কুমিল্লার নিমসার
পাইকারি কাঁচা বাজার থেকে ১৩০ টাকায় কেজি কাঁচা মরিচ কিনে নগরীর বিভিন্ন বাজারসহ আশপাশের
সব বাজারে ৩শ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। মাত্র ১০ কিলোমিটার ব্যবধানে একটি পাইকারি
বাজার থেকে পণ্য ক্রয় করে দ্বিগুণের চেয়েও বেশি দামে বিক্রি করা নিয়ে জনমনে ব্যাপক
সমালোচনা চলছে।
এদিকে জ্বালানি
তেলের মূল্য বৃদ্ধির অজুহাতে বাজারে সকল পণ্যের দাম বৃদ্ধি করা হলেও এর সুফল পাচ্ছে
না উৎপাদনকারী কৃষকরা। কিন্তু মাঝখান থেকে মধ্যস্বত্বভোগীরা এসব অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।
প্রশ্ন এসেছে বেপরোয়ায় সব মধ্যস্বত্বভোগীদের কে রুখবে কে?
অনুসন্ধানে জানা
যায়, কুমিল্লার নিমসারে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী পাইকারি কাঁচাবাজার। এটি ঢাকা-চট্টগ্রাম
মহাসড়কের পাশেই বাজারে সিন্ডিকেট গুলো এতোই বেপরোয়া যে তারা প্রশাসনকে তেমন তোয়াক্কা
করে না। এদের ইচ্ছামতো বাজার নিয়ন্ত্রণ করেন। এতে এসব সিন্ডিকেটের কাছে কৃষকরা যেমন
জিম্মি তেমনি পাইকারি ক্রেতা বিক্রেতারাও জিম্মি। তাছাড়া এ বাজার থেকে পাইকারি কাঁচা
পণ্য কিনে সব কটি বাজারে বিক্রয় করছেন খুচরা বিক্রেতারা।
অভিযোগ রয়েছে
মধ্যস্বত্বভোগী এসব খুচরা বিক্রেতার মাঝখানেও রয়েছে আলাদা সিন্ডিকেট। এতে নিমসার থেকে
কেনা পণ্য নগরীর বাজার গুলোতে এসে দ্বিগুণেরও বেশি মূল্য বেড়ে যায়।
সম্প্রতি বাজারে
কাঁচামরিচের হঠাৎ মূল্য বেড়ে যাওয়া নিয়ে হৈচৈ শুরু হয়েছে। মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে
প্রতি কেজি কাঁচা মরিচে ২০০ টাকা বেড়ে যাওয়া নিয়ে ভোক্তাদের মাঝে ব্যাপক অসন্তোষ
দেখা দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে কেন এত মূল্যবৃদ্ধি?
বিষয়টি নিয়ে
অনুসন্ধান করে দেখা যায়, এতে রয়েছে বিস্তর ফারাক। বৃহস্পতিবার সকালে নিমসার পাইকারি
বাজারে গিয়ে দেখা যায় ১৩০ টাকা ধরে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ পাইকারি বাজারে বিক্রি
হচ্ছে। আর বিভিন্ন বাজার থেকে আসা খুচরা বিক্রেতারা এখান থেকে কাঁচা মরিচসহ সব ধরনের
তরিতরকারি ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন।
তারপর একটু পরেই
নগরীর বিভিন্ন বাজারে ঘুরে দেখা যায় কাঁচা মরিচের কেজি ৩০০ টাকা। রাজগঞ্জ, রানীর বাজার,
বাদশা মিয়ার বাজার, ময়নামতি বাজার, পদুয়ার বাজারসহ আশপাশের সব বাজারে ৩০০টাকা কেজি
দরে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে।
রাজগঞ্জ বাজারের
কাঁচা মরিচ-ধনেপাতা ব্যবসায়ী আলী মিয়া বলেন, পাইকারি বাজারে দাম বেড়েছে তাই আমরাও
বেশি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। নিমসার থেকে কত
টাকা কেজি কিনেছেন এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। একই বাজারের
আরও একাধিক খুচরা ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বললেও তারা ক্রয় মূল্য বলতে অনীহা প্রকাশ করেন।
তবে এ বাজারের
ক্রেতা আমজাদ হোসেন, মেহেদী হাসান, আকরাম হোসেন বলেন, এ বাজারের সব খুচরা বিক্রেতা
এক সিন্ডিকেট, তারা নিজেরাই দাম নির্ধারণ করে সবাই একদামে কাঁচা মাল বিক্রি করে। এতে
গ্রাহকরা বাধ্য হয়েই তাদের কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করছে। তারা বলেন, কখনো এ বাজারে প্রশাসনের
কোনো অভিযানের চিত্র চোখে পড়েনি।
এ বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুমিল্লার সহকারী পরিচালক আছাদুল ইসলাম বলেন, আমরা ভোক্তাদের কাছ থেকে অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি। কাঁচা মরিচসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের অতিরিক্ত মূল্য নিয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।