মাত্র কয়েক ঘণ্টার হামলায় রীতিমতো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ইসরায়েল। মাত্র ২০ মিনিটে দেশটিতে পাঁচ হাজার রকেট ছুড়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। নিরাপত্তার চাদরে মোড়ানো সীমান্তের কাঁটাতার ভেঙে হামলা চালিয়ে বন্দি করেছে ৩৫ ইসরায়েলি সেনাকে।
হামাসের এই হামলার পরই নিজের অফিসিয়াল এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট থেকে একটি টুইট করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। টুইটে হামাসের হামলার নিন্দা এবং এমন কঠিন মুহূর্তে ইসরায়েলের পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেছেন, ‘ইসরায়েলে সন্ত্রাসী হামলার খবরে বিষ্মিত হয়েছি। নিরীহ নিহত মানুষ ও তাদের পরিবারের প্রতি আমরা সমবেদনা এবং সহমর্মিতা প্রকাশ করছি। এমন কঠিন মুহূর্তে আমরা ইসরায়েলের পক্ষে আছি।’
এদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে কথা বলেছেন। এ সময় বাইডেন নেতানিয়াহুকে সাহস জুগিয়েছেন বলে জানা গেছে। ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের কথা মনে করিয়ে দিয়ে জো বাইডেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে পুরোপুরি সমর্থন করে।’
চলমান সংঘাতে ইসরায়েলি নাগরিকদের হতাহতের বিষয়ে বাইডেনকে অবহিত করে নেতানিয়াহু বলেন, এ সমস্যা সমাধানে অভিযান জোরদার এবং দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে বাইডেন সায় দিয়েছেন বলে ইসরায়েলের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে।
আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সহায়তা ও সমর্থন অব্যাহত রাখায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে ধন্যবাদ জানান। নেতানিয়াহু তখন আরও বলেন, ইসরায়েলের জয়ের জন্য প্রয়োজন হলে দীর্ঘমেয়াদি কঠোর অভিযান হবে। এতেও যেন যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন অব্যাহত রাখে সে আহ্বান জানান নেতানিয়াহু।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, নেতানিয়াহু ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ এবং ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের সঙ্গেও কথা বলেছেন। দুই নেতাই ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন। তারা ইসরায়েলের পাশে থাকারও প্রতিশ্রুতি দেন।
সংবাদমাধ্যম আল আরাবিয়া জানিয়েছে, শনিবার ভোর রাতে হামলা শুরু হয়। এর কিছুক্ষণ পর হামাসের যোদ্ধারা দক্ষিণ সীমান্ত দিয়ে ইসরায়েলে অনুপ্রবেশ করতে শুরু করে। এমন ঘটনা এর আগে কখনো দেখা যায়নি। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীও জানিয়েছে, সীমান্ত দিয়ে বেশ কয়েকজন ‘সন্ত্রাসী’ তাদের দেশে ঢুকে পড়েছে।
ইসরায়েলের হারেৎজ সংবাদপত্রের তেল আবিব প্রতিনিধি উদি মুসকাফ বলেন, অধিকাংশ ইসরায়েলি কেবল হামাসের রকেটকে ভয় করছেন না, ইসরায়েলি বসতিতে হামাস যোদ্ধাদের ঢুকে পড়াও তাদের শঙ্কিত করে তুলেছে।
ফিলিস্তিনপন্থি স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাসের এ হামলাকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযান বলা হচ্ছে। গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলে প্রায় পাঁচ হাজার রকেট হামলা চালানো হয়েছে। এ ঘটনার জবাবে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা করেছে ইসরায়েল।