্যক্ত গাড়িতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।

আজ মঙ্গলবার (৫ মার্চ) দুপুর পৌনে ৩টার দিকে আগুন লাগে।

ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার রাফি আল ফারুক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ডাম্পিং স্টেশনের পেছন সাইডে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে তিনটি ইউনিট নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। তবে আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি।


আরও খবর



রমজান ঘিরে মসজিদুল হারামে বিশেষ প্রস্তুতি

প্রকাশিত:রবিবার ০৩ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৩ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ধর্ম ও জীবন

Image

সপ্তাহ খানেক পরেই শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান। পবিত্র মাসে সৌদি আরবের মক্কায় অবস্থিত মসজিদুল হারামে পুরো বিশ্ব থেকে মুসলমানদের আগমন বেড়ে যায়। অনেকেই মহিমান্বিত এই মাসে ওমরাহ পালন করতে ভিড় করে মক্কায়। এ সময়ে পবিত্র গ্র্যান্ড মসজিদে মুসল্লি ও ওমরাহ যাত্রীর ঢল নামে।

এ সময় মুসল্লিদের ভিড় নিয়ন্ত্রণ, ভেতরে ও আশপাশের স্থান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, জরুরি বর্জ্য অপসারণসহ নানা সেবা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে মক্কা নগর কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় জনবল ও সরঞ্জাম গঠন করা হয়েছে। 

সৌদি টিভি আল-ইখবারিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন মক্কা মেয়রের মুখপাত্র উসামা জাইতুনি। জাইতুনি জানান, মক্কায় ১৮ হাজার প্রধান ও ছোট সড়ক, ৫৮টি টানেল ও ৭০টি সেতু রয়েছে।

এসব রাস্তার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে বড় নেটওয়ার্ক রয়েছে, যা সব সময় পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিষ্কার রাখতে হয়। পাশাপাশি মক্কার দোকান ও রেস্তোরাঁর সব কিছুর বৈধতা নিশ্চিত করতে হয়। পবিত্র রমজান মাসে মুসল্লিদের সংখ্যা বাড়ায় এসব স্থানের গুরুত্ব আরো বৃদ্ধি পায়। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১১ মার্চ পবিত্র রমজান শুরু হবে।

এ মাসে বিশ্বের অসংখ্য মুসলিম ওমরাহ পালন করে। গত বছরের জুলাইয়ে হজের পর নতুন ওমরাহ মৌসুম শুরু হয়। গত বছর এক কোটি ৩০ লাখ ৫৫ হাজারের বেশি মুসলিম ওমরাহ পালন করে। আগামী হজ মৌসুম শুরুর আগেই দুই কোটির বেশি মুসল্লি ওমরাহ পালন করবে বলে আশা করছে সৌদি আরব।


আরও খবর
ঐতিহাসিক বদর দিবস আজ

বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪




টেকনাফ সীমান্তে থেমে থেমে গোলাগুলি, আতঙ্ক

প্রকাশিত:রবিবার ১০ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১০ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
কক্সবাজার প্রতিনিধি

Image

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইনে টানা কয়েকদিন ধরে থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। গতকাল শুক্রবার মধ্যরাত থেকে  শনিবার দুপুর পর্যন্ত গোলাগুলির আওয়াজ অনেকটা বেশি শুনা যায়। ফলে এ পাড়ের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের লম্বাবিল ও উনচিপ্রাং এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। নাফ নদে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, টানা কয়েকদিন ধরে থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। কিন্তু আজ মধ্যরাতের পর থেকে শব্দ অনেকটা বেড়ে যায়। মিয়ানমারের রাখাইনে চলমান সহিংস ঘটনায় নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় মিয়ানমার সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির সংঘর্ষ চলছে। এতে টেকনাফের হোয়াইক্যং উত্তরপাড়া, লম্বাবিল, উনচিপ্রাং, কাঞ্জরপাড়া, হ্নীলা মৌলভিপাড়া, ওয়াব্রাং, ফুলের ডেইল, চৌধুরীপাড়া, জালিয়াপাড়া এলাকায় সীমান্তের ওপারে থেমে থেমে গুলি ও মর্টার শেলের শব্দ শোনা যায়। হোয়াইক্যং ও হ্নীলা সীমান্তের ওপারের মিয়ানমারের কুমিরহালি, নাইচদং, কোয়াংচিগং, শিলখালী, নাফপুরা গ্রামগুলোতে যুদ্ধ চলছে।

উনছিপ্রাং এলাকার বাসিন্দা দিলদার আহমেদ বলেন, শুক্রবার মধ্যরাত থেকে উনছিপ্রাং সীমান্তে ব্যাপক গোলাগুলি ও মর্টার শেলের শব্দ হয়। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে হলেও মনে হচ্ছে- এগুলো আমাদের ঘরে পড়ছে। গুলি-মর্টার শেলের আওয়াজে ঘুম ভাঙে আমাদের।

লম্বাবিল এলাকার বাসিন্দা হামিদুর রহমান বলেন, শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে থেমে থেমে গোলাগুলি ও মর্টার শেল বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে। ভোর থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত টানা মর্টার শেল বিস্ফোরণ হয়। এতে আমাদের সীমান্তে বাসিন্দাদের ঘুম ভাঙে। আমরা অনেক আতঙ্কে আছি।

হোয়াইক্ষং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ আনোয়ারী বলেন, টানা কয়েকদিন ধরে ভারী অস্ত্রের শব্দ শোনা যাচ্ছে। সীমান্তের কাছাকাছি বাসিন্দাদের সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। বেশিরভাগ জেলেরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এদিকে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফ নদে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা টহল বৃদ্ধি করেছে।


আরও খবর



দুই শিক্ষক নেতার কর্মকাণ্ডে বারবার অস্থিতিশীল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশিত:শনিবার ০৯ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৯ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

Image

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শিক্ষক সমিতির পদে থাকা অবস্থাতেই বারবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ অস্থিতিশীল করার অভিযোগ অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের ও মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে। পূর্বের ধারাবাহিকতায় এবারও শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে আসীন হয়েই উপাচার্যের সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন তারা।

সম্প্রতি ১৯ ফেব্রুয়ারি কুবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে জয়ের পরই ঐদিন বিকালে উপাচার্যকে ঘেরাও করে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পরেন তারা। এছাড়া উপাচার্যকে নব্য আলী জিন্নাহ বলেন সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান। ৬ মার্চ উপাচার্যকে সবার সামনে পদত্যাগ করতে বলেন ও ডাস্টবিন বলেও সম্বোধন করেন।

এর আগেও সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মো. আলী আশরাফের সময়ে ২০১৭ সালের ১০ মার্চ অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৫তম সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও মহামান্য রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি হিসেবে সিন্ডিকেট সভায় যোগ দিতে আসেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান। এ সময় সিন্ডিকেট সভাস্থল ভিসি বাংলোর মূলফটকে গাড়িসহ প্রবেশে চেয়ারম্যানকে বাধা দেওয়া এবং সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণে জড়িত ছিলেন তিনি। এতে তৎকালীন শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. আবু তাহের, সাধারণ সম্পাদক ও মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসানসহ তৎকালীন শিক্ষক সমিতির আরো সাত সদস্যকে ইউজিসির চিঠির প্রেক্ষিতে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।

একই বছরের শেষে উপাচার্যের বিরুদ্ধে অনিয়ম এনে ইউজিসি বরাবর চিঠি দেয় তৎকালীন শিক্ষক সমিতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম, দুর্নীতির বিচারসহ ১৪ দফা দাবিতে ১৫ অক্টোবর উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দেয় শিক্ষক সমিতি।

নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে উপাচার্য ওই দাবি পূরণ করেননি অভিযোগ এনে পরদিনই (১৬ অক্টোবর) উপাচার্যের দপ্তরে তালা দেন তারা। প্রায় তিন সপ্তাহ উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে না আসায় অস্থিতিশীলতা শুরু হয় একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজে। এছাড়া একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি ও একটি সিমেন্ট কোম্পানিতে কাজ করার ঘটনাও রয়েছে তার কর্মজীবনে। বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সিমেন্ট কোম্পানি থেকে আয়ের এক-চতুর্থাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাগারে জমা দেয়ার কথা বললেও এখন পর্যন্ত তিনি জমা দেননি।

সর্বশেষ ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রী ফেলোশীপ নিয়ে অস্ট্রেলিয়া গিয়ে এক বছরে নির্ধারিত সংখ্যক কোর্স শেষ করতে না পারায় বাতিল করা হয় মেহেদী হাসানের ফেলোশিপ। সম্প্রতি বিষয়টি গণমাধ্যমে আসলে জানা যায়, তিনি দেড় বছরের মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য প্রথমে দুই বছরের ছুটি ভোগ করেন। পরবর্তীতে বিনা বেতনে এক বছরের ছুটি ভোগ করেন। সর্বশেষ ১০ মাস ২৬ দিনের অসাধারণ ছুটি কাটান তিনি। পরবর্তীতে তিনি আরও ছুটি চাইলে কুবির সিন্ডিকেট সভায় তা নাকচ হয়। এরপর থেকেই ছুটি ভাগিয়ে নিতে উঠেপড়ে লাগেন তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক জানান, শিক্ষক সমিতিকে বারবার উপাচার্য পতনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয় সাধারণ শিক্ষকদের সেন্টিমেন্ট নিয়ে। এবারও ব্যতিক্রম নয়। নানা কাজে বিতর্কিতরা এবার সবাই এক ছাদের নিচে এসেছে। মেহেদী হাসানকে যদি ছুটি দিয়ে দেওয়া হয় তিনি আর শিক্ষক সমিতি নিয়র ভাববেন না। তখন আর আন্দোলন, সংগ্রাম হবে না। সবাই সবার ব্যক্তিস্বার্থ উদ্বারের জন্য এক হয়েছে।

এ বিষয়ে বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন জানান, আমরা মাস্টার্সের জন্য দুই বছর শিক্ষা ছুটি দিয়ে থাকি। তারপরও তার সমস্যার কথা বিবেচনা করে আরও প্রায় দুই বছর ছুটি দেওয়া হয়। কিন্তু এখন উনি আরও যে ছুটি চাচ্ছেন তা নিয়মানুযায়ী দেয়া যায় না বলেই আমি সিন্ডিকেটে পেশ করি। সিন্ডিকেট তা বাতিল করে দিলে আমার এখানে কিছু করার থাকে না। এজন্য সে এখন আমার নামে আজেবাজে কথা বলে বেড়ায়।

এ বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি প্রায় এক বছর পর শিক্ষক সমিতি গঠনের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত এক সাধারণ সভায় মেহেদী হাসান উপাচার্যকে নব্য জিন্নাহ সম্বোধনে বক্তব্য দেন।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের এক শিক্ষক জানান, উপাচার্য থেকে অযাচিত ছুটি বাগিয়ে নিতে না পারায় এখন কিছু শিক্ষকদের সাথে একত্রিত হয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করছেন তিনি।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু তাহেরের নামেও আছে সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগ ও বিতর্ক।

২০১১ সালে ৪৯ লাখ ৬৯ হাজার টাকা ব্যয়ে ৮ দশমিক ৪ কিলোওয়াটের একটি সোলার প্যানেল স্থাপন প্রকল্পের পরিচালক ছিলেন তৎকালীন রেজিস্ট্রার ড. তাহের। ঐ বছরই সোলার প্যানেলটি অকেজো হয়ে পড়লেও ড. আবু তাহের তাদের দিয়ে তা মেরামত না করিয়ে বাকি অর্থ দিয়ে দেয়। তখনই বাংলাদেশ অল্টারনেটিভ এনার্জি সিস্টেম লিমিটেড নামে নিম্নমানের একটি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিয়ে এ প্রকল্পের সিংহভাগ টাকা আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সরেজমিন অভিযানেও প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে বলে ২০২৩ সালে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছিলেন দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক।

এছাড়াও ২০২২ সালের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের কাজে ১১ মার্চ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হেডকোয়ার্টারে সেনাবাহিনীর পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন প্রকল্প পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ আলী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে স্বাক্ষর করেছিলেন রেজিস্ট্রার ড. মো. আবু তাহের। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করার কথা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামানের। কিন্তু দুর্নীতি করার সুবিধার্থে কোষাধ্যক্ষকে এই প্রকল্পের বাইরে রাখার অংশ হিসেবে রেজিস্ট্রার নিজেই আইনবহির্ভূতভাবে এ স্বাক্ষর করেন বলে তখন অভিযোগ করছিলেন সংশ্লিষ্টরা।

বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তা জানান, প্রায় ১ হাজার ৭ শত কোটি টাকার এই প্রকল্পকে ঘিরে উপাচার্য ড. এমরান কবির চৌধুরী ও রেজিস্ট্রার ড. মো. আবু তাহের দুর্নীতির সুবিধার্থে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কাজে নিজের গ্রুপের ঘনিষ্ঠ লোকজনকে যুক্ত করেছেন। এর অংশ হিসেবেই সেনাবাহিনীর সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তিতে বেআইনীভাবে স্বাক্ষর করেছিলেন তৎকালীন রেজিস্ট্রার। এছাড়া রেজিস্ট্রার থাকাকালীন অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ দেয়ার ঘটনা সামনে আসে।

এছাড়া পছন্দের কর্মকর্তা-কর্মচারী, নিজ কোরামের শিক্ষকদের পদোন্নতি দ্রুত দিলেও অপছন্দের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতিতে গড়িমসি করতেন। এছাড়াও ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় ড. আবু তাহের ইউনিট কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন। সে বছর ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয় বলে অভিযোগ উঠেছিল।

এ বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, সে সময় ঐ উপাচার্য যেসব ভবনগুলো প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনায় শুরু করেছিলেন তা তো ৬-৭ বছরেও হস্তান্তর হচ্ছে না। তখন সেগুলো নিয়েই তো কথা বলেছিলাম। এদিকে ঐদিন (৬ মার্চ) উপাচার্য সবার সামনে শিক্ষকদের বলেন তারা রিসার্চ করতে পারেন না। এটা তো শিক্ষকদের জন্য চূড়ান্ত অপমান। এসব করলে তো দেশে ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ক্ষুণ্ন করছেন। আর ২০১৭ সালে ও এবারের কমিটিতে হতে পারে আমি ও তাহের স্যার কমিটিতে আছি, সেটা তো গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হয়েছি। পূর্বের ঘটনা আর এবারের ঘটনা আলাদা বিষয়। আগের বারও আমি আর তাহের স্যার ছিলাম এটা হতেই পারে।

অভিযোগের বিষয়ে সভাপতি ড. মো. আবু তাহের বলেন, আগের ঘটনার সাথে এ ঘটনা মিলালে তো হবে না। উপাচার্য অনিয়ম, দুর্নীতি করলে আমরা সচেতন শিক্ষকরা এর প্রতিবাদ তো জানাবোই। আমরা সাধারণ শিক্ষকদের ম্যান্ডেট নিয়েই এসেছি। এক বছর কমিটি না থাকায় তাদের দাবি-দাওয়া যে তারা বলতে পারছেন না সেটা তারা এখন আমাদের মাধ্যমে জানাচ্ছেন। এখন উপাচার্য যদি এসব অনিয়ম দুর্নীতি বন্ধ করেন তাহলে আমরা তার সাথে থাকবো।


আরও খবর