অস্ট্রেলিয়ায় নারীদের যৌন সহিংসতার শিকার হওয়াকে সমাজে মেনে নেওয়ার মতো ভয়াবহ বিষয় জারি রয়েছে। আমার সঙ্গে হওয়া ঘটনাটি গণমাধ্যমসহ সবার সামনে আনার একটাই কারণ, তা হলো- দুঃখজনক হলেও
অস্ট্রেলিয়ায় নারীদের ওপর যৌন নির্যাতন ও নিপীড়নের প্রতিবাদে আজ সোমবার দেশজুড়ে প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নিয়েছে লাখো মানুষ। অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টসহ বিভিন্ন স্থানে যৌন নির্যাতনের অভিযোগের ঘটনা সম্প্রতি সামনে আসার প্রেক্ষাপটে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলছে। অস্ট্রেলিয়ার ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলা হচ্ছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
সাম্প্রতিক প্রতিবাদ মিছিল প্রথম আয়োজন করা হয় এক সপ্তাহ আগে। এর আগে গত মাসের শেষদিকে অস্টেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনকে পাঠানো একটি চিঠিতে জানানো হয়, অস্ট্রেলিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল ক্রিশ্চিয়ান পোর্টার ১৯৮৮ সালে ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরীকে ধর্ষণ করেছিলেন। যদিও অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন পোর্টার। এ ছাড়া অপর আরেক ঘটনায় ব্রিটানি হিগিন্স নামের সাবেক একজন রাজনৈতিক উপদেষ্টা গত মাসে অভিযোগ করেন তিনি ২০১৯ সালে এক মন্ত্রীর কার্যালয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। ওই অভিযোগেও জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
আজকের বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন ব্রিটানি হিগিন্স। তিনি পার্লামেন্ট হাউসের বাইরে হাজারো প্রতিবাদকারীর উদ্দেশে বলেন : ‘অস্ট্রেলিয়ায় নারীদের যৌন সহিংসতার শিকার হওয়াকে সমাজে মেনে নেওয়ার মতো ভয়াবহ বিষয় জারি রয়েছে। আমার সঙ্গে হওয়া ঘটনাটি গণমাধ্যমসহ সবার সামনে আনার একটাই কারণ, তা হলো- দুঃখজনক হলেও নারীদের মনে করিয়ে দেওয়া যে, এমন কিছু পার্লামেন্ট হাউসেও ঘটতে পারে, এবং ঘটতে পারে আসলে যেকোনো স্থানেই’।
যেভাবে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হচ্ছে
অস্ট্রেলিয়ার সাম্প্রতিক প্রতিবাদ পদযাত্রা বা মিছিল ‘মার্চ ৪ (ফোর) জাস্টিস’ নামে পরিচিত। স্থানীয় সময় আজ সোমবার দুপুর থেকে অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরা, সিডনি, মেলবোর্নসহ ছোট-বড় ৪০টি শহর ও নগরে এই প্রতিবাদ মিছিল শুরু হয়। আয়োজকেরা বলছেন, এই প্রতিবাদ মিছিল অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসের সর্ববৃহৎ নারী-বিদ্রোহ হতে যাচ্ছে।
অনেক বিক্ষোভকারী হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে ও কালো জামা পরে পদযাত্রায় অংশ নিয়েছেন। মেলবোর্নে বিক্ষোভকারীরা একটি দীর্ঘ ব্যানার হাতে নিয়েছেন যেখানে গত কয়েক দশকে নির্যাতনে নিহত নারীদের নামের তালিকা লেখা হয়েছে। ক্যানবেরার আয়োজকরা একটি পিটিশন দায়েরের পরিকল্পনা করেছেন। পার্লামেন্টে যৌনতাবাদী আচরণের জবাবদিহি চেয়ে ৯০ হাজারেরও বেশি নারী এ পিটিশনে স্বাক্ষর করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বিক্ষোভকারীরা ক্রিশ্চিয়ান পর্টারের পদত্যাগ দাবি করেছেন। তার বিরুদ্ধে তদন্তের মামলা পুলিশ নিষ্পত্তি করেছে। কিন্তু অন্যরা আরেকটি পৃথক তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।