২০০৮ সালে আওয়ামী
লীগের নির্বাচনি ইশতেহারে ছিল— ২০২১ সালের লক্ষ্য ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নের মাধ্যমে পরের রূপকল্প ঠিক হয়েছে— ২০৪১ সালে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’। সেই স্মার্ট বাংলাদেশের যাত্রাপথ,
পথরেখা, ভিত্তি বা স্তম্ভ ইত্যাদি নিয়ে এবার দেশে আয়োজন করা হচ্ছে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ মেলা’।
রাজধানীর শেরেবাংলা
নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আগামী ২৬ থেকে ২৮ অক্টোবর এই মেলা অনুষ্ঠিত
হবে। মেলার আয়োজক ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। বাস্তবায়নে থাকবে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক
সংস্থা বিটিআরসি। আর সহযোগিতায় থাকবে দেশের ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন
আইএসবিএবি। প্রধান অতিথি হিসেবে মেলার উদ্বোধন করতে পারেন স্পিকার শিরিন শারমীন চৌধুরী।
প্রসঙ্গত, চলতি
বছরের জানুয়ারিতে এবং ২০২০ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া বরাবরই
অনুষ্ঠিত হয়েছে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড। ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলাও অনুষ্ঠিত হয়েছে।
স্মার্ট বাংলাদেশ
মেলার বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ পর্ব
শেষ হয়েছে। আমাদের পরবর্তী ধাপে যেতে হবে। পরবর্তী ধাপটাই স্মার্ট বাংলাদেশ।’
তিনি আরও বলেন,
‘স্মার্ট
বাংলাদেশের চারটি স্তম্ভের কথা বলা হচ্ছে। আমি মনে করি, সবার আগে দরকার ডিজিটাল কানেক্টিভিটি।
এটার ওপর দাঁড়াতে পারলে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ পাবো। কারণ, এর ওপর দাঁড়ালে অন্যগুলো
এমনিতেই হয়ে যাবে। আমাদের কাজে-কর্মে, জীবন-যাপনে, সর্বস্তরে এমনকি প্রতিটি মানুষে,
প্রতি ইঞ্চি জায়গায় কানেক্টিভিটি থাকতে হবে। তবেই আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ পাবো।’
স্মার্ট বাংলাদেশ
মেলার আয়োজন করে বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থান, বাস্তব চিত্র, কোথায় যেতে চায়, কী কী
প্রয়োজন, স্মার্ট বাংলাদেশ হলে তখনকার বাংলাদেশের চিত্র তুলে ধরা হবে বলে জানান মন্ত্রী।
আরও পড়ুন>> বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত বৃদ্ধি পাবে : এডিবি
জানা গেছে,
২০২২ সালের ৭ এপ্রিল ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্সের বৈঠকে (তৃতীয়) প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট
বাংলাদেশের কথা বলেন। বলা হয়, ‘রূপকল্প ২০৪১: স্মার্ট বাংলাদেশ’। ডিজিটাল বাংলাদেশের পরের ধাপে যাওয়ার জন্য সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে
জানা গেছে, ২০২২ সালের ২১ আগস্ট স্মার্ট বাংলাদেশ টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। একই বছরের
১৮ অক্টোবর স্মার্ট বাংলাদেশ টাস্কফোর্সের নির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়। ২০২২ সালের
১২ ডিসেম্বর স্মার্ট বাংলাদেশের ঘোষণা দেওয়া হয় এবং একই মাসে স্মার্ট বাংলাদেশের মাস্টার
প্ল্যানের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।
মাস্টার প্ল্যানের
পরিকল্পনায় বলা হয়েছে স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি স্তম্ভের কথা। এগুলো হলো— স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি,
স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট সোসাইটি। মেলায় প্রতিটি স্তম্ভের বিস্তারিত বিভিন্ন উপায়ে
তুলে ধরা হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিষয়টি কী, তা এই মেলার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে
স্পষ্ট হবে বলে মেলা আয়োজকদের আশা।
জানা গেছে,
মেলার স্পনসর হিসেবে থাকবে এমটব, ওয়ালটন, হুয়াওয়ে ও জেডটিইসহ আরও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান।
স্মার্ট বাংলাদেশের
সচিবালয় খোলা হচ্ছে বিটিআরসিতে। এরই মধ্যে ১০টি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে— ভেন্যু ব্যবস্থাপনা, মেলা সংক্রান্ত
নকশা প্রণয়ন ও স্টল বরাদ্দ উপ-কমিটি, আমন্ত্রণপত্র প্রস্তুত ও বিতরণ এবং অভ্যর্থনা
উপ-কমিটি, সেমিনার আয়োজন ও ব্যবস্থাপনা উপ-কমিটি, মিডিয়া ও পাবলিসিটি, স্মরণিকা ও প্রকাশনা
উপ-কমিটি, কুইজ ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা আয়োজন উপ-কমিটি, সম্মাননা ও পুরস্কার প্রদান
উপ-কমিটি, অর্থ ব্যবস্থাপনা উপ-কমিটি, আপ্যায়ন ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ উপ-কমিটি, আসন
ব্যবস্থাপনা, নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা উপ-কমিটি ও লিয়াজোঁ উপ-কমিটি।
এ প্রসঙ্গে
জানতে চাইলে আইএসপিএবির সভাপতি এমদাদুল হক বলেন, ‘স্মার্ট কানেক্টিভিটি ছাড়া স্মার্ট
বাংলাদেশ হবে না। স্মার্ট বাংলাদেশ মেলায় এটাই তুলে ধরা হবে।’
এমদাদুল হক
সম্প্রতি জাপান সফর করে ফিরেছেন। তিনি সেখানে সব জায়গায় (পাবলিক প্লেসে) ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক
পেয়েছেন। এমনকি বুলেট ট্রেনেও। পুরো দেশটাই কানেক্টেড।
অভিজ্ঞতার কথা
বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা দেশে একটা মিনিটও নেটওয়ার্ক ছাড়া থাকতে চাই না। আমাদের দেশেও পাবলিক
প্লেসে নেটওয়ার্ক থাকতে হবে। কীভাবে রাখা যাবে বা করা যাবে, সেটা নিয়ে আমরা পরিকল্পনা
করছি, যা স্মার্ট বাংলাদেশ মেলায় দেখানো হবে।’