চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা। ধান ও অন্য চাষাবাদের পাশাপাশি ভুট্টা চাষ করছেন বলে জানান তারা। তবে ধানের চেয়ে ভুট্টা খেতে লাভ বেশি বলেও জানান দক্ষিণ নিশ্চিন্তাপুর গ্রামের কৃষক ওমর ফারুক।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দক্ষিণ নিশ্চিন্তাপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ভুট্টা চাষ হয়েছে। মাঠের পর মাঠ ভুট্টাখেত। সবুজ রঙের গাছগুলো দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়। খেতগুলোতে পানি ও কীটনাশক দেওয়া এবং পরিচর্যায় কৃষকেরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। খেতগুলোতে পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও কাজ করতে দেখা যায়।
দক্ষিণ নিশ্চিন্তাপুর গ্রামের ওমর ফারুক গত মৌসুমে ১ বিঘা জমিতে ২৮ হাজার টাকা খরচে ভুট্টা চাষ করে ৫৫ হাজার টাকা বিক্রি করেন। গত বছর প্রতি মন ভুট্টা ৬৫০-৭০০ টাকায় বিক্রি করেছেন। বোরো ধান চাষের তুলনায় ভুট্টা চাষ বেশি লাভজনক হওয়ায় এ বছর আবারও তিনি ভুট্টা চাষ করেছেন। বোরো মৌসুমে ধান আবাদে খরচ এবং ঝুঁকি বেশি থাকায় এবার তিনি ভুট্টা চাষ করেছেন। তবে এ বছর তার দেখাদেখি অনেকেই ওই এলাকায় ভুট্টা চাষ করার উদ্যোগ নিচ্ছেন।
এছাড়া আরও কয়েকজন কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, 'বোরো ধান আবাদে অনেক খরচ, অনেক ঝুঁকি। কিন্তু ভুট্টা আবাদে খরচ কম, লাভ বেশি। এলাকার যেসব জমিতে পূর্বে অন্যান্য ফসল চাষ করা হতো, সেই সব জমিতে এবার ভুট্টা চাষ হচ্ছে। ভুট্টার উৎপাদন খরচ তুলনামূলক অন্যান্য ফসলের তুলনায় অনেক কম । এ ছাড়া সব সময় বাজারে ভুট্টার দামও বেশি থাকে। এ জন্য কৃষকেরা ভুট্টা চাষে ঝুঁকে পড়েছেন।’
রাঙ্গুনিয়া উপজেলা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মিটন দাস বলেন, 'ভুট্টা রবি মৌসুমের ফসল। সাধারণত অক্টোবর-নভেম্ভর মাসে ভুট্টা বীজ রোপন করা হয়। পতিত জমিতে অল্প সেচে ভুট্টা চাষ হয়। বাজারে ভুট্টার ব্যাপক চাহিদা ও বেশি মুল্য থাকায় এ অঞ্চলেও ভুট্টার চাষ বাড়ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষকদের ভুট্টা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি প্রযুক্তির পাশাপাশি বীজ, সারসহ যন্ত্রের সাহাজ্যে রোপণ, কর্তন ও মাড়াইয়ের ব্যবস্থা করেছে।'
রাঙ্গুনিয়া উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, 'বোরো ধানের চেয়ে বেশি লাভজনক হওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকেরা ভুট্টা চাষে আগ্রহী হয়েছেন। এক বিঘা জমিতে ভুট্টার চাষ করতে প্রায় দুই হাজার টাকার বীজ লাগে। এ বছর ভুট্টা বিক্রি হচ্ছে গড় ৭০০ টাকা মণ দরে। সেই হিসাবে এক বিঘার ভুট্টায় পাওয়া যাচ্ছে ১৮ থেকে ২১ হাজার টাকার। অর্থাৎ বিঘায় ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা লাভ থাকছে। ভুট্টা মার্চ-এপ্রিল মাসের মধ্যেই ঘরে চলে আসে। এতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ভুট্টা চাষে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে।'